কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

কাজের মাঝে বিরতি নেবার চেষ্টা করুন। ছবি: প্রিয়।

যে অভ্যাসগুলো বাড়াবে আপনার কাজের গতি

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ২৩:১৬
আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭, ২৩:১৬

(প্রিয়.কম) কর্মক্ষেত্র এমন একটি স্থান যেখানে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে চাইলে প্রয়োজন যোগ্যতা, দক্ষতা এবং কর্মক্ষমতা। অনেকের দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকার পরেও কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকাটা কষ্টকর হয়ে ওঠে। তার একমাত্র কারণ হলো কর্ম ক্ষমতার অভাব অথবা কাজের গতিতে দুর্বলতা। এই সমস্যাকে দূর করার জন্য অবশ্যই প্রয়োজন মানসিক ইচ্ছার। একইসাথে প্রয়োজন সঠিক কিছু পদক্ষেপের। কী সেই সকল পদক্ষেপ? জেনে নিন এই ফিচার থেকে।

কাজের গুরুত্ব বুঝে তালিকা তৈরি করুন

স্বাভাবিকভাবেই কর্মক্ষেত্রে একজন মানুষের অনেক বেশী কাজের চাপ থাকবে। তবে সকল কাজের মাঝে কোন কাজগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন কাজগুলো তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ সেটার তালিকা তৈরি করতে হবে। এতে করে, হাতে জমে থাকে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো শেষ করে ফেলা সম্ভব হয়। তারপর ঠাণ্ডা মাথায় ভালোভাবে তুলনামূলক কম জরুরি কাজগুলো করা যায়। এতে কর্মক্ষমতা ও কাজের গতি বৃদ্ধি পায়।

আনন্দের থাকার চেষ্টা করুন

ইউকের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়ারউইক তাদের একটি গবেষণা থেকে দেখেছে, আনন্দিত ও সুখী ব্যক্তিরা তাদের কর্মক্ষেত্রে অসুখী ব্যক্তিদের চাইতে ১২ শতাংশ বেশী কর্মক্ষম হন। বুঝতেই পারছেন, মানসিক অবসাদ কাজের গতির ক্ষেত্রে কতোটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে মানসিকভাবে আনন্দিত  ও সুখী ব্যক্তিদের মাঝে কাজ করার উদ্যম থাকে। যার ফলে তারা কাজ করার প্রতি আগ্রহী থাকেন এবং তাদের কাজের গতি অন্যদের তুলনায় ভালো হয়। তাই চেষ্টা করতে হবে সবসময় অনেক হাসি-খুশি থাকার জন্য।

স্বাস্থ্য সচেতন থাকার চেষ্টা করুন

আপনি হয়তো জানেন যে, শরীরচর্চা করার ফলে শরীর সুস্থ ও ফিট থাকে। তবে শুধু শরীরই নয়, শরীরচর্চা করার ফলে মন-মেজাজও থাকে একদম ফুরফুরে। প্রতিদিন সকালে আধাঘণ্টা দৌড়ালে অথবা ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করলে মানসিক ও শারীরিক চাপ কমে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারীতা বৃদ্ধি পায়। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রের জীবনে। যাদের মাঝে কর্মদক্ষতা ও ক্ষমতা অন্যদের চাইতে বেশী থাকে, খেয়াল করলে দেখা যাবে তারা দারুণ স্বাস্থ্যসচেতন।

বিরতি নেবার চেষ্টা করুন

গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য অনেক বেশী মনোযোগ, মানসিক শক্তি ও শারীরিক শক্তির প্রয়োজন হয়। এতোটা পরিশ্রমের ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্তি এসে ভর করে শরীর ও মনে। যে কারণে বিরতি নেবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। লাইসেন্সড সাইকোলোজিষ্ট ওয়েট ফিশার জানান, পরবর্তি বড় ধরণের কাজগুলর জন্য নিজেকে তৈরি করার প্রয়োজন দেখা দেয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য কিছু সময়ের বিরতি পুনরায় চাঙ্গা করে ফেলতে সাহায্য করে।

জানালার পাশে বসে কাজ করার চেষ্টা করুন

স্বাভাবিকভাবেই কোন কর্মক্ষেত্রেই নিজের কাজ করার স্থান নিজেই নির্ধারন করে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে যদি সুযোগ থাকে নিজের পছন্দমতো সাথেন বসে কাজ করার, তবে অবশ্যই জানালার পাশে বসে কাজ করার চেষ্টা করবেন। গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে দিনের আলো কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং ঘুমের মান বাড়াতে সাহায্য করে। তবে, জানালার পাশে বসে কাজ করার সুযোগ একেবারেই না থাকলে সকালে নাস্তার সময়, দুপুরে কিংবা বিকালের দিকে বাইরে থেকে অল্প সময়ের জন্য ঘুরে আসলে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন

বর্তমান সময়ে প্রতিটি কাজ ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। বিশেষ করে অফিসের সকল কাজ। অন্যদিকে গবেষণা জানাচ্ছে, কম্পিউটার সম্পর্কিত যেকোন ধরনে ডিভাইস মানসিক অবসাদ ও চাপ তৈরি করে থাকে। যার ফলে কর্মক্ষমতা কমে যেতে থাকে সময়ের সাথা সাথে। যে কারণে, শুধুমাত্র কাজের সময় বাদে, অন্য সময়গুলোতে যথাসম্ভব ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।

সকল কাজ একসাথে করার চেষ্টা করা থেকে বিরত থাকুন

পারিবারিক, ব্যক্তিগত, কর্মজীবনের হাজারো ব্যস্ততা এবং কাজ থাকাটাই স্বাভাবিক ব্যপার। তাই বলে সকল কাজের চাপে পড়ে একই সময়ে একাধিক কাজ একসাথে করার চেষ্টা করা যাবে না। কারণ, এতে কোন কাজই সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় না। তাহলে কাজগুলো কীভাবে শেষ করবেন? একদম প্রথম পয়েন্ট মনে আছে কী? কাজের গুরুত্ব বুঝে তালিকা তৈরি করুন। সকল কিছু মাঝে যে কাজটি বেশী গুরুত্বপুর্ণ সেটাই আগে শেষ করার চেষ্টা করুন।

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো অভ্যাস রপ্ত করুন

স্কুল জীবনের কথা মনে আছে? রাতের খাবার খেয়ে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়া এবং সকালে দ্রুত ঘুম থেকে উঠে স্কুল যাওয়া। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার পরেও কিন্তু তখন ক্লান্তি কাজ করত না। কেন জানেন? কারণ শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ঘুমের চাহিদা পূরণ হয়ে যেত। ছোটবেলা সেই অভ্যাসটাকেই পুনরায় রপ্ত করার চেষ্টা করুন। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৮-৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। যেহেতু সকালে কর্মক্ষেত্রে যেতে হয় তাই তাড়াতাড়ি ঘুমানোর চেষ্টা করুন। শরীরে কোন ক্লান্তিভাব বা অবসাদ বোধ কাজ না করলে কাজের গতি স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যাবে অনেকখানি।

সূত্র: Reader’s Digest 

প্রিয় লাইফ/আর বি