কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ লেখা আরবি ক্যালিগ্রাফি। ছবি: সংগৃহীত

রাসূল (সা.)-কে নিয়ে যদি কেউ কটূক্তি করে, একজন মুসলিম হিসেবে করণীয় কী?

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৯:৩৪
আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৯:৩৪

(প্রিয়.কম) বর্তমান বিশ্বটা স্যাটেলাইটের যুগ। বিশ্বের কোথাও কিছু একটা ঘটলে সেট আর ধামাচাপা দেওয়ার সুযোগ থাকে না। সাথে সাথেই ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। আর ইন্টারনেটের এই খবর পেয়েই একপক্ষ অপর পক্ষের উপর হুমরি খেয়ে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায়, দুই পক্ষের মাঝে দ্বন্দ্ব জুড়িয়ে দিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষ উপকৃত হয়। এমন ঘটনাও অনেক বার ঘটেছে যে, ইন্টারনেটে আমাদের নবী (সা.)-কে অপমানের খবর এসেছে আর এই খবর দেখে এক পক্ষ অপর পক্ষের উপর হামলা পযর্ন্ত করে বসেছে। কথা হচ্ছে যদি কেউ নবীকে (সা.) কটূক্তি করে, একজন মুসলিম হিসেবে আপনার করণীয় কি?

বর্তমানে আমাদের সমাজেও এমন অনেক ঘটনা ঘটে। ফেসবুকসহ অন্যান্য সমাজিক মাধ্যমে অনেকে নবী (সা.)-কে অবমাননা করে। আর এটা নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে বিবাদের সূচনা হয়। কিন্তু আল্লাহপাক কুরআনে আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। কেউ যদি নবী (সা.)-কে নিয়ে কটুক্তি করে তাহলে আমরা কি করব? এমন অবস্থায় একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের আসলে করণীয় কি? পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, সত্যিই! আমি চিৎকারকারীদের বিরুদ্ধে তোমাদের জন্য যথেষ্ট। (সূরা-আল হিজর, আয়াত-৯৫)

যারা ইসলামের কাজ করতে চান কিংবা নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবি করেন, কুরআনের এই আয়াত তাদের জন্য একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। যারা মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে চান তাদেরকে অবশ্যই সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে। যারা নবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে কিংবা নবী (সা.)-এর নামে বিভিন্ন খারাপ কথা প্রচার করে বেড়ায় তারাও জানে যে, নবী (সা.) ছিলেন একজন মহান মানুষ। কিন্তু তারা নবী (সা.)-কে কটুক্তি করার মাধ্যমে আমাদের চরিত্র ও আচার-আচরণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে চায়। তারা আসলে এর মাধ্যমে প্রমাণ করতে চায় যে, যারা নবী (সা.)-কে অনুসরণ করে তাদের আচার-আচরণ ভালো নয়।

একটু ধৈর্য্য ধারণ করুন: আপনি হয়ত শুনেছেন যে, কেউ নবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করেছে সাথে সাথেই আপনি উত্তেজিত হয়ে পড়বেন না এবং আবেগ প্রবল হয়ে পড়বেন না। বরং আগে আপনি বিষয়টি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। অতঃপর শান্তভাবে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। এটাই ইসলামের শিক্ষা। একজন মুসলিমের চরিত্র এমনই হওয়া প্রয়োজন।

প্রথমত: পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, হে মুসলমানগণ! তোমাদের অবশ্যি ধন ও প্রাণের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে এবং তোমরা আহলে কিতাব ও মুশরিকদের থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে। যদি এমন অবস্থায় তোমরা সবর ও তাকওয়ার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকো তাহলে তা হবে বিরাট সাহসিকতার পরিচায়ক। (সূরা-আল ইমরান, আয়াত-১৮৬)

দ্বিতীয়ত: আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আর হে মুহাম্মাদ! যখন তুমি দেখ, লোকেরা আমার আয়াতের মধ্যে দোষ খুঁজে বেড়াচ্ছে তখন তাদের কাছ থেকে সরে যাও, যে পর্যন্ত না তারা এ আলোচনা বাদ দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে লিপ্ত হয়। আর যদি কখনো শয়তান তোমাকে ভুলিয়ে দেয়, তাহলে যখনই তোমার মধ্যে এ ভুলের অনুভূতি জাগে তারপর আর এ জালেম লোকদের কাছে বসো না। (সূরা-আল আনম, আয়াত-৬৮)

রাসূলকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করা নতুন কিছু নয়: মক্কার পৌত্তলিক ও মুশরিকরা সর্বদা নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে উপহাস করত। এবং নবী (সা.) সামনে পড়লে অপমানও করত। কিন্তু আমাদের নবী (সা.) মুশরিকদের এই সকল আচরণ দেখেও না দেখার ভান করতেন। আর যখন মক্কা বিজয় হলো তখন নবী (সা.) এই লোকদেরকেই ক্ষমা করে দিয়েছেন। এটাই ছিল আমাদের নবী (সা.)-এর আদর্শ। এই কারণেই আল্লাহ তার সম্পর্কে বলেছেন, আপনি উত্তম চরিত্রের অধিকারী।

যারা নবী (সা.)-কে নিয়ে কটুক্তি করে এবং তার নামে বিভিন্ন অপবাদ আরোপ করে তাদের সাথ ভালো আচরণের মাধ্যমে বুঝাতে হবে যে, আমাদের নবী (সা.)-এর আদর্শই হচ্ছে উত্তম আদর্শ। আল্লাহপাক আমাদেরকে তৌফিক দান করুন। আমীন।

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ

প্রিয় ইসলাম/আশরাফ