কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মুশফিকুর রহিম। ছবি: সংগৃহীত

সমালোচনার পাহাড় মাথায় মুশফিকের সেঞ্চুরি

সৌরভ মাহমুদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৫৫
আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৫৫

(প্রিয়.কম) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের পুরোটা জুড়েই সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। টস জিতেও আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত, কোচ ও বোর্ড নিয়ে বিরুপ মন্তব্যে ক্রিকেটবোদ্ধাদের সমালোচনার শিকার হন তিনি। প্রশ্ন উঠে তার অধিনায়কত্ব নিয়ে। মুশফিকের দুর্ভাগ্যই বলা যায়, টেস্ট সিরিজের সব কিছুই তার প্রতিকূলে গেছে। দলের দুর্দশাপূর্ণ ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি তার নিজের ব্যাট থেকেও যেন হারিয়ে গিয়েছিল সাবলীল ছন্দ। 

টেস্ট সিরিজের বিতর্ক ঘেরা সময়টা পেরিয়ে রঙিন পোশাকের প্রথম ম্যাচেই উজ্জ্বল মুশফিক। টেস্ট সিরিজের সকল ব্যর্থতা ও সমালোচনা পাশ কাটিয়ে এদিন কিম্বার্লিতে মুশফিক তুলে নেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। ১০৮ বলে ১০টি চার ও দুটি ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এটা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। একই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশি কোনও ব্যাটসম্যানের প্রথম সেঞ্চুরি। মুশফিকের ১১০ রানের এ ইনিংস দিয়ে টেস্ট খেলুড়ে সব দেশের বিপক্ষেই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হয়ে গেল বাংলাদেশের।

অনুশীলন এবং পরিশ্রমের ক্ষেত্রে বরাবরই সিরিয়াস মুশফিক। যার প্রতিফলন দেখা যায় তার ব্যাটে। দলের বিপদের মুহূর্তে ত্রাণকর্তার ভূমিকায় বারবারই নিজেকে অবতীর্ণ করেছেন। দারুণ ধারাবাহিকতার জন্য তার নামের সঙ্গে জুড়ে গেছে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে যখন মুশফিক ব্যাটিংয়ে নামেন, তখন দলীয় সংগ্রহ ১৪ ওভারে দুই উইকেটে ৬৭ রান। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মুশফিক। সঙ্গী হিসেবে পান সাকিব আল হাসানকে।

কিম্বার্লিতে এদিন শুরু থেকেই মুশফিক খেলেছেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। সিঙ্গেল-ডাবলসের পাশাপাশি চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে স্কোরকার্ডে রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৫৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন মুশফিক। যদিও দলীয় ১২৬ রানে ইমরান তাহিরের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ২৯ রান করা সাকিব। তবে সাকিব ফিরে গেলেও আরেক প্রান্ত আগলে রাখেন মুশফিক। ইনিংসের ২৯তম ওভারে ড্যান প্যাটারসনের বলে কাভারের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে ৫২ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান।

এরপর চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে ৬৯ ও পঞ্চম উইকেটে সাব্বির রহমানের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। দারুণ সব শটে এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে। প্রোটিয়া বোলারদের উপর চড়াও হয়ে বল বারবারই সীমানা ছাড়া করছিলেন তিনি। ১০৮ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন ৩০ বছর বয়সী মুশফিক। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে মুশফিকই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করলেন। সেঞ্চুরি করার পর হেলমেট খুলে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন। তাকালেন আকাশের দিকে। এরপর মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে উদযাপন করলে সেঞ্চুরি।

এই সেঞ্চুরিতে মুশফিক অতিক্রম করলেন কঠিন সময়ও। মুখে ছিল চাপা হাসি, যা ছিল তৃপ্তিতে ভরা। শেষ পর্যন্ত ১১৬ বলে ১১০ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটিং ভরসা। ১১টি চার ও দুটি ছক্কায় মুশফিক তার ১১০ রানের ইনিংসটি সাজান। দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ২৭৮ রান। এর আগে মুশফিকের করা চারটি সেঞ্চুরির দুটি ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। বাকি দুটির একটি ভারত ও অপরটি পাকিস্তানের বিপক্ষে। তার সবশেষ সেঞ্চুরিটি এসেছিল ২০১৫ সালের সাত নভেম্বর। ঢাকায় সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০৯ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ওটা ছিল তার চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি।

প্রিয় স্পোর্টস/শান্ত মাহমুদ