কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

জীবনে সুখী হতে চাইলে প্রয়োজন নিজের স্বদিচ্ছা। মডেল: নাবিলা। ছবি: রিপন।

সুখী হবার জন্য পাল্টে ফেলুন আপনার জীবন!

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:২৪
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:২৪

(প্রিয়.কম) প্রতিটি মানুষের জীবনধারা হয়ে থাকে ভিন্ন। একেকজন মানুষ একেকভাবে তার জীবনধারা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, কল্পনা করেন। ভিন্নতা থাকলেও সকলের চিন্তাধারার মাঝে সাধারণ কিছু বিষয়ে মিল পাওয়া যাবেই। সকলেই সুখী হতে চান। নির্ঝঞ্ঝাট জীবনযাপন করতে চান। নিজের প্রিয় মানুষগুলোর সাথে আনন্দ সহকারে পার করে দিতে চান একটা জীবন। তবে বাস্তবতার সাথে নিজের কল্পিত জীবনধারার মিল খুব কমই থাকে।

নানান ধরণের অশান্তি, অস্থিরতা, সমস্যার মাঝে নিজের জন্যে ভেবে রাখা জীবনের ধারা হারিয়ে যায় এক ফাঁকে। এমন সময়গুলোর কারণে মনে হতে থাকে, সকল কিছুর সাথে তাল মিলিয়ে জীবনে এগিয়ে যাওয়াটাই অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। অথচ চাইলেই জীবনের এই নেতিবাচক প্রভাবকে দূর করে ফেলা সম্ভব। জীবনের মোড়কে ইতিবাচকভাবে ঘুরিয়ে ফেলা সম্ভব নিজের স্বদিচ্ছা ও কিছু পদক্ষেপের সাহায্যে। জানতে চান কী সেই সকল পদক্ষেপ?

বিষাক্ত মানুষদের সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলুন

যদি কেউ আপনার জীবনে বিন্দুমাত্র ইতিবাচক প্রভাব না রেখে থাকে, তবে তাকে জীবনের খাতা থেকে ফেলে দিন। এমন কোন মানুষকে জীবনের সাথে জড়িয়ে রাখার মানেই হল, কিছু বাড়তি সমস্যাযুক্ত মানুষকে জীবনের সাথে যুক্ত রাখা। যদি কোন পরিচিত মানুষ বা বন্ধুর সাথেও অনেকদিন ধরে কোন যোগাযোগ নেই কথা নেই তবে বুঝে নিতে হবে তাদের জীবনে আপনাকে কোন প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে আপনারও প্রয়োজন নেই তাদের সাথে যোগাযোগ করার। জীবনে ভালো থাকার জন্য খুব কম সংখ্যক মানুষের প্রয়োজন। অগণতি মানুষের সাথে পরিচয় হলেও তাদের সকলকেই জীবনের সাথে জড়িত রাখার প্রয়োজন নেই।

নিজের চারপাশ গুছিয়ে রাখুন

একজন মানুষের চারপাশ তার কার্যক্ষমতা ও দক্ষতার উপরে অনেকখানি প্রভাব ফেলে থাকে। নিজের ঘর কিংবা অফিসে নিজের ঘর অথবা টেবিলের অংশটুকু গুছিয়ে রাখার ফলে নিজের কাজের প্রতি ভালোমতো মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়। এতে করে কাজ খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। তাই নিজের চারপাশে একবার ভালোমতো চোখ বুলিয়ে নিন। কোন জিনিসগুলো আপনার প্রয়োজন এবং প্রয়োজন নয় সেটার একটি তালিকা তৈরি করুন। এবার তালিকা অনুযায়ী অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো গুছিয়ে ফেলে দিন। এর ফলে আপনার চারপাশ অনেকটা খালি হয়ে যাবে এবং গোছানো পরিবেশে নিজের কাজগুলো ভালমতো করা সম্ভব হবে।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে সচেতন হোন

অনেক সময় এমন কিছু কঠিন ও জটিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, যেটা নিয়ে মনের মাঝে দ্বিধা কাজ করতে থাকে। কারণ, আজকের সিদ্ধান্ত হয়তো আপনার ভবিষ্যৎ জীবনের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে। এক্ষেত্রে অনেকেই নানান জনের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে থাকেন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ে। এই অভ্যাসটি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকে নিতে হবে। কারণ, ভিন্ন ভিন্ন মানুষ একটা ব্যাপারকে ভিন্নভাবে দেখে থাকেন। বিশেষত আপনার সমস্যা ও অবস্থান অন্য কেউ আপনার মতো করে কখনোই বুঝতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে অন্যের সিদ্ধান্তের উপরে নিজের ভবিষ্যতকে ছেড়ে দেওয়া খুব একটা যুক্তিযুক্ত হবে না।

মেডিটেশন

স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন

কীভাবে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা সম্ভব? এমন প্রশ্ন যদি আপনার মাথায় ঘুরতে থাকে তবে কোমল পানীয়ের বোতল ফেলে দিয়ে পানির গ্লাস তুলে নিন হাতে। ইতিবাচক যেকোন কিছুই জীবনের কোন না কোন ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে আসবে। একই ব্যাপার ঘটে থাকে নেতিবাচক ব্যাপারের ক্ষেত্রেও। তাই প্রতিদিনের খাদ্যাভাস ও ছোটোখাটো নিয়মের মাঝে পরিবর্তন নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। এই স্বাস্থ্যকর নিয়মগুলো কেমন হবে? সকালে মেডিটেশন করা অভ্যাস গড়ে তুলুন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন, প্রচুর শাক-সবজী খান, দুধ-ডিম সহ স্বাস্থ্যকর ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, নতুন কোন ভাষা শেখার চেষ্টা করুন, নিজের দক্ষতা বাড়াতে কোন কোর্সে ভর্তি হোন অথবা দারুণ কোন বই পড়ুন। প্রতিটি অভ্যাস কোন না কোনভাবে জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সাহায্য করবে।

নিয়মিত শরীরচর্চা করুন

নিয়মিত শরীরচর্চা যদি না করা হয়, তবে ওজনের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ চলে যাবার ব্যাপারটি খুবই সাধারণ। শুধু ওজন নয়, সুস্বাস্থ্যের উপরেই আর নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না। যে কারণে প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে শুধুমাত্র আধা ঘণ্টা সময় শরীরচর্চার জন্য আলাদা করে রাখা প্রয়োজন। শরীরচর্চা শুধু ওজনকে নিয়ন্ত্রণের মাঝে রাখে এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে তাই কিন্তু নয়। মনের উপরেও শরীরচর্চা অনেকখানি প্রভাব ফেলে থাকে। সকালের পরিষ্কার বাতাসে আধা ঘণ্টা হাটলে কিংবা দৌড়ালে মন একদম সতেজ হয়ে ওঠে। একইসাথে কাজ করার জন্যে আলাদা উদ্যমও পাওয়া যায়। তাই হাজার অজুহাতের ভিড়ে নিজের জন্য অন্তত আধাঘণ্টা সময় বের করা আবশ্যিক।

নিজের জন্য ‘একান্ত’ সময় বের করুন

ব্যস্ততা ও পরিবারের সকলের সাথে সময় কাটানোর ফাঁকে নিজের জন্য কিছু একান্ত সময় কাটানোর কথা নিশ্চয় একেবারেই ভুলে গেছেন আপনি! শুধুই নিজের সাথে, নিজের জন্য একান্ত কিছু সময় কাটানোর ব্যাপারটি মোটেও স্বার্থপর চিন্তাভাবনা নয়! কারণ, কিছু সময় থাকে যখন মানুষ একদম একা থাকতে চান, সকল কিছু থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চান। তেমনভাবেই, নিজের জন্য একান্ত কিছু সময় মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে থাকে। এই একান্ত সময় কাটানো হতে পারে একাকী কোথাও ঘুরতে যাওয়া, কফিশপে বসে গান শোনা, কোন পুরনো বন্ধুর সাথে সময় কাটানো কিংবা নতুন কোন সিনেমা দেখতে যাওয়া।

ঝুঁকি নিতে কখনোই পিছ-পা হবেন না

বেশীরভাগ মানুষ যেকোন বিষয় নিয়েই ঝুঁকি নিতে ভয় পেয়ে থাকেন। যার ফলে ফলে তাদের আর কখনোই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে ওঠে না। জীবনে এগিয়ে যেতে চাইলে, পরবর্তি পদক্ষেপ নিতে চাইলে এবং অন্য সকলের থেকে এগিয়ে থাকতে চাইলে কিছু ঝুঁকি আপনাকে নিতেই হবে। সেটা অনেক বড় কোন ব্যাপার হতে পারে, আবার হতে পারে ছোট কোন ব্যাপারেও। যেমন: কর্মক্ষেত্রে হয়তো কোন ব্যাপারে আপনি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অথবা কারোর আচরণ আপনার কাছে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছে। এই ব্যাপারগুলো সরাসরি বসকে জানিয়ে দিন। তিনি কী ভাববেন বা কী পদক্ষেপ নেবেন সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করলে আপনাকে সেই একই সমস্যার মাঝে পড়ে থাকতে হবে। আবার, এই ঝুঁকি নেওয়া ভিন্ন রকম হয়ে থাকতে পারে। হয়তো কোন ভিন্ন আইডিয়া এসেছে আপনার মাথায়। সেটা নিয়ে কাজ করা শুরু করে দিন। সেটা আদৌ সফল হবে কি হবে না, সেটা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন নেই। কথিতই রয়েছে- ‘নো রিস্ক, নো গেইন।‘ ঝুঁকি নেওয়ার মাধ্যমেই আপনি জীবনের পরবর্তি পদক্ষেপ নিতে পারবেন।

সূত্র: You Queen  

প্রিয় লাইফ/ আর বি