কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

কড়াইল বস্তির বর্তমান অবস্থা । ছবি: প্রিয়.কম/ রিপন

কড়াইল বস্তি তুলে দিয়ে হবে তথ্যপ্রযুক্তি গ্রাম

রাকিবুল হাসান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:১২
আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:১২

(প্রিয়.কম) কড়াইল বস্তি। রাজধানীর মহাখালী ও গুলশানের মধ্যবর্তী এলাকার এ বস্তিটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড়। এটি উঠিয়ে দিয়ে সেখানে গড়ে তোলা হবে ‘তথ্যপ্রযুক্তি গ্রাম’। কাগজেপত্রে এর নাম হবে ‘মহাখালী আইটি ভিলেজ’। 

সম্প্রতি এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের খসড়া প্রতিবেদন (ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট) তৈরি করা হয়েছে। কাজটি করেছে ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন’ নামের একটি কোম্পানি।

কোম্পানিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মহাখালী লাল সরাই-কড়াইল মৌজার ১৭০ দশমিক ৪ একর জমির মালিক বিটিসিএল। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তর (পিডব্লিউডি) বরাদ্দ পায় ৯০ একর জমি। সেই সময়ে ক্ষমতাসীন সরকার এই জায়গায় থাকার জন্য বিটিসিএলের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জায়গা করে দেয়। এ থেকে কড়াইল বস্তিতে রূপান্তরিত হয়। যা পরবর্তীতে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় বস্তিতে রূপ পায়।

মহাখালী আইটি ভিলেজের নকশা

১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে ৯০ একর  জমির মধ্যে ৪৭ একর বরাদ্দ করা হয় মিনিস্ট্রি অব সাইন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির নামে। পরবর্তী সময়ে সেখানে আইটি ভিলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা নেয় সরকার। সেই পরিকল্পনার অংশ অনুযায়ী ২০১২ সালে সেখানে জরিপ চালানো হয়। জরিপে দেখা যায়, বরাদ্দকৃত ৪৭ একর জমির মধ্যে ৩ একর জমি গুলশান লেকে পড়েছে। ফলে স্থাপনা তৈরির জন্য থাকে ৪৪ একর। এই জমিতে আইটি ভিলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।

জরিপের ফলাফলে বস্তিবাসী পুনর্বাসনের জন্য বেশ কয়েকটি অভিমত দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতিপূরণ, পিপিপি বিনিয়োগকারী দ্বারা পুনর্বাসন, সংশ্লিষ্ট ডেভেলপার কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে পুনর্বাসনসহ অন্যান্যভাবে পুনর্বাসন করা।

হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মহাখালী আইটি ভিলেজে থাকবে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সার্ভিস, বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং, আইসিটি ট্রেনিং, হার্ডওয়্যার সেলস অ্যান্ড সার্ভিস সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রকল্প এলাকায় স্থাপনা নির্মাণের জন্য অবকাঠামো তৈরি করে দেবে হাইটেকপার্ক কর্তৃপক্ষ। সেখানে কাজ করবে সংশ্লিষ্ট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাহাখালী আইটি ভিলেজ সংক্রান্ত প্লানিংয়ের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তবে বস্তিতে থাকা লোকজনের পুনর্বাসন সংক্রান্ত জটিলতা এবং একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন না হওয়ায় প্রকল্পের অগ্রগতি কার্যত ধীরগতির।

হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পিপিপি মডেলে মহাখালী আইটি ভিলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে ৩টি রেসপন্সিভ প্রতিষ্ঠান বরাবর আরএফপি ইস্যু করা হয়। তবে হাইকোর্টে বস্তিবাসীদের পূনর্বাসন সংক্রান্ত মামলার পরিপ্রেক্ষিতে স্থিতাবস্থা থাকায় ডেভেলপার নিয়োগ সংক্রান্ত আপাতত স্থগিত রয়েছে। মামলা নিস্পত্তির আইনানুগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, চলতি বছরের অক্টোবরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মহাখালী আইটি ভিলেজ সংক্রান্ত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির একটি সভা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিপিপি পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।

মহাখালী আইটি ভিলেজের প্রকল্প সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হাসান মারুফ পারভেজ প্রিয়.কমকে বলেন, এই প্রকল্পের জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে বস্তিবাসীর পুনর্বাসনে ব্যয় করা হবে ৭ কোটি টাকা। 

তিনি আরও বলেন, মহাখালী আইটি ভিলেজে একটি প্রশাসনিক ভবনসহ কয়েকটি স্থাপনা তৈরি করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া মহাখালী আইটি ভিলেজ বাস্তবায়ন হলে ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।

তবে মহাখালী আইটি ভিলেজে মোট কতটি প্রতিষ্ঠান স্থান পেতে পারে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি। 

প্রিয় টেক