কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বরেণ্য অভিনেতা হাসান ইমামের মুখে সদা তারুণ্যের ছাপ। ছবি: শামছুল হক রিপন; প্রিয়.কম

‘বেশ কিছু ছেলে আছে যারা অভিনয়ে না এলেই ভালো হতো’

শিবলী আহমেদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:২৪
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮, ১৯:২৪

(প্রিয়.কম) উত্তরার শুটিং বাড়ি ‘স্বপ্নিল ৪’ এ চলছিল ‘ভালোবাসার চাদর’ নামে একটি সিঙ্গেল নাটকের শুটিং। শুটিংয়ের কাজ শুরু হয়েছিল ১৬ জানুয়ারি। দ্বিতীয় দিনে সেখানে ক্যামেরা নিয়ে হাজির হয়েছিল প্রিয়.কম। দোতলার ঝা চকচকে বেলকনিতে ঝকঝকে রোদের মধ্যে ডিওপি মিঠু মনিরের ক্যামেরার সামনে শট দিচ্ছিলেন হাসান ইমাম ও রিয়াজ আহমেদ। মনিটরের দিকে সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিতে দৃশ্যায়ন ঠিকঠাক হলো কি  হলো না- সেদিকে খেয়াল রাখছিলেন পরিচালক আদিত্য জনি। আমাদের দেখে মনিটর থেকে চোখ তুলে স্বাগত হাসি হেসে বসতে দিলেন তিনি। চা খাওয়ার অনুরোধ করে বললেন, ‘একটু বসুন, কিছুক্ষণের মধ্যে শট শেষ হবে’।

মিনিট দশেক পর বেলকনির দৃশ্যায়ন শেষ হলো। ফুরসৎ পেলেন বরেণ্য অভিনেতা হাসান ইমাম। আমাদের দেখেই চিনতে পারলেন। বললেন, ‘কাছে এসে বসো’। কাছে বসার আগেই তার কিছু ছবি ক্যামেরা বন্দি করে নিলেন আমাদের আলোক চিত্রশিল্পী। 

হাসান ইমামের মুখে তখন স্বভাব সুলভ হাসি, স্বতঃস্ফূর্ত ভাব। এ বয়সে এসেও তার আচরণ ও কথাবার্তায় তারুণ্যের ছোঁয়া। এখনও দারুণ উদ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন নাটকে। তার এ তারুণ্য ও উদ্যমের রহস্যভেদ উন্মোচন করতে, হৃদয় শীতল করা হাসি হেসে প্রিয়.কমকে বললেন, ‘এটি তো আর আমি বলতে পারব না। এখনও যে সুস্থ আছি সেটি আমার সৌভাগ্য। আমার সময়ের যারা, তারা তো অনেকে চলেই গিয়েছেন। এখন যারা আছেন তারা কেউ সক্রিয় নেই। আমি এখনও সক্রিয় আছি, এটি আমার সৌভাগ্য।’ ভালোবাসার চাদর নাটকের শুটিংয়ের অবসরে হাসান ইমাম। ছবি: শামছুল হক রিপন

বর্তমান প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীকে সম্পর্কে হাসান ইমাম প্রিয়.কমকে বলেন, নতুন অনেক ছেলে খুব ভালো করছে। সবাই না, বেশ কিছু ছেলে আছে যারা অভিনয়ে না এলেই ভালো হতো। তারা অন্য কাজ আরও ভালো করতে পারতো। তবে কিছু ছেলে এসেছে, যারা ভালো ও প্রতিভাবান।

ছোটপর্দা ছাড়াও বড় পর্দাতেও আমরা দেখতে পাই এ দৃঢ় অভিনয় শিল্পীকে। সর্বশেষ ঢাকা অ্যাটাক চলচ্চিত্রে একটি বিশেষ ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাকে। ব্যতিক্রমী গল্প ও নির্মাণ শৈলীর কারণে ঢাকা অ্যাটাক চলচ্চিত্রটি দর্শকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছিল। বড় বাজেট ছাড়াও, খুব কম বাজেটের মধ্যেও যে ভালো মানের কিছু চলচ্চিত্র নির্মার করা সম্ভব, সেটির একটি উদাহরণ হতে পারে ঢাকা অ্যাটাক চলচ্চিত্রটি।

আর তাই অভিনেতা হাসান ইমাম মনে করছেন আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কমার্শিয়াল ছবিতে আমরা বেশ এগিয়ে গিয়েছি। তার ভাষ্য, ‘কমার্শিয়াল ছবিতেও আমাদের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। আমি ঢাকা অ্যাটাক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। এ ছবিটি একদমই কমার্শিয়াল ছবি। বোম্বে স্ট্যান্ডার্ডের। বোম্বে স্ট্যান্ডার্ডের কমার্শিয়াল ছবি তৈরিতে বোম্বে লগ্নি করে ২০০ কোটি টাকা। আর আমরা ১ কোটি টাকা দিয়ে ছবি করি। সেই ১ থেকে দেড় কোটি টাকায়, বোম্বে স্ট্যান্ডার্ডের ছবি করা খুবই দুরহ। সেই কাজটি সফলভাবে করেছে আমাদের ছেলেরা। এ ছবিটি যদি ভারতে মুক্তি পেত, আমার মনে হয় সুপার হিট হতো।’ 

নাট্য জগতের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় অভিজ্ঞ একজন অভিনেতা তিনি। ছবি: শামছুল হক রিপন

এসব কথা বলতে বলতেই সময় হয়ে গেল পরবর্তী শটের। যাবার সময় ভালোবাসার নাটক সম্পর্কে বলে গেলেন, ‘স্ক্রিপ্ট পড়েছি, ভালো লেগেছে। এ নাটকের গল্পে ক্রাইসিসগুলো ভালো। ক্রাইসিসের সমাধানগুলোও যৌক্তিক। এসব দেখে দর্শকদের কাছে ভালো লাগবে নাটকটি।’

আমি দুদিক থেকেই মনে করি যে, সৃজনশীল ছবির দিক থেকেও কিছু ছেলে এগিয়ে এসেছে, আবার বাণিজ্যিক ছবির ব্যাপারেও বেশ কিছু ছেলে মেয়ে এগিয়ে এসেছে। এখন যদি ওই পাইরেসিটা বন্ধ করা যেত আর হলগুলোর অবস্থা ভালো হতো, যেমন এখন হলগুলো ও পরিচ্ছন্ন, টয়লেটগুলো ভালো না, সিটগুলো ভালো না, হলের সংখ্যা কমে গিয়েছে, এসব কারণে দর্শক কমে গিয়েছে। এগুলো যদি পুনর্নির্মান করা যায়, সুন্দর করে মেইনটেইন করা যায়, কেমন আগে ছিল সিনেমায় যাওয়াটা একটা উৎসব। সেই উৎসবে যদি আনা যায়, সিনেমায় যাওয়াটা একটা নেশা, একটি ছবি একজন দশবার পনের বার, একটি গানের জন্য হয়তো পঁচিশ বার দেখত। এখন গান তোলা সহজ হয়ে গিয়েছে। মোবাইলে তুলে নিলে গান বারবার শোনা যায়। কিন্তু তখন তো এত সহজ ছিল না।

মুখে সবসময়ই হাসি তার। ছবি: শামছুল হক রিপন

সেই অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়, যদি হলের পরিবেশ ভালো করা যায়, ছবির মান ভালো করা যায়, এবং ছবির কাহিনি এবং অভিনয়, সব কিছু মিলিয়ে যদি ভালো করা যায়। তাহলে অবশ্যই সেই জায়গা ফিরে আসবে। 

ভালোবাসার চাদর। পঁয়তাল্লিশ মিনিটের একটি সিঙ্গেল নাটক লিখেছেন জাকির হোসেন উজ্জ্বল। অভিনয় করছেন, রিয়াজ আহমেদ, আশনা হাবিব ভাবনা, হাসান ইমাম, ও ও অন্যান্য বেশ কজন তারকা।

‘ভালোবাসার চাদর’ নাটক সম্পর্কে বললেন,  ‘স্ক্রিপ্ট পড়েছি, ভালো লেগেছে। এ নাটকের গল্পে ক্রাইসিসগুলো ভালো। ক্রাইসিসের সমাধানগুলোও যৌক্তিক। এসব দেখে দর্শকদের কাছে ভালো লাগবে নাটকটি।’

প্রিয় বিনোদন/সিফাত বিনতে ওয়াহিদ