কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ফরাসউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে লুটপাট-ডাকাতি হচ্ছে: ফরাসউদ্দিন

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:১৬
আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:১৬

(প্রিয়.কম) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে ‘অর্থ লুটপাট ও ডাকাতি’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসদ্দিন। ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনায় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মোবাইল ব্যাংকিং সম্পের্কে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘বগুড়ায় আমার এক শিক্ষককে টাকা পাঠাতে গিয়ে দেখি সেখানে গুণে গুণে দুই শতাংশ কেটে রেখেছে। আবার আমার ওই শিক্ষক টাকা তুলতে গেলে তার কাছ থেকেও টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে মাত্র শূন্য দশমিক পাঁচ পয়সা খরচ হয়। তারা এরকম লুটপাট ও ডাকাতি করছে। যেহেতু কোনো নিয়ামক পরিমণ্ডল (রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক) নেই, তাই কাউকে ধরাও যাচ্ছে না।’

রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়া বাজার অর্থনীতি চলায় এতে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও আশানুরূপ হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাজার অর্থনীতিতে দুর্নীতবাজ-লুটেরারা এখন অনেক সক্রিয়। যদি রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়া টেকনলজিক্যাল অ্যাডভান্সমেন্টে চলে যান....এই যে মোবাইল ফান্ড ট্রান্সফার বলে মোবাইল ব্যাংকিং, আমি এর তীব্র নিন্দা করি, ধিক্কার জানাই।’

তিনি বলেন, ‘একটি দেশ যখন মুক্তবাজার অর্থনীতির দিকে চলে যায়, তখন বৈদেশিক বাণিজ্য সুবিধা, প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি সুবিধার পাশাপাশি অর্থনীতিতে চুরি-ডাকাতিও বেড়ে যায়। বাংলাদেশেও তাই হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে ঠিকই কিন্তু বৈষম্যকেও আমলে নিতে হবে। আর এজন্য রেগুলেটরি সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।’   

সাবেক এই গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩৩ বিলিয়ন ডলার পড়ে আছে। অথচ ব্যক্তি পর্যায়ে বিদেশি ঋণ গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের মুদ্রা অবমূল্যায়ন হতে বাধ্য। যখন অবমূল্যায়ন শুরু হবে, তখন স্বল্প সুদে ঋণ দিলেও কাজ হবে না। তার আগেই অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। 

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ফরাসউদ্দিন ই-কমার্সের কেনাকাটায় কর না থাকার সমলোচনা করে বলেন, ই-কমার্স সাইট থেকে বড় লোকেরা কেনাকাটা করেন কিন্তু সেখান থেকে সরকার কোনো ট্যাক্স পায় না।

২০০৪-২০১৪ সালে দেশ থেকে সাড়ে ছয় হাজার কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের ভেতর বিনিয়োগে কিছু সমস্যা আছে, এমনটা থাকতেই পারে। তাই বলে টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দেবেন?

দুদক জনগণের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি বলে মন্তব্য করে আলোচনা সভায় উপস্থিত দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমরা অনেক বড় দুর্নীতবাজের কাছে যেতে পারিনি। এটা আমাদের স্বীকার করতে হবে। তবে এই যে পারিনি, এটা স্বীকার করার সাহস আমাদের রয়েছে। আমরা শুরু করলে শেষ করব, মাঝপথ থেকে ফিরে আসব না।’

সভায় দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে দুদক কমিশনার নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও এএফএম আমিনুল ইসলাম এবং দুদক সচিব শামসুল আরেফিন বক্তব্য রাখেন।

প্রিয় সংবাদ/শান্ত