কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি সংগৃহীত

দ্য নিউজ মিডিয়া: হোয়াট এভরিওয়ান নিডস টু নো || ব্লগিং ও রেডিও সাংবাদিকতা

মিজানুর রহমান
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৩ মে ২০১৭, ১৫:০৩
আপডেট: ১৩ মে ২০১৭, ১৫:০৩

নিউ ইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক সি. ডব্লিউ. অ্যান্ডারসন, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক লিওনার্ড ডাউনি জুনিয়র এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির জার্নালিজমের অধ্যাপক মাইকেল শাডসন দ্য নিউজ মিডিয়া: হোয়াট এভরিওয়ান নিডস টু নো নামের একটি বই লিখেছেন। ২০১৬ সালে বইটি প্রকাশ করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। বইটিতে লেখকরা সাংবাদিকতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন। সেই বই অনুসারে ধারাবাহিকভাবে অনুলিখন করছেন মিজানুর রহমান

ব্লগিং কি সাংবাদিকতা?

(প্রিয়.কম) ইন্টারনেটে এখন লাখ লাখ ব্লগ সাইট ও ব্লগ পোস্ট পাওয়া যায়। এসব ব্লগে ছোট, বড় বিশ্বাসযোগ্য সংবাদমাধ্যমের নিউজের উদ্বৃতি থাকে। ব্যক্তিগত কিংবা সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে এখন ব্লগ লিখছেন পেশাদার সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। ৯০-এর দশকে ডায়েরির মতো করে যে ব্লগ শুরু হয়েছিল, এখন সেখানে ছবি, ভিডিও, গ্রাফিক্স, সংশ্লিষ্ট খবরের সংযুক্ত লিংক, পাঠকের মন্তব্য করার ঘর সংযুক্ত করা যাচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুক্ত ব্লগারই এখন সন্তান লালন-পালন, খাবার, ফ্যাশন, ভ্রমণ, শিক্ষা, অর্থনীতি, প্রযুক্তি, আইন ইত্যাদি বিষয়ে প্রায় সাংবাদিকতা বা সংবাদের মতো করেই ব্লগ লিখছেন। অনেক ব্লগ পোস্ট সংবাদপত্র কিংবা ডিজিটাল ওয়েবসাইটেও উদ্বৃত হয় অথবা নিজস্ব ব্লগ সাইটে প্রকাশ করা হয়। আগে যেমন ঘটনাক্রম অনুযায়ী অনেকটা ডায়েরির মতো করে ব্লগ পোস্ট করা হতো, আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ওয়েবসাইটের যুগে সেটি এখন পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়ে গেছে। 

একইসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটেও এখন নিজেদের সাংবাদিকদের বেশি বেশি ব্লগ প্রকাশিত হচ্ছে। অনেক সাংবাদিকই পুরো ঘটনাবহুল দিনের বর্ণনা দেন, কিংবা একটি বড় ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে তার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন ব্লগে। বড় কোনো ঘটনা কিংবা ব্রেকিং নিউজের ক্ষেত্রে পুরোপুরি সংবাদটি লেখার আগ পর্যন্ত ব্লগ পোস্টের মতো মিনিট বাই মিনিট আপডেট করে অনেক সংবাদমাধ্যম। 

রেডিও সাংবাদিকতার অবস্থা

কিছু পাবলিক রেডিও এবং হাতেগোনা কিছু সংবাদভিত্তিক রেডিও স্টেশন ছাড়া আমেরিকান রেডিওগুলোতে সংবাদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। 

২০১৪ সালে সারা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যে ১১ হাজার ৩৪৩টি বাণিজ্যিক এফএম এবং এএম ব্যান্ডের রেডিও স্টেশন ছিল তাদের প্রায় সবগুলোতেই হয় কোনো সংবাদ প্রচারিত হতো না, অথবা হলেও তাদের গানের অনুষ্ঠান কিংবা খেলাধুলার অনুষ্ঠানের শুরুতে ২-৫ মিনিটের সংবাদ প্রচার করা হতো। এর বাইরে আরও কয়েকশ রেডিও স্টেশন তাদেরকে সংবাদভিত্তিক রেডিও দাবি করলেও পিউ রিসার্চ সেন্টার বলছে, এসব রেডিওতে সংবাদের চেয়ে টকশো বা বর্ণনাভিত্তিক অনুষ্ঠান বেশি প্রচারিত হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ১৯টি শহরে ২৪ ঘণ্টার সংবাদভিত্তিক রেডিও স্টেশন আছে। কিন্তু এ রেডিওগুলোও আবহাওয়া, ট্রাফিক, খেলাধুলা ও বিজ্ঞাপন প্রচারের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। কিছু কিছু রেডিও স্টেশন আছে যারা স্থানীয় পত্রিকা ও টিভির নিউজ নিজেদের ওয়েবসাইটে পরিবেশন করে। খুব সামান্য কয়েকটি রেডিও স্টেশনেরই অল্প সংখ্যক সাংবাদিক আছে।

তবে অনেক সংবাদভিত্তিক রেডিও বেশ উচ্চাভিলাসী। নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, ফিলাডেলফিয়া, ড্রেট্রয়েট, শিকাগো, সান ফ্রান্সিসকো এবং লস এঞ্জেলেসের মতো বড় বড় শহরের সব প্রায় সব সংবাদভিত্তিক রেডিওই সিবিএস রেডিওর (আমেরিকার বৃহত্তর রেডিও ব্রডকাস্টিং কোম্পানি) অধিভুক্ত। এ রেডিওগুলো একই শহরের স্থানীয় টিভিগুলো থেকেও বেশি সংবাদ প্রচার করে এবং তাদের ওয়েবসাইটেও মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট বেশ সমৃদ্ধ। 

যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি রেডিও সংবাদ প্রচার করে ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (এনপিআর)। দেশজুড়ে এর ৯০০ টিরও বেশি স্টেশন আছে। প্রতি ঘণ্টার বুলেটিন ছাড়াও এনপিআর প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সংবাদ অনুষ্ঠান প্রচার করে। এনপিআরের সকালের বুলেটিনের শ্রোতা সংখ্যা ৭ মিলিয়ন এবং সন্ধ্যার বুলেটিনের শ্রোতা সংখ্যা ৫ মিলিয়ন, যা সারা যুক্তরাষ্ট্রে অন্য যেকোনো রেডিও স্টেশনের সংবাদের শ্রোতা সংখ্যার চেয়ে বেশি। এমনকি এনপিআর শ্রোতা সংখ্যার বিচারে অনেক স্থানীয় টিভি চ্যানেলের চেয়েও এগিয়ে। দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এনপিআরের শতাধিক সাংবাদিক, নিউজ ব্যুরো, এবং সহযোগী স্টেশন থেকে পাওয়া সংবাদই তাদের সংবাদ উৎস। 

স্থানীয় সংবাদ কাভার করার ক্ষেত্রে পাবলিক রেডিওগুলোর ভিন্নতা চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় সংবাদের মধ্যে তারা জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সংস্কৃতি, বিনোদন এবং গানের অনুষ্ঠানের সংবাদ দেয়। খুব অল্প সংখ্যক পাবলিক রেডিও স্টেশনই একাধিক বিষয়ে খবর দেয়, যাদের স্থানীয়ভাবে নিজস্ব সংবাদদাতা আছে। অল্প কিছু পাবলিক রেডিও স্টেশনের মোটামুটি বড় আকারের নিউজরুম আছে। বাকীরা সবাই একে অন্যের সঙ্গে এবং অলাভজনক ডিজিটাল স্টার্টআপ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সংবাদ ভাগাভাগির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে।