কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আগত বছরে ভালোবাসার সম্পর্কটি হয়ে উঠুক রঙিন। ছবি: নূর।

নতুন বছরে নতুনভাবে শুরু হোক ভালোবাসার সম্পর্কটি

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৫৫
আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:৫৫

(প্রিয়.কম) ভালোবাসা এমন একটি ‘অনুভূতি’ ও ‘আবেগ’ এর নাম, যা দুটো মানুষকে তো বটেই, পুরো পরিবারকে একত্রে ধরে রাখে। ভালোবাসা শুধুমাত্র মানুষের মাঝে বন্ধন তৈরি করে না, সকলের মাঝে দায়িত্ববোধও তৈরি করে তোলে। যেখানে ভালোবাসার সম্পর্ক ও বিবাহিত যুগলদের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে এই ব্যপারগুলো খুবই স্পর্শকাতর। এই সম্পর্কগুলোতে দুইজন মানুষ একত্রে সময়ের হাত ধরে সামনের দিকে এগুতে থাকে। সেক্ষেত্রে দুইজন মানুষের ভবিষ্যৎ ঘিরে গড়ে ওঠা স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা, পরিকল্পনা, লক্ষ্য সকলই কিছুই একই পথে অগ্রসর হয়।

ভালোবাসার সম্পর্ক ও বিবাহিত সম্পর্কে মাঝে পারস্পরিক বোঝাপড়া যত ভালো হয়, সম্পর্কের মাঝে নিজেদের লক্ষ্য ততোই স্পষ্ট হয়। এই সকল লক্ষ্যগুলো হতে পারে খুব ছোট কোন কিছু নিয়ে অথবা অনেক বড় কোন ব্যাপারে! কেমন ছিল এই বছরে আপনার সম্পর্কটি? ভালো-খারাপ মিলিয়ে, খুব ভালো নাকি খুব খারাপ? সাধারণভাবেই একটি ভালোবাসার সম্পর্ক ও বিবাহিত সম্পর্কের মাঝে থাকবে অনেক বন্ধুর পথ এবং অনেক মনোমালিন্য। কিন্তু যে সময়টি চলে গেছে সেটা নিয়ে ভেবে অযথা সময় নষ্ট করা হবে একেবারেই বোকামি। তারচাইতে ভবিষ্যৎ সময়ের ব্যাপারে ভাবতে হবে, পরিকল্পনা করতে হবে। আপনার ভালোবাসার সম্পর্কটি অনেকটাই নির্ভর করে আপনার উপরে। তাই নিজের বিশেষ সম্পর্কটিকে নতুন, সুন্দর ও গোছানো করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করা।

একে-অপরকে ‘ডিজিটাল স্পেস’ দেওয়ার চেষ্টা করুন

পারসোনাল স্পেস সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। একজন মানুষের সাথে সম্পর্ক যতোই ঘনিষ্ট হোক না কেন, প্রত্যকের রয়েছে নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপার। যেখানে কখনোই অকারণ প্রবেশ করা উচিৎ নয়। ঠিক তেমনভাবেই ভালোবাসার সম্পর্কের ক্ষেত্রে শুধু পারসোনাল স্পেস নয়, একে-অপরকে ডিজিটাল স্পেস দেওয়ার মনোভাবও গড়ে তুলতে হবে। ভালোবাসার মানুষটি কাকে মেইল দিচ্ছে, কে তাকে ম্যাসেজ দিচ্ছে, কার সাথে মোবাইলে কথা বলছে- প্রতিটি সময় এইসকল খুঁটিনাটি জানার কোন প্রয়োজন নেই। নতুন বছরে এমন ধরণের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন।

একসাথে অর্থ বিনিয়োগ করার চেষ্টা করুন

একটি ভালোবাসার সম্পর্ক কিংবা সফল বিবাহিত সম্পর্ক কখনোই গড়ে তোলা সম্ভব নয় যদি একে-অপরের প্রতি বিশ্বাস না থাকে। সম্পর্কের মূল ভিত্তিই হলো বিশ্বাস। আর বিশ্বাস রয়েছে যে সম্পর্কের মাঝে সেখানে একত্রে টাকা বিনিয়োগের ব্যাপারে কোন সমস্যা দেখা দেখার কথা নয়! শুধুমাত্র ভালোবাসা ও ভালো সময় কাটানো যথেষ্ট নয়। একটি সম্পর্ককে শক্তভাবে গড়ে তুলতে চাইলে প্রয়োজন দৃঢ় অর্থনৈতিক অবস্থা। তাই দু’জনে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে একসাথে কোন লাভযুক্ত স্থানে অর্থ বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিন।

শখের কাজ

দু’জনের একই রকম শখের কাজ গড়ে তুলুন

প্রতিটি মানুষ স্বতন্ত্র। প্রতেককের ভালোলাগা ও শখের কাজের স্থান হবে ভিন্ন। যেটা স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। তবে যে মানুষটার সাথে দিনের বেশীরভাগ সময় ও পুরো জীবনটাই কাটানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তার সাথে নিজের কিছু পছন্দের কাজে মিল তৈরি করা প্রয়োজন। জানার চেষ্টা করুন তিনি কি খেতে ভালোবাসেন, অবসরে কোন কাজ করতে চান তিনি। একইভাবে নিজের ভালোলাগা সম্পর্কে জানান তাকে। বই পড়তে বেশী ভালোবাসেন নাকি গান শুনতে, সেটা তাকে বলুন। একইসাথে দুইজনে মিলে কমন একটি শখ ও ভালোলাগার কাজ গড়ে তুলুন। নিজেদের অবসর সময়ে একত্রে সেই কাজটি করতে পারেন। এতে সম্পর্ক মজবুত হয়ে ওঠে।

একসাথে রান্না করুন

রান্না বাজে হবে নাকি ভালো হবে এটা নিয়ে একেবারেই দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। রান্না কেমন হবে সেটা মূখ্য ব্যাপার নয়। একসাথে রান্না করার মাধ্যমে সম্পর্কে দুইজন মানুষের মাঝে ভালো বোঝাপড়া তৈরি হয়। কারণ, একটি খাবার রান্না করতে বেশ কয়েকটি ধাপ পার হতে হয়। সকল উপাদান সংগ্রহ ও জড়ো করা, মশলা ঠিক করা, পাত্র নির্বাচন করা, কাটাকুটি করা, সঠিক সময় নিয়ে রান্না করা, রান্নায় লবণের স্বাদ দেখা! একসাথে রান্না করার মাধ্যমে দুইজন মানুষের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে উন্নতি দেখা দেয়। আসছে নতুন বছরে কোন নতুন খাবার রান্না করবেন না? নতুন বা পুরনো যাই রাঁধুন না কেন, একসাথে রান্না করার পরিকল্পনা করে ফেলুন।

একসাথে শরীরচর্চা করুন

সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলে প্রয়োজন নিজেকে সুস্থ রাখা। আর শরীরচর্চা হলো সবচাইতে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যা আপনাকে সুস্থ রাখতে পারে পুরো বছর জুড়ে। একা নয়, শরীরচর্চা করার চেষ্টা করুন ভালোবাসার মানুষটির সাথে। সকালে একসাথে দৌড়াতে বের হওয়া, প্রতিযোগিতা করে দড়িলাফ দেওয়া কিংবা একসাথে সাইকেল চালানোর অভ্যাসগুলো খুবই দারুণ। এতে করে পরস্পরের সাথে কাটানোর জন্য অনেকটা সময় পাওয়া সম্ভব হয় এবং একসাথে সুস্থ থাকা যায়।

প্রতিদিন অন্তত একবেলা একসাথে খাবার চেষ্টা করুন

হয়তো আপনারা দুইজনেই খুব ব্যস্ত নিজেদের চাকরী জীবন নিয়ে। সাথে রয়েছে সংসারের নানান ঝামেলা। সকালে থাকে তাড়াহুড়ো, দুপুরে থাকা হয় অফিসে। রাতেও সময় মেলানো সম্ভব হয় না বলে একসাথে খাওয়া হয় না। আপাতদৃষ্টিতে খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার হলেও, অনেক সময় এটা থেকেই সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়ে থাকে। তাই সকল কাজ, ব্যস্ততা ও ঝামেলাকে একপাশে রেখে চেষ্টা করুন একসাথে একবেলা খাবার খেতে। খাবার খাওয়ার সময় হালকা কথাবার্তা, নিজের অবস্থা সম্পর্কে একে-অন্যকে জানানো এবং পরস্পরকে দেওয়া সময়- সম্পর্কের ভীতকে অনেক মজবুত করে তোলে।

দাতব্য কাজে অংশগ্রহণ করুন একসাথে

যেকোন ধরণের দাতব্য কাজ ও সমাজ কল্যান মূলক কাজগুলো সঙ্গীকে সাথে নিয়ে করার চেষ্টা করুন। সাধারণভাবে এই কাজগুলো করার ফলে অনেক মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যায়। তবে ভালোবাসার সঙ্গীকে সাথে নিয়ে যখন এই কাজগুলো করা হয়, তখন ভালোলাগাটা বেড়ে যায় অনেকখানি। মানসিক প্রশান্তি ও স্বস্থির পাশাপাশি কাজ করে একে-অন্যের জন্য শ্রদ্ধাবোধ। যা সম্পর্কে শক্ত হতে সাহায্য করে। নতুন বছরের ‘নিউ ইয়ার রেজলুশন’ এর মাঝে দাতব্য কাজের উল্লেখ আছে কি? যদি না থাকে তবে সেটা সংযুক্ত করুন। সাথে রাখুন নিজের প্রিয়জনকেও।

সময় খুব দ্রুত চলে যায়। পলক ফেলার আগে শেষ হয়ে যায় একটি বছর। এসে যায় নতুন আরেকটি আনকোরা বছর। প্রাপ্তির খাতার হিসেব নিয়ে বসার চাইতে নতুন বছরের জন্য পরিকল্পনা করা হবে বেশী ফলদায়ক। তাই নিজেকে ও নিজের ভালোবাসার সঙ্গীকে নিয়ে আগত বছরটি সুন্দরভাবে পার করার জন্য এখনই থেকেই শুরু করুন পরিকল্পনা করা।

সূত্র: Boldsky  

প্রিয় লাইফ/ কে এন দেয়া