কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

কীভাবে এই প্রক্রিয়া কাজ করবে তা দেখাচ্ছেন গবেষকেরা। ছবি: সংগৃহীত

একটি স্পর্শেই ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে জাদুকরি এই ন্যানোচিপ (দেখুন ভিডিওতে)

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০১৭, ১৫:৩৪
আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০১৭, ১৫:৩৪

(প্রিয়.কম) গবেষকেরা এমন জাদুকরি এক উদ্ভাবন করেছেন যাতে একজন রোগীর শরীর নিজেই নতুন কোষ উৎপন্ন করে ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে। এর জন্য শুধুমাত্র দরকার হয় ত্বকে একটি ছোঁয়া। নতুন নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি তৈরি করতে দারুণ কাজে আসতে পারে তা।

ওহাইয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির এই উদ্ভাবনের নাম দেওয়া হয়েছে টিস্যু ন্যানোট্রান্সফেকশন (TNT)। এতে ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করে তৈরি একটি চিপ রোগীর ত্বকে বসানো হয়। একে একটি ছোট পরিমাণের ইলেকট্রিক্যাল চার্জ দেওয়া হলে সে এক ধরণের দেহকোষকে আরেক ধরণের কোষে পাল্টে দিতে পারে। এই কাজটির জন্য শরীর কাটাছেঁড়া করার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। নেচার ন্যানোটেকনোলজি জার্নালে প্রকাশিত হয় তাদের এই গবেষণার তথ্য।

“এই নতুন ন্যানোচিপ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করা জেতে পারে,” জানান গবেষণার একজন সহ-লেখক চন্দন সেন। “আমরা দেখেছি যে ত্বক খুবই উর্বর একটি জায়গা যেখানে যে কোনো অঙ্গের অংশ জন্মানো যেতে পারে।”

এখনো এই ডিভাইস মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হয়নি। কিন্তু ইঁদুর এবং শুকরের ওপর পরীক্ষা করে সফল হওয়া গেছে। একটি ইঁদুরের পায়ে ক্ষত ছিল। এই চিপ ব্যবহারের এক সপ্তাহের মাঝে তার পায়ে সক্রিয় রক্তনালী তৈরি হয় এবং দ্বিতীয় সপ্তাহের মাঝে তার পা সেরে ওঠে। স্ট্রোকে আক্রান্ত একটি ইঁদুরের মস্তিষ্ককে সারিয়ে তুলতেও তা ভালো কাজ করে।

কীভাবে কাজ করে এই চিপ?

“এই চিপে বিশেষ একটি জেনেটিক কোড থাকে ডিএনএ অথবা আরএনএ রূপে, যা কোষে প্রয়োগ করা হলে তাদের আগের রূপ পাল্টে দেয় এবং এমন অবস্থায় আনে যা ওই ক্ষত মেরামত করার জন্য কাজ করে,” জানায় মেডিক্যাল নিউজ টুডে

গবেষকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকরী এই প্রযুক্তি। এই চিপ ত্বক লাগিয়ে রাখার কোনো দরকার হবে না রোগীর। বরং কয়েক সেকেন্ড তা ত্বক রেখে কোষের “রিপরোগ্রামিং” করার পর আবার চিপটি সরিয়ে ফেলা যাবে। গবেষকেরা বলেন এত ভালো সাফল্য পেয়ে তারা খুবই অবাক।

এমন একটি প্রযুক্তি ব্যবহারের অনেক বড় সুযোগ আছে ভবিষ্যতে। তা ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু তো সারিয়ে তুলতে পারবেই, এমনকি বার্ধক্যে প্রায় অচল হয়ে আসা অঙ্গের কার্যকারিতাও ফিরিয়ে আনতে পারবে। বিভিন্ন অঙ্গ, রক্তনালী, স্নায়ুকোষের কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনা যাবে এভাবে। এটা মানুষের মস্তিষ্কের কোষও জন্মাতে পারে ত্বকের নিচে, আর এই কোষ পরে সেই মানুষের মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপন করে প্রশমিত করা যাবে আলঝেইমার্স এবং পারকিনসন্স ডিজিজ। ত্বক ছাড়া অন্যান্য অঙ্গেও ব্যবহার করা যেতে পারে এই চিপ।

“এই প্রযুক্তির সাহায্যে ত্বকের কোষকে অন্য যে কোনো অংশের কোষে রূপান্তরিত করা যাবে একটিমাত্র স্পর্শে,” বলেন ডঃ সেন। “কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই প্রক্রিয়াটিতে দরকার হয় এক সেকেন্ডেরও কম সময়, এরপর আর কিছু করার দরকার নেই।”

দেখে নিতে পারেন TNT প্রযুক্তি নিয়ে ওহাইয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির এই ভিডিওটি-

সুত্র: IFLScience,

Medical News Today

সম্পাদনা : রুমানা বৈশাখী