আরবিতে মুহাম্মাদ লেখা ক্যালিগ্রাফি। ছবি: সংগৃহীত
রাসূল (সা.) শিশুদের সাথে যেমন আচরণ করতেন
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৩:৪৮
(প্রিয়.কম) একজন বয়স্ক লোক। সমাজে তিনি অধিক ক্ষমতাবান। তিনি সবাইকে নেতৃত্ব দান করেন। খুব কম সময় তিনি সাধারণত অবসর কাটান। শিশুদের সাথেও কথা বলেন তিনি। এমন মানুষটির নাম নবী মুহাম্মদ (সা.)। তিনি সকল কাজই করতেন। দৈনিকের কাজগুলি করার পাশাপাশি শিশুদের সাথে আনন্দ-ফুর্তি ও দুষ্টুমি করতেন আবার শিশুদের আগ্রহ ও শখের বিষয়গুলিকে তিনি মূল্যায়নও করতেন।
একটি হাদিসে এসেছে, নবী (সা.)-এর চরিত্র সব মানুষের থেকেই শ্রেষ্ঠ ছিল। আবু উমার নামে তার একজন ভাই ছিল। যখনই সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসত তখন তিনি বললেন, হে আবু উমার! রাত্রিকালে কী করেছেন? এই কথা বলে রাসূল (সা.) তার সাথে দুষ্টুমি করতেন।
অন্য আরও একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলের (সা.) ব্যাপারে তার নাতিরা বর্ণনা করেছেন- কখনও এমন হয়েছে যে, নামাজের সময় হয়েছে তথচ রাসূল (সা.) আমাদের বড়িতে। যখন অজু করে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন, আমরা তার সাথে সাথেই থাকতাম। তিনি নামাজ আদায় করতেন আর আমরা তার সাথে দুষ্টুমি করতাম। (আল-বুখারী)
শিশুদের প্রতি মহানবী (সা.)-এর মধুর আচার-আচরণ যেমন ছিল মনোমুগ্ধকর, তেমনি তা সবার জন্য শিক্ষণীয় ও অনুরণীয়। শিশু-কিশোরদের প্রতি তার আচার-আচরণ কিরূপ ছিল, তা দু-একটি ঘটনার উল্লেখ করলেই সুস্পষ্ট হবে।
একবার আবিসিনিয়া থেকে একদল সাহাবা মদিনায় তশরিফ আনলেন। তাদের সাথে তাদের পরিবার-পরিজন ও ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাও ছিল। মহানবী (সা.) সমাগত ছেলে-মেয়েদের সাথে একেবারে মিশে গেলেন। তাদের সাথে খেলাধুলা করলেন, এমনকি তাদের ভাষায় (শিশুতোষ আওয়াজে) কথা বলারও চেষ্টা করলেন। এভাবে ছোট শিশু-কিশোরদের নানাভাবে আদর-যত্ন ও মিষ্টি কথাবার্তায় তিনি তাদের মন জয় করলেন।
মহানবী (সা.) যখন কোনো জিহাদের ময়দান থেকে ফেরত আসতেন, তখন মদিনার আপামর জনসাধারণ ও ছোট ছেলেমেয়েরা তাকে সাদর সম্ভাষণ জানানোর জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে আসত। মহানবী (সা.) তাদের সাদর-সম্ভাষণের জবাব দিতেন অত্যন্ত মার্জিত ও আন্তরিকতার সাথে। ভিড়ের মধ্য থেকে তিনি বিশেষভাবে ছোট ছেলে-মেয়েদের কাছে চলে যেতেন এবং তাদেরকে গভীরভাবে দরদ দিয়ে আদর করতেন। পালাক্রমে তাদের সবাইকে নিজের উটের পেছনে চড়িয়ে নিয়ে বেড়াতেন। ছেলে-মেয়েরা এতে খুব আনন্দবোধ করত। মহানবীর (সা.) সাথে তার উটের সওয়ারি হতে পেরে তারা নিজেদের অনেক সম্মানী বোধ করত।
সত্যই, এই দুনিয়াতে যদি সবাই নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) সম্পর্কে জানত এবং তার সাহাবীদের সম্পর্কে জানত তাহলে সবাই তাকে ভালোবাসতেন। তার চরিত্রের গুণে ও আচরণে সবাই মুগ্ধ ছিলেন। আমাদের সবারই উচিত তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা। মূলত তাকে ভালোভাবে জানতে পারলেই তার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হবে।
সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ
প্রিয় ইসলাম/আশরাফ
- ট্যাগ:
- ইসলাম
- ইসলাম
- রাসূল [সা.]
- শিশু