জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
রোহিঙ্গাদের দেখতে এবার বাংলাদেশে আসছেন জর্ডানের রানি
আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭, ২১:৫৯
(প্রিয়.কম) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রাষ্ট্রীয় মদদে সেনাবাহিনী কর্তৃক নৃশংস অভিযানে গণহত্যা-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ ও জাতিগত নিধনের ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখতে এবার বাংলাদেশে আসছেন জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ। আগামী ২৩ অক্টোবর সোমবার তিনি বাংলাদেশে আসছেন।
২০ অক্টোবর শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি ঢাকা হয়ে সরাসরি কক্সবাজার যাবেন। সেখানে স্বচক্ষে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখবেন, কথা বলেন এবং মিয়ানমার সেনারা তাদের ওপর নির্মম অত্যাচারের কাহিনী শুনবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে বাংলাদেশে এসেছিলেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোয়ান। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সরজমিনে দেখার পর দেশটির ফার্স্ট লেডি জানিয়েছিলেন, মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে তুরস্ক।
প্রাণ বাঁচাতে এভাবে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন রোহিঙ্গারা। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫লাখ ৮২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি। এদিকে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পালিয়ে আসার হার আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও, অক্টোবরের ১৫ তারিখ থেকে তা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে কিছু এরিয়াল ফুটেজ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, উখিয়ার পালংখালির কাছে নাফ নদী পার হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে। এর আগেই জাতিসংঘ জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে জাতিগত নিধনে নেমেছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৯০ ভাগই হলো নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মতে, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিশু রয়েছে শতকরা ৬০ ভাগ। এর মধ্যে ১১শ’র বেশি রোহিঙ্গা শিশু পরিবার ছাড়া অচেনাদের সঙ্গে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। আর এসব শিশুর চোখের সামনেই তাদের বাবা-মাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা, মা-বোনদের ওপর যৌন নির্যাতন ও ঘর-বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ ইতিহাসের নৃশংসতম ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে মিয়ানমারের সেনারা।
অভিযানের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী খুন, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, কুপিয়ে হত্যাসহ বর্বরতার চূড়ান্ত সীমাও অতিক্রম করেছে বলে অভিযোগ নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংস্থাটি বলেছে, ইতোমধ্যে প্রায় ২৮৮টি রোহিঙ্গা অধুষ্যিত গ্রাম। সংস্থাটি আরও জানায়, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে।
প্রিয় সংবাদ/কামরুল