এরিকসন বাংলাদেশ। ছবি: প্রিয়.কম
এরিকসন বাংলাদেশে ৫০৯ কর্মী ছাঁটাই
আপডেট: ২৩ মে ২০১৭, ২২:২৩
(প্রিয়.কম) বাংলাদেশে ব্যবসা কম এবং ব্যয় সংকোচনের কারণ দেখিয়ে গত এক বছরে প্রায় ৫০৯ জন কর্মী ছাঁটাই করেছে সুইডিশ টেলিযোগাযোগ যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এরিকসন। ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে প্রতিষ্ঠানটি কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে। ইতোমধ্যে থার্ডপার্টি কর্মীর ৩০০ জনের সবাই, ফিল্ড সার্ভিসেস অপারেশন (এফএসও) বিভাগে ২৫০ জনের মধ্যে ১৭৯ জন, ফুলটাইম ও লোকাল কন্ট্রাকচুয়াল টিম থেকে আরও ৪০ জন কর্মীকে বিদায় জানিয়েছে এরিকসন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি থার্ডপার্টি কর্মীদের বিদায় জানানো হয়। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় ৩০০ কর্মীর মধ্যে ২৫০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়। অবশিষ্ট ৫০ জনকে গত এপ্রিল মাসে বিদায় করে দেওয়া হয়। এ সব কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ প্রায় ১০ বছর ধরে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
গত এক বছরে ফিল্ড সার্ভিসেস অপারেশন (এফএসও) বিভাগের মোট ২৫০ জন কর্মীদের মধ্যে ১৭৯ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। গত ৩০ এপ্রিলেও ৩২ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এই বিভাগে এখন কাজ করছেন মাত্র ৭১ জন। চলতি মাসে ফুলটাইম কর্মীদের থেকে ৮ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এর বাইরেও বিভিন্ন সময় আরও কিছু কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এরিকসনের সকল কর্মীদের সাথে বৈঠকে বসেন এরিকসন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজ পাংরেকার এবং হেড অব এইচআর মীর আওয়াল খাদেমুর রহমান। বৈঠকে বলা হয়, তাদের বড় ক্লাইন্ট এয়ারটেল রবির সঙ্গে একীভূত হওয়ার কারণে ১৮ এপ্রিল অপারেটরটির ম্যানেজ সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যারা এই প্রজেক্টে আছেন, তাদের সবাইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। এই প্রজেক্টের বাইরে অন্যদেরও চাকরি চলে যেতে পারে। তাই যথাসম্ভব চাকরি খোঁজার জন্য বলা হয়।
তবে চাকরি থেকে চলে যাওয়ার জন্য কর্মীরা রাজি থাকলেও তারা ভলেন্টারি সেপারেশন স্কিম (ভিএসএস) দাবি করেন। এরিকসনের কয়েকজন কর্মী প্রিয়.কম-কে বলেন, ‘বাংলাদেশে টেলিকম খাতের সব কোম্পানি এবং আমাদের সহগোত্রীয় প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েতে গোল্ডেন হ্যান্ডসেক দেওয়া হলেও এরিকসনে তা দেওয়া হয়নি।’ তবে কর্মী ছাঁটাই শুরু হলে শ্রমিকদের তীব্র আন্দোলনের পর ভলেন্টারি সেপারেশন স্কিম (ভিএসএস) নামে একটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।’
প্যাকেজে লোকাল কন্ট্রাকচুয়াল এবং এফএসও কর্মীদের বাৎসরিক একটি বেসিক সেলারি দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া যারা তিন বছর, দুই বছর এবং এক বছর করে চাকরি করেছেন তারা যথাক্রমে ৬০, ৫২ এবং ২৬ দিনের লিভ অ্যানক্যাশমেন্ট সুবিধা পাবেন।
তবে এরিকসনের এই প্যাকেজ কর্মীদের পছন্দ হয়নি এবং প্যাকেজ রিভিউ করতে নতুন কিছু দাবি তুলে ধরে কর্মীরা। তাদের দাবি অনুযায়ী সবাইকে বাৎসরিক ৮টি বেসিক এবং ৬টি গ্রস দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ (এইচআর) বিভাগে ২২ এপ্রিল পাঠানো ওই দাবিগুলো ২৭ এপ্রিলের মধ্যে পূরণ করার জন্য বলা হয়। তবে এইচআর বিভাগ গত ২৬ এপ্রিল দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে নেয়। কিন্তু শ্রমিকরা ৪ মে'র মধ্যে তাদের দাবির স্বপক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য আবার চিঠি লিখে পাঠান।
এরিকসন কর্তৃপক্ষ ৪ মে শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো জবাব দিতে না পারলেও ৮ মে জানান, শুধুমাত্র এফএসও কর্মীদের বেসিক সেলারি ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ উন্নিত করা হয়েছে। এর বাইরে আর কোনো দাবি মানতে রাজি হয়নি এরিকসন।
তবে এ সব বিষয়ে জানতে এরিকসন বাংলাদেশের হেড অব এইচআর মীর আওয়াল খাদেমুর রহমানের সঙ্গে কয়েক দফা ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রিয় সংবাদ/শান্ত