কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বীর শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত স্মৃতিসৌধ। ছবি: সংগৃহীত

বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

কাইয়ূম আবদুল
কন্ট্রিবিউটর, সাভার
প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:৩৪
আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:৩৪

(প্রিয়.কম) ১৬ ডিসেম্বর। ৪৬ তম মহান বিজয় দিবসে বীর শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে বাহারি ফুল আর বর্ণিল সাজে সেজেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। শুধু তাই নয় স্মৃতিসৌধের চারপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে।

বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে ৪৬তম বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।

আর এই দিনই বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদীতে জড়ো হবে লাখ লাখ মানুষ। দিবসকে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও নজরদারীর কথা জানালেন স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রসাশন।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ ঘুরে দেখা যায, প্রধান ফটক থেকে শহীদ বেদী পর্যন্ত পায়ে হাঁটার লাল ইটের হেরিংবন্ড পথ। লাল ইটের উপর সাদা শুভ্র রঙের আঁচড় পুরো হেরিংবন্ড পথকে দিয়েছে অপরূপ এক সাজ। গত এক মাস ধরে বিশজন কর্মী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেছেন। আর হেরিংবন্ডের দুই পাশ ও সৌধ প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে সারিবদ্ধ করে বসানো হয়েছে অসংখ্য লাল টকটকে ফুলের টব। আর টবে রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ গাছ। একই সাথে স্মৃতিসৌধ মিনারের সম্মোখ ভাগে হেরিংবন্ড ধরে নিচু জায়গাগুলোতে গাঢ় সবুজ ঘাসের মধ্যে শোভা পেয়েছে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনিসহ নানা রঙের ফুল গাছের চারা। যা প্রতিবারের মতো এবারও স্মৃতিসৌধ এলাকাকে এনে দিয়েছে রঙিন ও বর্ণিল রূপ।

ফুলের গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে জাতীয় পতাকার প্রতিকৃতি। ছবি: সংগৃহীত

ফুলের গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে জাতীয় পতাকার প্রতিকৃতি। ছবি: সংগৃহীত

গত ১০ দিন ধরে টানা স্মৃতিসৌধের অভ্যন্তরের প্রায় ৪০ একর এলাকাজুড়ে চলছে ধোয়ামোছা ও অন্যান্য সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। সৌধ এলাকার বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যে লাগানো হয়েছে আলোকবাতি। চলছে উজ্জ্বল রঙিণ-বর্ণিল আলোকসজ্জার কাজ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে সৌধ এলাকা। বসানো হয়েছে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা, ডগ স্কোয়াডসহ অত্যাধুনিক স্ক্যানিং মেশিন।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। ছবি: সংগৃহীত

নিরাপত্তা নিশ্চিতে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতির ৪৬তম বিজয় উদযাপনের জন্য সৌধ এলাকার প্রস্তুতির বিষয়ে সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান প্রিয়.কমকে জানান, সৌধ এলাকার সৌন্দর্য বর্ধনের সব কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছেন তারা। সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় সাধারন দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে ১৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশি কূটনীতিকসহ বিশিষ্ট জনদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পর তা সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

এক সাগর রক্ত আর বহু ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে অজানা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকার অদূরে সাভারে নির্মিত হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

নানা ফুল গাছে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে লাল-সবুজ। ছবি: সংগৃহীত

নানা ফুল গাছে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে লাল-সবুজ। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে মহান বিজয় দিবস ঘিরে উৎসাহের কমতি নেই সাধারন মানুষের মধ্যে। দিবসটি উপলক্ষ্যে নানা প্রস্তুতির কথা জানান তারা। জনসাধরনের জন্য স্মৃতিসৌধ বন্ধ থাকলেও অনেকেই বাইরে থেকে ফটক দিয়ে প্রস্তুতির কাজ ও নানা আয়োজন দেখতে এসেছেন।

এ বিষয়ে কয়েকজন জানান, সূর্য সন্তানের শ্রদ্ধা জানাতে নানা প্রস্তুতির পাশাপাশি নতুন প্রজম্মকে ইতিহাস জানতে নিয়ে আসবেন স্মৃতিসৌধে। ঘুরে ঘুরে দেখাবেন সৌধ চত্ত্বর ও জানবেন মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস।

চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি। ছবি: সংগৃহীত

চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি। ছবি: সংগৃহীত

নিরাপত্তার বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান প্রিয়.কমকে জানান, সম্প্রতি আমেরিকায় এক বাংলাদেশীর বোমা হামলার ঘটনা আমাদের একটু ভাবিয়ে তুলেছে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তার বিষয়টি গত বছরের তুলনায় জোরদার করা হয়েছে। কয়েক স্তুরের নিরাপত্তার সঙ্গে সাদা পোশাক পরিহিত পুলিশের নজরদারি অব্যহত রয়েছে।

তিনি আরও জানান, এছাড়া ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আমিনবাজার থেকে শুরু হয়ে স্মৃতিসৌথ পর্যন্ত ২৬ টি এলইটিভি লাগানো হয়েছে। যেখানে মৃক্তিযোদ্ধের ইতিহাস ও দুর্লভ ছবি ও ভিডিও দেখানো হবে। আবার স্মৃতিসৌধের মুক্তমঞ্চ শিল্পাকলা একাডেমীর শিল্পীদের অংশগ্রহণে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।

প্রিয় সংবাদ/আদিল