কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রাত ও দিন আল্লাহ মহানের সৃষ্টি। ছবি: সংগৃহীত

রাত ও দিন আল্লাহপাকের মহাপরিকল্পনার অংশ

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:৪৩
আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:৪৩

(প্রিয়.কম) মুমিনের সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর জন্য নিবেদিত হবে। তার প্রতিটি মুহূর্ত অতিবাহিত হবে আল্লাহর স্মরণে ও তার বিধান পালনে। তার সব কর্ম সম্পাদিত হবে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণ-অনুকরণের মধ্য দিয়ে। যেমনভাবে মুমিনের দিন অতিবাহিত করার আদব- শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, অনুরূপভাবে রাত্রি অতিবাহিত করার আদব-শিষ্টাচার ইসলাম বিশেষভাবে শিক্ষা দিয়েছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘তিনিই তোমাদের জন্য রাত তৈরি করেছেন, যাতে তোমরা তাতে প্রশান্তি লাভ করতে পারো ও দিনকে উজ্জ্বল করেছেন। এর মধ্যে শিক্ষা আছে এমন লোকদের জন্য যারা (খোলা কানে নবীর দাওয়াত )শোনে।’ (সুরা:ইউনুস, আয়াত-৬৭)

পবিত্র কুরআনের অন্য একটি আয়াতে আল্লাহপাক আরও ইরশাদ করেছেন, ‘আর তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে তোমাদের রাতে ও দিনে ঘুমানো এবং তোমাদের তার অনুগ্রহ সন্ধান করা। অবশ্যই এর মধ্যে রয়েছে বহু নিদর্শন এমন সব লোকদের জন্য যারা (গভীর মনোযোগ সহকারে) শোনে।’ (সূরা: রুম, আয়াত-২৩)

অনুগ্রহ সন্ধান করা অর্থ জীবিকার জন্য সংগ্রাম ও প্রচেষ্টা চালানো। মানুষ যদিও সাধারণত রাতের বেলা ঘুমায় এবং দিনের বেলায় জীবিকার জন্য চেষ্টা-মেহনত করে, তবুও শতকরা ১০০ ভাগ লোক এমনটি করে না। বহুলোক দিনের বেলায় ঘুমায় ও রাতে জীবিকা উপার্জনের জন্য মেহনত করে। তাই রাত-দিনকে একসঙ্গে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এ দুটি সময়ে তোমরা ঘুমাও এবং নিজেদের জীবিকা উপার্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকো।  

এটিও এমন ধরনের নিদর্শনাবলীর অন্যতম যেগুলো থেকে একজন মহাজ্ঞানী স্রষ্টার ব্যবস্থাপনার সন্ধান পাওয়া যায়। এ ছাড়াও এ জিনিসটি এ-ও চিহ্নিত করে যে, তিনি নিছক স্রষ্টার নন বরং নিজের সৃষ্টির প্রতি বড়ই করুণাশীল ও স্নেহময় । সৃষ্টির প্রয়োজন ও কল্যাণের জন্য তার চেয়ে বেশি তিনি চিন্তা করেন।

মানুষ দুনিয়ায় অনবরত পরিশ্রম করতে পারে না। বরং প্রত্যেকবার কয়েক ঘণ্টা মেহনত করার শক্তি পাবে। এ উদ্দেশ্যে মহাজ্ঞানী ও করুণাময় স্রষ্টা মানুষের মধ্যে কেবলমাত্র ক্লান্তির অনুভূতি ও কেবলমাত্র বিশ্রামের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হননি, বরং নিদ্রার এমন একটি জবরদস্ত চাহিদা তার অস্তিত্বের মধ্যে রেখে দিয়েছেন, যার ফলে তার ইচ্ছা ছাড়াই এমনকি তার বিরোধিতা সত্ত্বেও আপনা-আপনিই কয়েক ঘণ্টার জাগরণ ও মেহনতের পর তা তাকে পাকড়াও করে। কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে তাকে বাধ্য করে এবং প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলে আপনা-আপনিই তাকে ত্যাগ করে।

পবিত্র কুরআনের অন্য আয়াতে আল্লাহপাক আরো বলেছেন, ‘আর তিনিই রাতকে তোমাদের জন্য পোশাক, ঘুমকে মৃত্যুর শান্তি এবং দিনকে জীবন্ত হয়ে উঠার সময়ে পরিণত করেছেন।’ (সুরা: ফুরকান, আয়াত-৪৭)

এ আয়াতের তিনটি দিক রয়েছে। একদিক থেকে এখানে তাওহিদের যুক্তি পেশ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় দিক থেকে নিত্যদিনকার মানবিক অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণের সাহায্যে মৃত্যুর পরের জীবনের সম্ভাবনার যুক্তি পেশ করা হচ্ছে। তৃতীয় দিক থেকে যেভাবে সুসংবাদ দেওয়া হচ্ছে যে, জাহেলিয়াতের রাত শেষ হয়ে গেছে, এখন জ্ঞান, চেতনা ও হেদায়াতের উজ্জ্বল দিবালোকের স্ফূরণ ঘটেছে।  শিগগিরই বা দেরিতে যেমন করেই হোক নিদ্রিতরা জেগে উঠবেই। তবে যাদের জন্য রাতের ঘুম ছিল মৃত্যু ঘুম তারা আর জাগবে না এবং তাদের না জেগে ওঠা হবে তাদের নিজেদের জন্যই জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া, দিনের কাজ-কারবার তাদের কারণে বন্ধ হয়ে যাবে না।  

প্রিয় ইসলাম