কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

১৪২ রানের পুঁজি নিয়েও তিন রানের দারুণ এক জয় পায় মাশরাফির দল রংপুর রাইডার্স। ছবি: প্রিয়.কম

মহাতারকাদের লড়াইয়ে মাশরাফির দলের রুদ্ধশ্বাস জয়

শান্ত মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৭, ২২:০৮
আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭, ২২:০৮

(প্রিয়.কম) একপাশে ক্রিস গেইল, বেন্ডন ম্যাককালাম, মাশরাফি বিন মুর্তজা, লাসিথ মালিঙ্গা। অন্য পাশে এভিন লুইস, সুনীল নারাইন, সাকিব আল হাসান, শহীদ আফ্রিদি, কাইরন পোলার্ডরা। মহাতারকাদের লড়াই-ই বলা যায়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে তারকা সমৃদ্ধ দুই দল ঢাকা ডায়নামাইটস ও রংপুর রাইডার্স মঙ্গলবার মিরপুরে মুখোমুখি হয়েছিল। আর এই লড়াই শেষে চওড়া হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রংপুর। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৩ রানে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স।

মহাতারকারা হতাশ করেননি। প্রথমে ব্যাট করে রংপুরের ওপেনার ক্রিস গেইল ২২ গজে ঝড় তুলেছিলেন। ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বল হাতে ভেল্কি দেখিয়েছেন। পরে ব্যাট হাতে আলো কেড়েছেন এভিন লুইস-জহুরুল ইসলাম অমিরা। মহাতারকাদের লড়াইটাও হল টানটান উত্তেজনার। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। জবাবে বারবার আশা জাগিয়েও ১৩৯ রানে থামে ঢাকা। 

ছোট লক্ষ্য। কিন্তু শুরুটা হল দুঃস্বপ্নের মতো। প্রথম ওভারেই ঢাকার ওপেনার সুনীল নারাইনকে ফিরিয়ে দিলেন মাশরাফি। এভিন লুইসের সাথে যোগ দেওয়া সাকিব আল হাসানও টিকতে পারলেন না। দলীয় ২৫ রানের মাথায় সাকিবের স্টাম্প ভেঙে দেন রংপুরের অফ স্পিনার সোহাগ গাজী। কিন্তু নিমেষেই যেন সব ভুলিয়ে দিলেন ঢাকার উইন্ডিজ ওপেনার এভিন লুইস ও জহুরুল ইসলাম অমি। 

দুজনই হাত খুলে খেলতে শুরু করেন। এদিন লুইসের চেয়ে মারমুখী ভূমিকায় দেখা গেছে জহুরুলকে। যদিও তাদের এই ঝড় বেশিক্ষণ চলেনি। দলীয় ৬৯ রানের মাথায় থামেন ২৮ রান করা এভিন লুইস। সঙ্গীর বিদায়ে খেই হারান জহুরুলও। ১৯ বলে চারটি চার ও এক ছয়ে ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন ঢাকার এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এক বল পর ভুল বোঝাবুঝির কারণে রানআউটের শিকার হয়ে বিদায় নেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও।

পাঁচ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় আগের সাত ম্যাচে চার জয় পাওয়া ঢাকা। এই চাপ কাটিয়ে ওঠার দায়িত্ব ওঠে মেহেদী মারুফ ও শহীদ আফ্রিদিরি কাঁধে। ব্যবধান বেশি না থাকায় ধীর-স্থিরভাবেই খেলতে থাকেন এই দুজন। কিন্তু আফ্রিদি বেশি পথ পাড়ি দিতে পারেননি। ১৫ বলে এক চার ও দুই ছক্কায় ২১ রান করে আউট হন তিনি। জয় থেকে ১৫ রান দূরে থাকতে আউট হন মারুফও। ২৪ বলে ১৫ রান করেন তিনি। 

শেষ দুই ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ১৩ রান। উইকেটে আগেই যোগ দেওয়া কাইরন পোলার্ড সঙ্গী হিসেবে পান নাদিফ চৌধুরীকে। ১৯তম ওভারটি করতে আসেন লাসিথ মালিঙ্গা। মাত্র তিন রান খরচা করে একটি উইকেটও তুলে নেন লঙ্কান এই পেসার। শেষ ওভারে ঢাকার দরকার ১০ রান। প্রথম বলে সুযোগ থাকার পরও রান নিলেন না পোলার্ড। পরের বলেও রান নয়। তৃতীয় বলে গিয়ে পোলার্ডের ছক্কা। পরের বলে আবার ডট। কিন্তু এর পরের বলে পোলার্ড বোল্ড। হিসাব তখন এক বলে চার রান। শেষ বলে আবু হায়দার রনির স্টাম্প ভেঙে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন পেরেরা।    

এরআগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মনের মতো হয়নি রংপুরের। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় শহীদ আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান বেন্ডন ম্যাককালাম। তাতে অবশ্য দিক হারায়নি রংপুর। মোহাম্মদ মিথুনকে একপাশে রেখে খুনে স্টাইলে ব্যাট চালাতে থাকেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। ৭ ওভারেই স্কোরকার্ডে ৭০ রান যোগ করে ফেলেন। কিন্তু এমন সময় ছন্দপতন।

ইনিংসের অষ্টম ওভার করতে আসা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত প্রথম বলেই থামিয়ে দেন ক্যারিবীয় ঝড়। ২৮ বলে পাঁচ চার ও চার ছক্কায় ৫১ রান করে বিদায় নেন টি-টোয়েন্টির মহারাজা গেইল। তার বিদায়ের পরই থমকে যায় রংপুরের ইনিংস। রীতিমতো ধুঁকতে শুরু করে রংপুরের ব্যাটসম্যানরা। শাহরিয়ার নাফিস আউট হলে এদিন আগেভাগেই উইকেটে নেমে পড়েন রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

তেড়েফুরেই শুরু করেছিলেন মাশরাফি। কিন্তু সেটা দীর্ঘ হয়নি। ১১ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ১৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন রংপুর অধিনায়ক। পরের ব্যাটসম্যানরা কেউই রংপুরকে ঠিক পথ দেখাতে পারেননি। দলের হয়ে সেভাবে ব্যাট চালাতে পারেননি কেউই। যে কারণে রবি বোপারার ১২ ও থিসারা পেরেরার করা ১৫ রানে ১৫০ পেরোয়নি রংপুরের ইনিংস। ঢাকার অধিনায়ক সাকিব একাই পাঁচ উইকেট তুলে নেন। যা তার টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।