কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মুহাম্মাদ লেখা আরবি ক্যালিগ্রাফি। ছবি : সংগৃহীত

পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখতে রাসূল (সা.)-এর দিক নির্দেশনা

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:২৯
আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:২৯

(প্রিয়.কম) আজ আমাদের সমাজে পারিবারিক অবস্থা অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেই সাথে প্রত্যেকটা পরিবারে রয়েছে বিভেদ। এমন একটা পরিবার পাওয়া আজ খুবই কষ্টের বিষয় যে পরিবারে পারিবারিক বন্ধন খুব ভালো। তবুও যে পরিবারগুলোতে অভিভাবকগণ একটু জোড়ালো ভূমিকা পালন করেন, সেই পরিবারগুলো তুলনামূলক কিছুটা ভালো। আমরা আজকে পারিবারিক এই বন্ধনকে অটুট রাখার বিষয়টাকে ভিন্ন ধর্মীয় সংস্কৃতি মনে করি। অথচ আমরা যদি দেখি তাহলে- দেখতে পাব যে, আমাদের নবী (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পারিবারিক অভিভাবক।

নবী মুহাম্মদ (সা.) সব সময়ই উম্মতকে কঠোরভাবে উপদেশ দিয়েছেন পারিবারিক বন্ধনকে অটুট রাখার জন্য। পারিবারির বন্ধনকে অটুট রাখার বিষয়ে পরিবার প্রধানের ভূমিকাই সব থেকে বেশি। এই জন্য সব থেকে প্রথমে পরিবারের প্রধানকে একজন শ্রেষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হতে হবে। একটি হাদিসে আমাদের নবী (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি তিনি যে তার পরিবারবর্গের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং আমি আমার পরিবারের মধ্যে শ্রেষ্ঠ (তিরমিজি)। এই কথা বলার মাধ্যমে, তিনি নিজের পরিবারের সাথে আচরণ করার সময় তার আচরণের অনুকরণ করাকে উম্মাহকে (মুসলিম সম্প্রদায়) স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

একটি শক্তিশালী মুসলিম উম্মাহর মূলভিত্তি পরিবারের উপর ভিত্তি করেই। কারণ প্রত্যেকটা বিষয় ছোট পরিসরে যখন বিষয় ভালো হবে তখনই কিন্তু বড় পরিসরে ভালো হওয়া সম্ভব। আজ আমাদের সমাজে যে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে কি এর কারণ? একটু চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারি পিতা-মাতা এবং সন্তানের মধ্যে এবং ভাইবোনদের মধ্যে এমনকি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকার  কারণে। যদি পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই শক্ত ভিত্তি ধরে রাখতে পারে তাহলে সাধারণের মধ্যে প্রতিবেশী, সহকর্মী, সহপাঠী এবং অন্যান্য পরিবারের সবাই একই সাথে অন্যদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখবে। সুতরাং, এটা কোনো আশ্চর্যের ব্যাপার নয় যে, নবী (সা.) আমাদের পরিবারকে নেতৃত্বের গুরুত্ব সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

রাসুল (সা.) এর বেশ কয়েকজন স্ত্রী ছিলেন তিনি তাদের সকলেই মন রক্ষা করেছেন। তিনি যখন ভ্রমণে বের হতেন তখন কোনো না কোনো স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বের হতেন। এমনকি তিনি যখন যুদ্ধে বের হতেন তখনও স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বের হতেন। একটি শক্তিশালী পরিবার গড়তে চাইলে সেখানে স্ত্রীরও যে একটি বড় ভূমিক আছে মূলত নবী (সা.) এর এই সকল কাজের মাধ্যমে তিনি সুবিধাগুলো প্রমাণ করেছেন।

জাহেলিয়াতের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন একটি সংস্কৃতি চালু করেছিলেন যা তার আগে কেউ কল্পনাও করতে পারত না। যেই সময় মানুষ মেয়ে সন্তান হলে জীবিত দাফন করত তখন তিনি চারজন মেয়ে সন্তানের বাবা ছিলেন। তিনি শুধু তাদের বাবাই ছিলেন না বরং তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে উপযুক্ত স্বামীর হাতে তুলে দিয়েছেন। রাসুল (সা.) একজন পারিবারিক লোক ছিলেন বলেই তিনি এমনটা পেরেছিলেন।

আজ আমাদের সমাজের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে যদি পরিবারের প্রধানরা পারিবারিক হতে পারেন। এটা যে শুধু দুনিয়ার জন্য কল্যাণকর তা কিন্তু নয়। পরিবারের প্রধান পারিবারিক লোক হলে সেই পরিবার দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ লাভ করবে। আল্লাহ সবাইকে সে তাওফিক দান করুন। আমীন। 

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ

প্রিয় ইসলাম/আশরাফ