কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পর্ক। ছবি: সংগৃহীত

স্ত্রীকে তেমন ভালোবাসুন যেমন ভালোবেসেছেন রাসূল (সা.)

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:১১
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:১১

(প্রিয়.কম) ইসলাম স্বামী-স্ত্রীর মাঝের সম্পর্ককে উদার ও প্রেমময় সম্পর্ক হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এই সম্পর্কটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পর্ক। এই বিষয়ে আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, আর তার নির্দেশনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই জাতি থেকে সৃষ্টি করেছেন স্ত্রীগণকে, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করো এবং তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। অবশ্যই এর মধ্যে বহু নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা- ভাবনা করে। (সুরা রূম, আয়াত-২১)

নবী মুহাম্মদ (সা.) মুসলমানদের জন্য অন্যতম আদর্শ। তার জীবনের প্রতিটি কাজই মুসলমানের জন্য অনুকরণীয়। যখন কেউ নবীর (সা.) স্ত্রীরদের আচরণ সম্পর্কে পড়বে তখন সে অবশ্যই মুগ্ধ হবেন। কেননা নবী (সা.) তার স্ত্রীদের সাথে কোমল ও ভালোবাসার আচরণ করতেন। নিন্মে এমন কিছু দিক-নির্দেশনা তুলে ধরা হলো-

১. হজরত আবু হুরাইরা (রা.) তার বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি তারা যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে সর্বোত্তম। (তিরমিজি)

২. ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সে যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম এবং আমি আমার স্ত্রীদের কাছে সর্বোত্তম। (ইবনে মাজাহ)

৩. হজরত আবু হুরাইরা (রা.) তার বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যে নবী (সা.) বলেছেন, একটি মুমিন কখনো মুমিন নারীকে (তার স্ত্রীকে) অপছন্দ করতে পারে না। তার একটি গুণ অপছন্দ হলে অন্যটি অবশ্যই পছন্দ হবে। (মুসলিম)

৪. আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আল আস (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, সব থেকে আনন্দিত ব্যক্তি সে যার একটি উত্তম স্ত্রী আছে। (মুসলিম)

৫. আনাস (রা.) হাদিসে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, হে আল্লাহর রসূল, আপনার কাছে কে বেশি প্রিয়? তিনি উত্তরে বললেন, আয়েশা। তাকে আরো জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, এবং পুরুষদের মধ্যে?  তিনি বলেন, তার বাবা। (ইবনে মাজাহ)

৬. আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) তার ঋতুস্রাবের সময় তাকে একটি পানি পান করার জন্যে পাত্র দিতেন। আয়েশা যেখানে তার ঠোঁট লাগিয়ে পানি পান করতেন, নবীও সেই একই জায়গা থেকে পানি পান করতেন। (নাসায়ি শরিফ)

৭. আনাস বর্ণিত যে নবী ছিলেন একজন পারস্যের প্রতিবেশী যিনি স্যুপ রান্নায় ভালো ছিলেন। একদিন তিনি কিছু স্যুপ প্রস্তুত করলেন এবং নবীকে দাওয়াত করলেন। সেসময় সেই কক্ষে হজরত আয়েশা (রা.) ও উপস্থিত ছিলেন। নবী (সা.)  প্রতিবেশীকে বললেন তাকে নিমন্ত্রণে অন্তর্ভুক্ত করতে কিন্তু সে তাতে অসম্মতি জানালো। সুতরাং, নবী এই নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলে। সেই প্রতিবেশী আবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামেকে বিশেষভাবে নিমন্ত্রণ করলেও নবী আবারও নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন। তৃতীয় প্রচেষ্টায়, নবী এবং তার স্ত্রী উভয়কে নিমন্ত্রিত করা হলো তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন এবং তারা সেই প্রতিবেশীর বাসায় নিমন্ত্রণ রক্ষা করেন। (মুসলিম)

৮. হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন যে, একবার নবী (সা.) এবং আয়েশা (রা.) একটি ভ্রমণে যান। তখন আয়েশা (রা.) শরীরের গঠন ভালো ছিল এবং তিনি মোটা ছেলেন না। সেসময়ে নবী (সা.) ও আয়েশা (সা.) একটি দৌড় প্রতিযোগিতা করেন এবং আয়েশা (রা.) জিতে যান। এর পরে আয়েশা (রা.) এর শারীরিক গঠন যখন মোটা হয়ে যায় তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেন, ‘এসো আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা করি’। কিন্তু আয়েশা (রা.) দৌড় প্রতিযোগিতা করতে রাজি হননি। তাকে নবী (সা.) জোর করেন এবং অবশেষে তারা দৌড় প্রতিযোগিতা করেন এবং আয়েশা (রা) হেরে যান। তখন নবী (সা.) বলেন, এখন আমরা দুই জনই সমান সমান।’ (বুখারি)

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ

প্রিয় ইসলাম/আশরাফ