কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মডেল টেইলর মিউলের শরীরের অর্ধেক নিজের, অর্ধেক তার জমজের। ছবি: সংগৃহীত

দুর্লভ যে জটিলতায় একই শরীরে ভাগাভাগি করে নেয়া দুই যমজ!

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০১৭, ১৪:২৮
আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০১৭, ১৪:২৮

(প্রিয়.কম) জীবনের ৩৩টি বছর নিজের যমজকে শরীরে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন- এমনটা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেননি ক্যালোফোর্নিয়ার মডেল ও গায়িকা টেইলর মিউল। গর্ভে থাকা অবস্থায় তার শরীরের সাথে মিশে যায় তার যমজ বোনের শরীর। বছরের পর বছর পেরিয়ে ২০০৯ সালে আবিষ্কার করা হয়, তার রয়েছে কাইমেরিজম নামের এক দুর্লভ জটিলতা, যেখানে দুই যমজ একই শরীরে থাকে। এক্ষেত্রে একই শরীরে পাওয়া যায় দুইটি ভিন্ন ধরণের ডিএনএ, আলাদা রক্তপ্রবাহ এবং কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় জন্মদাগ। 

জন্ম থেকেই কিছু অস্বাভাবিকতা ছিল টেইলরের শরীরে। তার শরীরের বাম দিকের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একটু বেশি বড় ডান দিকের চাইতে। শরীরের একদম মাঝ বরাবর চলে গেছে একটি লাইন, একদিকের ত্বকের রং গাড়, আরেকদিকের ত্বকের রং হালকা। তার কাইমেরিজমের সবচাইতে বড় লক্ষণ এটাই। সাধারণত কাইমেরিজমে আক্রান্ত মানুষের বাহ্যিক তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না বা থাকলেও ছোট হয়।

এই দাগটাকে একটা জন্মদাগ বলেই মনে করতেন টেইলর। কিন্তু কাইমেরিজমের ওপরে একটি টিভি ডকুমেন্টারি দেখার পর আমূল বদলে যায় তার ধারণা।

শুধু জন্মদাগ নয়, কাইমেরিজমের কারণে ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত অসুস্থ ছিলেন টেইলর। নিয়মিত ঠাণ্ডাজ্বর, প্রচন্ড মাথাব্যথা এবং অনিয়মিত মাসিক সবসময়েই তাকে পীড়া দেয়। এছাড়াও তার শরীরের একটি দিকে বিভিন্ন মেটালের প্রতি অ্যালার্জি আছে কিন্তু অন্য দিকে নেই।

২০০৯ সালে কাইমেরিজমের ওপরে একটা ডকুমেন্টারি দেখতে গিয়ে টেইলর আবিষ্কার করেন, সেখানে দেখানো এক শিশুর শরীরেও রয়েছে হুবহু একই রকমের একটি দাগ। এক সপ্তাহ পর ডাক্তারের কাছে গিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় তার কাইমেরিজম আছে।

এ সময়ে থেকে টেইলর নিজের এই জটিলতার সাথে খাপ খাইয়ে নেবার চেষ্টা করছেন। আগে তিনি নিজের এই জন্মদাগ ঢেকে রাখতে অথবা ছবি ফটোশপ করে বাদ দিতেন। কিন্তু এখন তিনি আর তা লুকাতে চান না।

কাইমেরিজম কারো আছে কিনা তা শুধুমাত্র জানা যায় ব্লাড ডিএনএ টেস্ট করার পরেই। সারা বিশ্বে মাত্র ১০০ জন নারীর কাইমেরিজম আছে বলে ধারণা করা হয়।

২০০২ সালে লিডিয়া ফেয়ারচাইল্ড নামের এক নারী নিজের সন্তানদের সাথে ডিএনএ টেস্ট করতে গিয়ে দেখেন তারা তার সন্তান না বলে দেখা যাচ্ছে। পরে আবিষ্কার হয়, তার কাইমেরিজম আছে এবং তার যমজ বোনের যে ডিএনএ ছিল তার শরীরে, সেটার সাথে মেলে তার সন্তানের ডিএনএ।

একই রকমের ঘটনা দেখা গিয়েছিল ১৯৯৮ এর দিকে, ক্যারেন কিগানের ক্ষেত্রে। তার কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের দরকার হয়েছিল বলে তার সন্তানেরা টেস্ট করায়, দেখা যায় ক্যারেনের সাথে কারোই ম্যাচ হচ্ছে না। পরে দেখা যায় তারও কাইমেরিজম আছে।

সারা বিশ্বে খুব কম পরিমাণে দেখা যায় কাইমেরিজম। দুইটি যমজ যদি একই লিঙ্গের হয় তাহলে জীবিত মানুষটির শরীরে অন্য জমজের কিছু কোষ এবং কিছু জন্মদাগ থাকতে পারে। এছাড়াও দুইটি যমজ আলাদা লিঙ্গের হলে যে যমজটি জন্ম নেয় সে হার্মাফ্রোডাইট বা উভলিঙ্গ মানুষ হতে দেখা যায়।

সূত্র: Daily Mail, Business Insider        

সম্পাদনা : রুমানা বৈশাখী