কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মুজিব মেহদী। ছবি : সংগৃহীত।

মুজিব মেহদীর ‘বাইকুশতক’ ও নির্বাচিত কবিতার বই

সিফাত বিনতে ওয়াহিদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ১৭:০৮
আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ১৭:০৮

(প্রিয়.কম) চলছে জানুয়ারি মাস। মাস পেরোলেই শুরু হবে বাঙালির প্রাণের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। লেখকদের পাণ্ডুলিপি পৌঁছে যাচ্ছে প্রকাশকের কাছে, আর সেসব নিয়ে মুদ্রণ ও প্রকাশনার কাজে প্রকাশনী সংস্থা ও প্রিন্টিং প্রেসগুলোতে চলছে শেষ সময়ের ব্যস্ততা। এ পুরো মাসেই চলবে ছাপাখানার বিরামহীন কাজ। এবার বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে নব্বই-এর বিশিষ্ট কবি মুজিব মেহদীর বই ‘বাইকুশতক’। বইটি প্রকাশিত হচ্ছে নতুন প্রকাশক ‘ছোট কবিতা’ থেকে, প্রচ্ছদ করেছেন লুবনা চর্যা। মেলার প্রথমদিন থেকেই বইটি পাওয়া যাবে ‘বেহুলাবাংলা’র স্টলে এবং লিটলম্যাগ চত্বরে।

একশ’টি বাইকু নিয়ে প্রকল্পিত বই ‘বাইকুশতক’ সম্পর্কে কবি মুজিব মেহদী প্রিয়.কমকে বলেন, ‘বাইকু হলো হাইকু থেকে উদ্ভূত একটা ফর্ম। হাইকুর স্পেসিফিক একটা ব্যাকরণ আছে। পাঁচ-সাত-পাঁচ মিলিয়ে মোট সতের মাত্রার মধ্যে তিন লাইনে লিখতে হয় এটা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচলিত নানা ভাষায় হাইকু লিখিত হলেও এটা মূলত একটা জাপানি কবিতা আঙ্গিক। হাইকুর আরো কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে, যেমন এতে ঋতুচিহ্ন থাকতে হয়, যেটাকে জাপানি ভাষায় বলা হয় ‘কিগো’। আর শেষ লাইনে একটা কাটিং ওয়ার্ড থাকতে হয়, যাকে বলা হয় ‘কিরেজি’। এসব কড়াকড়ির মধ্যে আমি আগে কাজ করেছি। ২০১৩ সালে শুদ্ধস্বর থেকে আমার এ সংক্রান্ত একটা বই বের হয় ‘ত্রিভুজাসম্ভাষ’ নামে। ঐ বইটিতে তিন ধরনের লেখা ছিল : ব্যাকরণনিষ্ঠ হাইকু, একই আঙ্গিকে লিখিত ‘সেনরু’, যেখানে ঋতুচিহ্ন থাকে না, বরং মানবিক বৈশিষ্ট্য থাকে; আর এই দুইটা আঙ্গিকবৈশিষ্ট্য মিলিয়ে তৃতীয় আরেক ধরনের লেখা বাইকু। অন্যদিকে ‘বাইকুশতক’ বইটি পরিকল্পিত হয়েছে শুধু ‘বাইকু’ নিয়ে।

তবে কি মুজিব মেহদীর বাইকুগুলো জাপানি হাইকু স্টাইলেই রচিত হয়েছে, নাকি এর আছে আলাদা কোনো বৈশিষ্ট্য? উত্তরে তিনি জানান, বাইকুগুলো বাংলা ভাষায় লিখিত হাইকুর বিশেষ রূপ, যেখানে ব্যাকরণমুক্তি কী ধরনের সম্ভাবনার সামনে নিয়ে দাঁড় করায় তা যাচাই করে দেখা হয়েছে। এই বইয়ে হাইকুর নিষ্ঠ ব্যাকরণ থেকে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা নিয়ে বাংলা ভাষায় নির্দিষ্ট কাঠামোয় বিশেষ কোনো সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা যায় কি না, সেটাই নিরীক্ষা করতে চেয়েছেন এই গুণী কবি।

এ ছাড়াও এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হবে মুজিব মেহদীর নির্বাচিত কবিতার বই ‘ধূলি ওড়ানোর ভঙ্গি’। বইটি প্রকাশিত হচ্ছে ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে, প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী ধ্রুব এষ। ২০০১ সালে প্রকাশিত হয় মুজিব মেহদীর প্রথম কবিতার বই ‘মমি উপত্যকা’। ২০০৬ সালে বের হয় ‘ময়দানের হাওয়া’। এরপর যথাক্রমে ২০০৯, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আরও তিনটি কবিতাগ্রন্থ ‘চিরপুষ্প একাকী ফুটেছে’, ‘ত্রিভুজাসম্ভাষ’ ও ‘জঙ্গলের নিজস্ব শব্দাবলি’। মূলত এই পাঁচটি বইয়ের নির্বাচিত অংশ এবং ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত প্রকাশিত কিন্তু অগ্রন্থিত কবিতার একাংশ নিয়ে ১৪৪ পৃষ্ঠা আয়তনে প্রকাশিত হচ্ছে 'ধূলি ওড়ানোর ভঙ্গি'।

উল্লেখ্য, সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য কেবল ছোটকাগজের লেখক মুজিব মেহদী ২০১১ সালে পেয়েছেন লোক সাহিত্য পুরস্কার।

প্রিয় সাহিত্য/গোরা