কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রতীকী ছবি।

কেউ আত্মহত্যা করলে তার জানাজা পড়ার বিধান কী?

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ১০:৪৬
আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ১০:৪৬

(প্রিয়.কম) মানুষ বিভিন্ন কারণে হতাশ হয়ে পড়ে। অল্পতেই আশা ছেড়ে দেয়। ধৈর্য ধরতেই চায় না। যার ফলে অনেক সময় মানুষ আত্মহত্যা করে। মনে করে আত্মহত্যা করলেই বুঝি সব শেষ হয়ে যায়। তবে সত্যিই কি আত্মহত্যা করলেই কি সব শেষ হয়ে যায়? যে আত্মহত্যা করে তার জানাজা নামাজ পড়ার বিষয়ে ইসলাম কি বলে?

পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ অবশ্যই শিরককে মাফ করেন না। এছাড়া অন্যান্য যত গোনাহ হোক না কেন তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে আর কাউকে শরীক করেছে সে এক বিরাট মিথ্যা রচনা করেছে এবং কঠিন গোনাহের কাজ করেছে। (সূরা-নিসা, আয়াত-৪৮)

পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন, আর আগামীতে তাদের মধ্য থেকে কেউ মারা গেলে তার জানাজার নামাজও তুমি কখনো পড়বে না। এবং কখনো তার কবরের পাশে দাঁড়াবে না। কারণ তারা আল্লাহ ও তার রসূলকে অস্বীকার করেছে এবং তাদের মৃত্যু হয়েছে ফাসেক অবস্থায়। (সূরা-তাওবা, আয়াত-৮৪)

তাবুক থেকে ফিরে আসার পর বেশি দিন যেতে না যেতেই মুনাফীক নেতা আবুদুল্লাহ ইবনে উবাই মারা গেল। তার ছেলে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ছিলেন নিষ্ঠাবান মুসলমান। তিনি নবী (সা.) এর খেদমতে হাযির হয়ে কাফনে ব্যবহারের জন্য তার কোর্তা চাইলেন। তিনি অত্যন্ত উদার হৃদয়ের পরিচয় দিয়ে কোর্তা দিয়ে দিলেন। তারপর আবদুল্লাহ তাকেই জানাজার নামাজ পড়াবার জন্য অনুরোধ করলেন। তিনি এ জন্যও তৈরী হয়ে গেলেন।

হযরত উমর (রা.) বারবার এ মর্মে আবেদন জানাতে লাগলেন- হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি এমন ব্যক্তির জানাযার নামাজ পড়াবেন যে অমুক অমুক কাজ করেছে? কিন্তু তিনি তার এ সমস্ত কথা শুনে মুচকি হাসতে লাগলেন। তার অন্তরে শত্রু মিত্র সবার প্রতি যে করূনার ধারা প্রবাহিত ছিল তারি কারণে তিনি ইসলামের এ নিকৃষ্টতম শত্রুর মাগফেরাতের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করতেও ইতস্তত করলেন না। শেষে যখন, তিনি জানাজার নামাজ পড়াবার হুকুমে তাকে নামাজ পড়াবার জন্য দাঁড়িয়েই গেলেন, তখন এ আয়াতটি নাযিল হলো। এবং সরাসরি আল্লাহর হুকুমে তাকে জানাজা পড়ানো থেকে বিরত রাখা হলো। কারণ এ সময় মুনাফিকদের ব্যাপারে স্থায়ী নীতি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল- যে, মুসলমানদের সমাজে আর মুনাফিকদেরকে কোনো প্রকারে শেকড় গেড়ে বসার সুযোগ দেয়া যাবে না এবং এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে এ দলটির সাহস বেড়ে যায়।

এ থেকে শরীয়তের এ বিষয়টি স্থিরকৃত হয়েছে যে- ফাসেক, অশ্লীল ও নৈতিকতা বিরোধী কাজকর্মের লিপ্ত ব্যক্তি এবং ফাসেক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তির জানাজার নামাজ মুসলমানদের ইমাম ও নেতৃস্থানীয় লোকদের পড়ানো উচিত নয়। তাতে শরীক হওয়াও উচিত নয়। এ আয়াতগুলো নাযিল হবার পর নবী (সা.) নিয়ম করে নিয়েছিলেন যে কোনো জানাজার শরীক হবার জন্য তাকে ডাকা হলে তিনি প্রথমে মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন। জিজ্ঞেস করতেন, সে কেমন ছিল। যদি জানতে পারতেন সে অসৎ চরিত্রের অধিকারী ছিল, তাহলে তার পরিবারের লোকদের বলে দিতেন, তোমরা যেভাবে চাও একে দাফন করে দিতে পারো।

বিভিন্ন হাদিসে পাওয়া যায়, যারা আত্মহত্যা করতেন নবী (সা.) তাদের জানাজা নামাজ পড়তেন না। একটি হাদিসে এসেছে, জাবের ইবনে সামুরার কাছ থেকে বর্ণিত যে, একজন লোক নিজেকে তীরবিদ্ধ করে মেরে ফেলে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার জন্য আমি তার জানাজার নামাজ পড়াব না। (মুসলিম)

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ

প্রিয় ইসলাম/আশরাফ