ছবি সংগৃহীত
দ্য নিউজ মিডিয়া: হোয়াট এভরিওয়ান নিডস টু নো || প্রযুক্তি বদলে দিয়েছে টিভি সাংবাদিকতাকে
আপডেট: ০৫ মে ২০১৭, ১১:৪৯
নিউ ইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক সি. ডব্লিউ. অ্যান্ডারসন, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক লিওনার্ড ডাউনি জুনিয়র এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির জার্নালিজমের অধ্যাপক মাইকেল শাডসন দ্য নিউজ মিডিয়া: হোয়াট এভরিওয়ান নিডস টু নো নামের একটি বই লিখেছেন। ২০১৬ সালে বইটি প্রকাশ করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। বইটিতে লেখকরা সাংবাদিকতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন। সেই বই অনুসারে ধারাবাহিকভাবে অনুলিখন করছেন মিজানুর রহমান।
আজকের বিষয়: প্রযুক্তি বদলে দিয়েছে টিভি সাংবাদিকতাকে
(প্রিয়.কম) স্যাটেলাইট ট্রান্সমিশন, কম্পিউটার গ্রাফিক্স, ভিডিও ক্যামেরা থেকে শুরু করে ক্যামেরার খুঁটিনাটি বিষয়েও এখন প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। ফলে আমুল পরিবর্তন এসেছে টিভি সাংবাদিকতায়। ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে টিভি সাংবাদিকতা এখন একটু বেশিই কিছু। গতানুগতিক সাংবাদিকতা ও উপস্থাপনা থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক স্ক্রিন ও প্রযুক্তির সহায়তায় সংবাদকে কীভাবে আরও আকর্ষণীয় করে দর্শকের সামনে উপস্থাপন করা যায়, টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য এটিই এখন নতুন চ্যালেঞ্জ।
বড় বড় টিভি চ্যানেলগুলো এখন টিভিতে প্রচারিত খবরের চেয়ে বেশি খবর দিচ্ছে তাদের ওয়েবসাইটে এবং এই ওয়েবসাইটেই তাদের টিভি দর্শকের চেয়েও বেশি পাঠক পাওয়া যাচ্ছে। চ্যানেলগুলোর ওয়েবসাইটে টিভিতে প্রচারিত খবরের টেক্সট ভার্সন, ভিডিও, ছবি, গ্রাফিক্স সবই থাকে, যাতে পাঠক যখন ইচ্ছা তখনই পড়তে পারে বা দেখতে পারে। যদিও এসব ওয়েবসাইট দিয়ে টিভিগুলো তাদের টিভির আয়ের তুলনায় অল্পই আয় করতে পারে। কিন্তু তারপরও অন্যতম ডিজিটাল অনুষঙ্গ হিসেবে এর বিকল্প পথ নেই। না হলে দর্শক হারানোর ভয় আছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পাঠকসমৃদ্ধ ২০টি নিউজ ওয়েবসাইটের মধ্যে নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, ইউএসএ টুডে’র মতো ছাপা পত্রিকার ওয়েবসাইট যেমন আছে, আবার হাফিংটন পোস্ট, গুগল নিউজ’র মতো পুরোপুরি ডিজিটাল ওয়েবসাইটও আছে। ২০টি নিউজ ওয়েবসাইটের এ ছোট তালিকায় আছে দেশটির প্রধান প্রধান টিভি চ্যানেলগুলোর ওয়েবসাইটও। টিভি চ্যানেলগুলোর ওয়েবসাইটে অন্যান্য সংবাদমাধ্যম থেকে এগ্রিগেট করা খবরও থাকে। এবিসি এবং ইয়াহু নিউজ ২০১২ সালে নিজেদের মধ্যে খবর ভাগাভাগির চুক্তি করেছে। অর্থাৎ এবিসির নিউজ ও অন্যান্য অনুষ্ঠান যেমন- ‘স্ক্যান্ডাল’, ‘ডান্সিং উইথ স্টারস’, ‘প্রিটি লিটল লায়ারস’ এর বিভিন্ন এক্সক্লুসিভ ক্লিপ ইয়াহুর নিউজ সাইট এবং ইয়াহু টিভিতেও দেখা যাবে। একইভাবে ‘ইয়াহু ইউর ডে’ নামের নতুন একটি সেগমেন্টের আওতায় খাবার, স্বাস্থ্য ও ফ্যাশন বিষয়ে ইয়াহুর বিশেষজ্ঞরা এবিসির সকালবেলার অনুষ্ঠান ‘গুড মর্নিং আমেরিকা’য় অংশ নেবে। এর ফলে তাদের মোট পাঠক সিএনএন.কম এর পাঠকের চেয়ে বেশি হয়েছে এখন। এসব ওয়েবসাইটের অধিকাংশ পাঠকই নিজেদের মোবাইল বা ট্যাব থেকে ওয়েবসাইট ভিজিট করে।
স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলো বড় বড় টিভি চ্যানেল এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ছাপা পত্রিকার চেয়েও ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজার স্থানীয় টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে তাদের টিভি দর্শকের তুলনায় ওয়েবসাইটের পাঠক ছিল কম।
রেডিও টেলিভিশন ডিজিটাল নিউজ অ্যাসোসিয়েশন’র জন্য করা এক জরিপে হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বব প্যাপার দেখেছেন, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে স্থানীয় টিভিগুলো তাদের ওয়েবসাইটের দিকে বেশ মনোযোগী হয়েছে, নিজ নিজ কাজ নিজ নিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার জন্য সাংবাদিকদের উৎসাহিত করা হয়েছে, টিভিগুলো ডিজিটাল বিশ্বের কথা চিন্তা করে তাদের কৌশল ঠিক করেছে এবং তাদের ওয়েবসাইটকে মোবাইলবান্ধব করে তৈরি করেছে। প্যাপার দেখেছেন, স্থানীয় টিভিগুলো ২২ শতাংশ কন্টেন্ট শুধু তাদের ওয়েবসাইটের জন্যই প্রস্তুত করেছে। কিছু কিছু টিভি স্টেশনে তাদের ওয়েবসাইটের জন্য পূর্ণকালীন সাংবাদিকও ছিল। মাত্র ২০ শতাংশ টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে তাদের সংবাদের বিষয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ওপর বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে তাদের ওয়েবসাইটের দায়িত্বও ছিল।
এবিসি’র অধিভুক্ত অ্যারিজোনার কেএনএক্সভি টিভি স্থানীয় টিভিগুলোর মধ্যে ইন্টারনেটে অন্যতম আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে। টিভি চ্যানেলটি তাদের ডিজিটালাইজেশনের জন্য প্রচুর সাংবাদিক নিয়োগ দিয়েছে। তাদের সাংবাদিকরা নিজস্ব সূত্রে পাওয়া খবর, ওয়াশিংটনে তাদের ব্যুরো থেকে পাওয়া খবর এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যম থেকে সমঝোতার মাধ্যমে পাওয়া খবরগুলো ওয়েবসাইটের জন্য টেক্সট হিসেবে লিখে এবং যার যার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেগুলো শেয়ার করে। কেএনএক্সভি টিভির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, তাদের ওয়েবসাইটের ৬৫ শতাংশ ভিজিটরই আসে মোবাইল ও ট্যাব থেকে এবং তারা আবহাওয়া, খেলা, অপরাধবিষয়ক খবর ও ভিডিওগুলো দেখেন।