তাসকিনের করা ওই ওভারটিই ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় রংপুরকে। ছবি: প্রিয়.কম
রনচি-তাসকিনদের দিনে মাশরাফির দলের হার
আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭, ১৮:২৬
(প্রিয়.কম, সিলেট থেকে) প্রথমে ব্যাট হাতে লুক রনচির ঝড়। পরে বল হাতে তাসকিন আহমেদের ম্যাজিক। এই দুইয়েই বেসামাল রংপুর রাইডার্স। দারুণ এক জয় দিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরু করা রংপুর রাইডার্স বুধবার ১১ রানে হার মানল চিটাগং ভাইকিংসের কাছে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা চিটাগং ভাইকিংস লুক রনচির দারুণ ব্যাটিংয়ে চার উইকেটে ১৬৬ রান তোলে। জবাবে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি রংপুর রাইডার্স। থেকে থেকে লড়াই করা রংপুরের ইনিংস থেমে যায় ১৫৫ রানে।
লক্ষ্য খুব বড় ছিল না। কিন্তু রংপুরের শুরু দেখে মনে হয়েছে প্রতিপক্ষের দেওয়া লক্ষ্য তাদের বেশ ভাবিয়েছে। উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন এনে জনসন চার্লসের সাথে জিয়াউর রহমানকে পাঠায় তারা। আগের ম্যাচ খেলা অ্যাডাম লিথ এ ম্যাচে সুযোগ পাননি। নতুন এই জুটি দলকে ভাল সূচনা এনে দিতে পারেননি। প্রথম ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন চার্লস। তেড়েফুরে শুরু করতে চাওয়া জিয়াউরও ১১ রান করে ফিরে যান।
২০ রানেই নেই দুই উইকেট। এরপর মোহাম্মদ মিথুন ও রবি বোপারার ব্যাটে চাপ কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করে রংপুর। সাবলীলও দেখাচ্ছিল এই দুই ব্যাটসম্যানকে। কিন্তু পথটা দীর্ঘ হয়নি। ভাল শুরু করেও ১৫ বলে দুই চার ও এক ছয়ে ২৩ রান করে বিদায় নেন মিথুন। এতেও সমস্যা হয়নি রংপুরের। বোপারার সাথে যোগ দিয়ে ৪৯ রানের জুটি গড়ে তোলেন শাহরিয়ার নাফিস। এই জুটিতে ঠিক পথেই ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
কিন্তু ১৩তম ওভারে সব ওলট-পালট করে দেন চিটাগং ভাইকিংসের পেসার তাসকিন আহমেদ। নিজের করা দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ফিরিয়ে দেন ২৬ রান করা শাহরিয়ার নাফিস ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারিকে। তৃতীয় বলেও উইকেট। তবে এই উইকেটটটি ঝুলিতে পুরতে পারেননি ম্যাচসেরা তাসকিন। ৩৮ রান করা বোপারাকে রান আউট করেন তাসকিন। মুহূর্তেই দিক হারিয়ে বসে রংপুর।
জয়ের পথটা আরও অচেনা হয়ে পড়ে রংপুরের লঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরার বিদায়ে। দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয় মাশরাফিকে। তাকে সঙ্গ দিতে উইকেটে যান স্পিনার সোহাগ গাজী। কিন্তু গাজীকে সাথে নিয়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যেতে পারেননি মাশরাফি। ১৩ রান করে থামেন রংপুর অধিনায়ক। শেষের দিকে চার-ছক্কা মেরে ম্যাচটি জমিয়েই তুলেছিলেন লাসিথ মালিঙ্গা। যদিও শেষপর্যন্ত ১১ রানের আক্ষেপ থেকেই যায় রংপুরের।
এরআগে ব্যাট করতে নামা চিটাগং ভাইকিংস আগের ম্যাচের পুনরাবৃত্তিই করেছে। দারুণ শুরু পাওয়ার পরও ইনিংস বড় করতে পারেনি মিসবাহ উল হকের দল। আগের ম্যাচেও দারুণ শুরু করেছিলেন সৌম্য সরকার ও নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যান লুক রনচি। কিন্তু শেষপর্যন্ত ১৪৩ রানেই থামে চিটাগং। রংপুরের বিপক্ষেও একই পথে হেঁটেছে তারা। ৯ ওভারে ১০০ পেরনো দলই কি না শেষ পর্যন্ত স্কোরকার্ডে ১৬৬ রান জমা করে!
শেষের ১১ ওভারে মাত্র ৬৬ রান করেছে চিটাগং। উইকেট ছিল না তেমনও নয়। ছয় উইকেট হাতে রেখেই ইনিংস শেষ করেছে তারা। কিন্তু রানচাকা ঘোরাতে পারেনি কেউই। অথচ কি দাপুটে শুরুটাই না করেছিলেন লুক রনচি! বিপিএলের দ্বিতীয় দ্রুততম (১৯ বলে) হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা রনচি রংপুরের বোলারদের ওপর দিয়ে টর্নেডো বইয়ে দেন। ৪.৪ ওভারেই দলের স্কোরকার্ডে ৫৯ রান যোগ করেন রনচি।
অপর প্রান্তে সৌম্য থাকলেও মূলত ব্যাট চালিয়েছেন রনচিই। প্রথম ৫৯ রানের মধ্যে সৌম্য মাত্র ৭ রান করেন। ৭ রান করেই সাজঘরে ফেরেন সৌম্য। কিন্তু তান্ডব চালিয়েই যেতে থাকেন রনচি। তার ব্যাটেই ৮.৫ ওভারে স্কোরকার্ডে ৯৯ রান পায় চিটাগং। এমন সময় থামতে হয় তাকে। তবে ফেরার আগে ৩৫ বলে সাত চার ও সাত ছয়ে ৭৮ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন রনচি। এরপর অধিনায়ক বিসবাহ (৩১*) ও এনামুল হক বিজয়ের (১৭*) ধীর স্থির ব্যাটিংয়ে চার উইকেটে ১৬৬ রান তোলে চিটাগং ভাইকিংস।