ছবি সংগৃহীত
প্রিয় গন্তব্য: লালমনিরহাটের কাকিনা জমিদার বাড়ী
প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০১৭, ১০:২৮
আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭, ১০:২৮
আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭, ১০:২৮
ধ্বংসপ্রায় কাকিনা জমিদারবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
(প্রিয়.কম): রংপুর বিভাগের অন্তর্গত লালমনিরহাট জেলাটি কিছুটা লোকচক্ষুর অন্তরালের একটি জায়গা। এই জেলাটি নিয়ে বিশেষ কোন আলোচনা তৈরি হয় না সংবাদমাধ্যমে, তাই হয়ত এই ব্যাপারটি ঘটেছে। কিন্তু এই ছোট্ট জেলাটিতেও আছে বেশ কিছু আকর্ষণীয় ভ্রমণ স্থান। কাকিনার জমিদার বাড়ি তার মাঝে একটা।
কোথায়: রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট জেলা সদর হতে ৩০ কিমি দূরত্বে কালীগঞ্জ উপজেলার অধীনে কাকিনা ইউনিয়নের কাকিনা মৌজায় এ জমিদার বাড়িটি অবস্থিত।
কীভাবে যাবেন : সড়ক পথে ঢাকা থেকে ঢাকা-লালমনিরহাট জাতীয় মহাসড়ক পথে আগে যেতে হবে লালমনিরহাট। এরপরে লালমনিরহাট হতে বুড়িমারি (পাটগ্রাম উপজেলা) স্থল বন্দর-গামী রাস্তায় মহাসড়ক পথে (লালমনরিহাট থেকে প্রায় ২১কিঃমিঃ) কাকিনা বাজার বাস-স্ট্যান্ড। বাস-স্ট্যান্ড হতে ২০০ গজ পশ্চিমে জমিদার বাড়ি অবস্থিত।
রংপুর থেকে লালমনিরহাট হয়ে বুড়িমারি স্থল বন্দরের সড়কে জমিদার বাড়িটি ৬৬ কি:মি দূরে অবস্থিত।
রেল পথে যেতে হলে লালমনিরহাট হতে বুড়িমারি রেলপথে কাকিনা রেল স্টেশনে নেমে প্রায় ২ কি:মি: দক্ষিণ দিকে জমিদার বাড়ি অবস্থিত।
কাকিনা জমিদার বাড়ি। ছবি: মেহেদী হাসান।
ইতিহাস: ইতিহাস বিশ্লেষণে জানা যায়, মহারাজা মোদ নারায়ণের সময় কাকিনা ছিলেন কোচবিহার রাজ্যের অধীন একটি চাকলা। সেই সময়ে কাকিনার চাকলাদার ছিলেন ইন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী।
১৬৮৭ সালে ঘোড়াঘাটের ফৌজদার এবাদত খাঁ মহারাজা মোদ নারায়ণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে কোচ রাজ্যে অভিযান চালান। সেই সময় রঘুরামের দুই পুত্র রাঘবেন্দ্র নারায়ণ ও রামনারায়ণ ফৌজদারের পক্ষ অবলম্বন করেন। মোগলদের এ অভিযানে কোচ বাহিনী পরাজিত হলে ইন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তীকে কাকিনার চাকলাদার পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় এবং রাঘবেন্দ্র নারায়ণকে পরগনা বাষট্রি ও রাজনারায়ণকে পরগনা কাকিনার চৌধুরী নিযুক্ত করা হয়। এভাবেই ইন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তীর চাকলাদারী শেষ হয়ে কাকিনায় রামনারায়ণের মাধ্যমে নতুন জমিদারি বংশের সূচনা হয়।
রাম নারায়ণ চৌধুরীর পিতা রঘুরাম সম্পর্কে যতদূর জানা যায়, চাকলাদার ইন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তীর সময় তিনি কাকিনা চাকলার একজন সাধারণ কর্মচারী ছিলেন। তবে রঘুরামের পিতা রমানাথ ১৬৩৪ সালে কোচবিহার মহারাজা প্রাণ নারায়ণের সময় (১৬৩২-৬৫ সালে) রাজ দপ্তরে মজুদদারের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। ১৬৮৭ সালে রাম নারায়ণ কাকিনা পরগনার চৌধুরী নিযুক্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে কাকিনায় যে জমিদারির সূচনা ঘটেছিল, জমিদার মহেন্দ্র-রঞ্জনের সময় তাঁর অপরিণামদর্শী ব্যয় ও বিলাসিতার কারণে তা ধ্বংসের মুখে পড়ে।
মহাজনদের বকেয়া ও সরকারি রাজস্ব পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ১৯২৫ সালে তাঁর জমিদারী নিলাম হয়ে যায় এবং এর পরিচালনার ভার কোর্ট অব ওয়ার্ডস- এর অধীন চলে যায়। অতঃপর তিনি প্রায় নিঃস্ব অবস্থায় সপরিবারে কাকিনা ত্যাগ করে কার্শিয়ং (দার্জিলিং)- এ চলে যান। ১৯৩৯ সালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু ঘটে।
বর্তমানে এই বিশাল জমিদার বাড়ি যত্ন এবং নিয়মিত দেখাশোনার অভাবে ধ্বংস-প্রায় অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতে হয়ত আর বেশি দিন বাকি নেই।
সম্পাদনা: ড. জিনিয়া রহমান।
আপনাদের মতামত জানাতে ই-মেইল করতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়।
৫৯ মিনিট আগে
ডেইলি স্টার
| ভারত
১ ঘণ্টা, ৩ মিনিট আগে
১ ঘণ্টা, ৮ মিনিট আগে
১ ঘণ্টা, ৫০ মিনিট আগে
১ ঘণ্টা, ৫২ মিনিট আগে