ঘর মেরামতের কাজ করছেন লালমনিরহাটের বন্যার্তরা। ছবি: প্রিয়.কম
‘আশা ছিল বকরি কুরবানির, ঈদ কেটেছে কচু খেয়ে’
আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১১:১১
(প্রিয়.কম) লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের তালেব মোড়ের আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা আইনাল হোসেন বলেছেন, ‘আশা ছিল এবার একটা বকরি কুরবানি দেওয়ার। কিন্তু বন্যার পানিতে সব নিয়ে গেছে। অন্যের দেওয়া গোস্ত ও কচু খেয়ে এবার ঈদ কেটেছে।’
এ অবস্থা শুধু তালেব মোড় এলাকার নয়। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলায় ঈদ আনন্দ বিবর্ণ হয়েছে জেলার ৫ উপজেলার হাজারো বন্যার্ত লোকজনের। দুই দফা বন্যায় তিস্তা, সানিয়াজান ও ধরলা নদীর পানির চাপে বসত-বাড়ি ভেঙে যাওয়া লালমনিরহাটের বন্যার্তদের ঈদ কাটাতে হয়েছে খোলা আকাশের নিচে।
তালেব মোড় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার ২৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো ক্ষত রয়েছে বন্যার্তদের। বসত বাড়ি মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে আছে। অনেকের বসত বাড়িতে বড় বড় গর্ত হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে বরাদ্দ এলেও শুধু মাত্র তালিকা তৈরী না হওয়ার কারণে বিতরণ হয়নি ত্রাণের ঢেউ টিন ও ঘর মেরামতের নগদ টাকা।
বন্যায় ভেঙে চুরমার হয়েছে তালেব মোড় এলাকার লোকজনের বসত বাড়ি। ভেসে গেছে ঘরের আসবাবপত্র ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস। কেউ কেউ অন্যের কাছ থেকে হাড়ি পাতিল নিয়ে রাস্তার ওপর করছেন রান্নার কাজ। খাওয়া এবং ঘুমানো রাস্তাতেই। এভাবে জীবনযাপন করছেন ওই ইউনিয়নের ৩৯টি পরিবার। তাদের ঈদের দিন কেটেছে ত্রাণের চাল ও বাড়ির পাশের ডোবার কচু খেয়ে।
স্থানীয় হাতিবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঈদের দিন গড্ডিমারী তালেব মোড়ের গৃহহীনদের জন্য একটি গরু কোরবানি দেন। সেই মাংসে চলেছে বন্যার্তদের ঈদ। এছাড়া সরকারি ও বে-সরকারিভাবে প্রাপ্ত ত্রাণের চাল, ডাল, আটা, তেল ও আলু বিতরণ করা হয়েছে বন্যায় ক্ষতি গ্রস্থদের মধ্যে।
লালমনিরহাট ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যালয়ের দায়িত্বে সহকারী কমিশনার সুজা-উদ-দৌলা জানান, প্রতি বান্ডিল টিনের সঙ্গে গৃহনির্মাণ খরচ বাবদ দেওয়া হবে তিন হাজার টাকা। যার যেমন ক্ষতি হয়েছে, সেই অনুপাতে ঢেউটিন ও টাকা বিতরণ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে, তালিকা এলেই বিতরণ করা হবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্তদের পুর্নবাসনের জন্য কিছু টিন ও টাকা বরাদ্দ এসেছে, আরো কিছু আসছে। তালিকা পৌঁছলে ঈদের ছুটি শেষে বিতরণ করা হবে। এছাড়াও ত্রাণ বিতরণ অব্যহত রয়েছে।
প্রিয় সংবাদ/শিরিন/আশরাফ