কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

অধিবাস কীর্তন করতে করতে কাঁদছেন গায়েন। আবেগাপ্লুত ভক্তরা প্রণাম করছেন, জড়িয়ে ধরছেন একে-অপরকে। ছবি- লেখক।

লোকনাথ বাবার মন্দিরে রাখের উপবাস এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলন উৎসব

খন্দকার মহিউদ্দিন
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১১:১২
আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১১:১২

(প্রিয়.কম) "রনে বনে জলে জঙ্গলে যখন বিপদে পড়িবে, আমাকে স্মরন করিও আমিই রক্ষা করিব" ... শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী এভাবেই তার হাজারো ভক্তের ওপর ছায়ার মতো বিচরণ করছেন, রক্ষা করছেন তাদের বিপদে, আপদে। শুধু নিজের ভালোবাসা, আশির্বাদ দিয়েই তিনি ভক্তের মনের জোর বাড়াননি তাকে সাবলম্বি হতেও উৎসাহ দিয়েছেন। বলেছেন- "যে ব্যক্তি সকলের সুহৃদ(বন্ধু), আর যিনি কায়মনোবাক্যে সকলের কল্যাণ সাধন করেন, তিনিই যথার্থ জ্ঞানী।" তার দেখানো পথে নিজের সুখ খুঁজে নেন উপমহাদেশের অসংখ্য বিশ্বাসীগণ। তিনি নিজেকে প্রভু বলেন নি, বলেছেন "আমিও তোদের মতো খাই-দাই, মল-মূত্র ত্যাগ করি। আমাকেও তোদের  মতোই একজন ভেবে নিস। আমাকে তোরা শরীর ভেবে ভেবেই সব মাটি করলি। আমি যে কে, তা আর কাকে বোঝাবো, সবাই তো ছোট ছোট চাওয়া নিয়েই ভুলে রয়েছে আমার প্রকৃত আমিকে।" মানব ধর্মই ছিল তার ব্রত। 

শ্রদ্ধেয় লোকনাথ একজন হিন্দু ধর্মগুরু। লোকনাথ বাবা নামে তিনি জনপ্রিয়। আফগানিস্তান, মক্কা, মদিনা, পারস্য, গ্রীস, তুরস্ক, ইতালি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ডসহ বহু জায়গা ঘুরে ঘুরে জ্ঞান অর্জন করেছেন তিনি। তার দীক্ষাগুরু ছিলেন ভগবান গাঙ্গুলী। জ্ঞানকেই তিনি বলেছেন চোখ, জ্ঞানের চেয়ে বড় কিছু তার কাছে ছিল না। সে জ্ঞান তিনি বিলিয়ে দিয়েছেন ভক্তদের মাঝে, বিনিময়ে পেয়েছেন শ্রদ্ধা, ভালোবাসা। এই সিদ্ধ পুরুষের সমাধি অবস্থিত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এর বারদী অঞ্চলে। যা শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম নামে খ্যাত।

শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমের ‘কার্তিক ব্রত’ বা কার্তিক মাসব্যাপী ‘রাখের উপবাস’ শেষ হলো সম্প্রতি। দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমে এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন লোকনাথ মন্দিরে ভক্তরা একযোগে পুরো কার্তিক মাসের প্রতিটি শনিবার ও মঙ্গলবার এই উপবাস উৎসবের রূপে পালন করে থাকেন। এই উপবাস উৎসবের ব্যাপ্তি বা আনুষ্ঠানিকতা বেশ জমকালো। যা দেশ বিদেশের বহু পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

প্রিয়.কম থেকে আমরা গিয়েছিলাম এবং সারারাত অবস্থান করেছিলাম এই উৎসবের নানা পর্ব ও আনুষ্ঠানিকতা সরাসরি উপভোগ করতে। আমরা গিয়েছিলাম শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী কার্তিক “প্রতিষ্ঠিত সোনারগাঁ, বারদী, শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমে।“ যা “বারদী আশ্রম” নামে সমধিক পরিচিত। আমাদের পৌঁছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়েছিল। আর ঠিক সেই সময়ই শুরু হয় প্রদীপ প্রজ্বলন আরতি অনুষ্ঠান।

লোকনাথমন্দিরের সামনে মোম এবং আগরবাতি জ্বালিয়ে ভক্তি নিবেদন করছেন একজন ভক্ত। ছবি- লেখক

প্রদীপ প্রজ্বলন: 

বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়। শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ভক্তরা কলাপাতা, ফুল, ধান–দূর্বা, মাটির প্রদীপ, ঘি, ডাব, দুধসহ আরও অনেক ধরণের নৈবেদ্য নিয়ে আসেন এখানে। তারা চলে আসেন সন্ধ্যার আগেই। তাদের এই সকল নৈবেদ্য শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর মূর্তির সামনে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দুধ ঢালা ও আগরবাতি জ্বালানোর মধ্যদিয়ে উৎসবের সূচনা করা হয়। তারপর ভক্তরা সারিবদ্ধভাবে উন্মুক্ত ময়দানের সামনে কলাপাতার উপর রাখা ঘিয়ের প্রদীপ নিয়ে বসেন। তারপর বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের নামে প্রার্থনা করেন এবং সেই উদ্দেশ্যে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন।

লোকনাথ
আলোয় আলোয় সেজে উঠছে আশ্রমপ্রাঙ্গন। ছবি- লেখক।

এখানে একটি বিশেষ নিয়ম হলো যে যত জন আত্মীয়–স্বজনদের বিপদ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করবেন তাকে ঠিক ততগুলো প্রদীপ প্রজ্বলন করবেন। তাই এখানে উপস্থিত ভক্তের তুলনায় প্রদীপের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। সারিবদ্ধভাবে জ্বালানো এই হাজার হাজার প্রদীপ কার্তিকের হালকা হিম আবহাওয়ার সাথে মিশে এক অনিন্দ্য সুন্দর অপার্থিব আবহ তৈরি করে। যে মুহূর্তগুলো নিজ নিজ ক্যামেরায় ধারণ করতে দেশ বিদেশ থেকে বহু সাংবাদিক তথা ফটোগ্রাফারদের এখানে ছুটে আসতে দেখা যায়। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। জাপান থেকে কয়েকজন আর জার্মানি থেকে দুজন ফটোগ্রাফার এখানে ঢাকা এয়ারপোর্ট নেমে সরাসরি বারদী শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রমে আসেন বলে জানান অফিস কক্ষের দায়িত্বে থাকা জনাব কাঞ্চন। তিনি আমাদের বলেন এই আশ্রমের বাইরেও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ভক্তরা একই সময়ে এই প্রদীপ  প্রজ্বলন করলেও এই রীতিটি বাবা লোকনাথ নিজে প্রচলন করেন এই বারদী আশ্রম থেকে। তাই, এখানেই এই উৎসবের প্রকৃত প্রাণ খুঁজে পাওয়া যায়। 

লোকনাথ
ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বলন। ছবি- লেখক

প্রদীপ প্রজ্বলনের এই উৎসবকে ‘ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বলন’ নামে ডাকা হয়। কারণ, এই প্রদীপে সাধারণ ভাবে যে তেলের প্রদীপ জ্বালানো হয় তার পরিবর্তে ঘি ব্যবহার করা হয়। বাবা লোকনাথ এই প্রথার প্রচলন করেন কলেরা আর বসন্তের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য প্রার্থণা স্বরূপ। তখন এই প্রদীপ প্রজ্বলনের পর পানিতে ভাসিয়ে ভাসিয়ে দেয়া হতো। এখন আর তা করা হয়না। এখন প্রদীপগুলো জ্বালানোর পর আবার নিভিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হয়।  

প্রসাদ: 

প্রদীপ প্রজ্বলন বা আরতি সব মিলিয়ে খুব কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। মূলত ১৭ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে আশ্রমের পক্ষ থেকে কিছু প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়। ভক্তদের নিয়ে আসা নৈবেদ্য আর সাথে আরো কিছু খাবার যোগ করে এই প্রসাদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কার্তিকের এই  ব্রতকে কেন্দ্র করে নানান জায়গা থেকে আসা ভক্তরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে খিচুড়ি বা ফল প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করে থাকেন। এই পুরো প্রসাদ বিতরনের কাজটি করা হয়ে হয়ে থাকে আরতির পরের সময়টিতে। একবার সন্ধ্যায় আবার সকালে স্নান আর আরতির পরে। 

লোকনাথ
তৈরি হচ্ছে প্রসাদ। ছবি- লেখক

এছাড়াও, আরতি শেষে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে নিজ দায়িত্বে আলাদা আলাদা চুলা বানিয়ে এক উঠানে সিদ্ধ ভাত রান্না করে নেন বেশিরভাগ ভক্ত। রান্নার পর দুধ, আর অন্যান্য ফলের সাথে তারা এই ভোগ বা প্রসাদ গ্রহণ করেন। এই প্রসাদ বিতরণ আর ভোগ গ্রহণের পালা চলে রাত প্রায় ৯:৩০ অবধি। আর এই প্রসাদপর্ব চলতে চলতেই নাট মন্দিরের আয়োজন শুরু হয়ে যায়।

অধিবাস কীর্তন:

ভক্তদের প্রসাদপর্ব চলতে চলতেই নাট মন্দিরের আয়োজন শুরু হয়ে যায় যাকে বলে অধিবাস কীর্তন। বিশেষ ধরনের এই কীর্তন রাত আনুমানিক ৯:৩০ থেকে শুরু করে বিরতিহীনভাবে চলতে থাকে একেবারে মধ্যরাত অবধি। নাট মন্দির নামক বিশাল একটি বাধাঁনো বেদির ঠিক মাঝখানে করা চারদিক খোলা মঞ্চে চলে এই অনুষ্ঠান। চারিদিক থেকে ঘিরে থাকে ভক্তরা আর কীর্তনকারী দলের কেউ একজন চারদিকের দর্শকদের একেবারে মোহিত করে ফেলে কীর্তনের মাধ্যমে। মূলত শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর জীবনের নানা অধ্যায় আর শ্রী কৃষ্ণের নানার লোকগাথাকে কেন্দ্র করে একের পর এক পালা গানের ন্যায় বাঁশি, করতাল, খোল, হারমোনিয়াম এর সাথে সঙ্গত করে চলতে থেকে এই কীর্তন। আর এর সাথে ২ বা ৩ জন থাকেন যারা মূল কাহিনীকারের সাথে বিভিন্ন ধরনের সম্মতি আর অস্মমতি প্রকাশক ধামা ধরার কাজটি করতে থাকেন। এই কীর্তনের সুর, তাল আর লয়ে শিল্পী আর শ্রোতা সকলেই একটি গভীর ভক্তি আর শ্রদ্ধার পরিবেশ তৈরি করে যা ভাষায় প্রকাশ কর যায় না। 

রাত যখন প্রায় ২ টা আমরা অবাক হয়ে লক্ষ করলাম কীর্তন দলের সকলে কাহিনীর গভীরে এতটাই মগ্ন যে তারা অঝোরে কেঁদে চলেছেন। গানের বিভিন্ন সময়ে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ভক্তরা উঠে এসে গানের দলের লোকদের প্রণাম করেন এমনকি জড়িয়েও ধরেন। কীর্তনের দলের লোকেরাও তাদের প্রণাম করেন এবং জড়িয়ে ধরেন। এ এক এমন পরিবেশ যেখানে কোনো ভেদাভেদ নেই। সকলেই সমান শ্রদ্ধা আর ভালবাসার গভীর মিলনে আবদ্ধ। ভক্তদের দেখা যায় একে অপরকে প্রণাম করছেন। এমনকি যারা বয়সে ছোট তাদেরও প্রণাম করছেন। আর এভাবেই এগিয়ে চলে অধিবাস কীর্তনের এক একটি পর্ব। অধিবাস কীর্তন শেষ হয় প্রায় ভোরে।

লোকনাথশিবের আশির্বাদপুষ্ট পুকুরে স্নান করবেন ভক্তরা। ছবি- লেখক

স্নান ও আরতি: 

আমরা ভাবলাম কীর্তন যেহেতু শেষ এবার নিশ্চয়ই সবাই বাকি রাতটুকু ঘুমিয়ে কাটাবে। কিন্তু, আমরা আবারো অবাক হয়ে দেখলাম সবার মধ্যে যেনো আবারও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলো তারা। সবাই এদিকে ওদিকে ছোটাছুটি শুরু করলো। কি নিয়ে তারা ব্যস্ত জানতে আমরাও এদিক ওদিক ঘুরে দেখা শুরু করলাম। দেখলাম তারা সবাই পুকুরে নেমে স্নান করছে আর দলে দলে বালতি, বোতলসহ বিভিন্ন পাত্রে পানি নিয়ে উলুধ্বনি দিতে দিতে উঠে আসছে। তারা লাইন ধরে এই পানি নিয়ে পুরো মন্দিরের চারপাশ ধুয়ে দিচ্ছে। সকলের ভেজা অবস্থায় পানি নিয়ে মন্দির ধুয়ে তারপর আগরবাতি আর মোমবাতি জ্বালিয়ে আরতি শেষ করতে করতে সকালের আলো ফুটে উঠল। তারপর শুরু হলো আবারো বিভিন্ন মিষ্টি আর ফল দিয়ে প্যারাভোগ প্রদান। 

লোকনাথস্নানের পর চলছে মন্দির ধুয়ে পরিষ্কার করা, বাবাকে প্রণাম করছেন অনেকে, জ্বালাচ্ছেন মোমবাতি। ছনি- লেখক।

এভাবেই দিনের পুরো সময়টা ভক্তরা নানান ধরনের  ভক্তি, আরতি আর পূজার মধ্য দিয়ে সারা দিন রাত অতিবাহিত করেন এখানে। এমন ভক্তি আর ভালবাসার পরিবেশ ছেড়ে বের হতে ইচ্ছা না করলেও আমাদেরকে বের হতে হলো খুব সকালে। এখানে আশ্রমের সামনে মেলা চলছিল। মেলা চলতে থাকে সারা রাত। ভোর বেলায় এখানকার অসাধরণ চায়ের স্বাদ নিয়ে আমরা আবারো নাগরিক জীবনের ব্যস্ততার মাঝে ডুবে যেতে রওনা হলাম। জ্যৈষ্ঠ মাসে এখানে আরো বড় আয়োজন হয়। সেই সময়ে এখানে একটানা ২ দিন ব্যাপী থাকে নানান পূজা, আরতি আরো নানান আয়োজন চলে। মেলা চলে বিরতিহীন ভাবে সাত দিন। এটি লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে করা হয়। কিন্তু লোকনাথ ব্রহ্মচারী বলেন: “এই দেহপাতের  সঙ্গে সব শেষ হয়ে যাবে মনে করিস না। আমি যেমনটি ছিলাম, যেমন আছি, তেমনি চিরকাল থাকব।“ তাই এখানে তাকে উদ্দেশ্য করে শোক পালন করা হয় না বরং নানান পন্থায় উৎসবের আমেজে প্রকাশ করা হয় ভক্তি আর শ্রদ্ধা। 


গুগল ম্যাপে দেখে নিন শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমের অবস্থান।

চাইলে যে কোন দিন বেরিয়ে আসতে পারেন শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম বারদী, সোনারগাঁ থেকে। আর এই কার্তিক বা জ্যৈষ্ঠ উৎসবে তো অবশ্যই যাবেন একটি অনন্য সাধারণ রাত কাটাতে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম বারদী, সোনারগাঁয়ে।

 

সম্পাদনাঃ ড. জিনিয়া রহমান 

প্রিয় ট্রাভেল সম্পর্কে আমাদের লেখা পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে। যে কোনো তথ্য জানতে মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। ভ্রমণ বিষয়ক আপনার যেকোনো লেখা পাঠাতে ক্লিক করুন এই লিংকে - https://www.priyo.com/post।