কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

এই মাঠেই আগামী ছয়দিন ধরে চলবে চার-ছক্কার মেলা। ছবি: সংগৃহীত

সাগরপাড়ে এবার চার-ছক্কার আসর

শান্ত মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ২২:০০
আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ২২:০০

(প্রিয়.কম, চট্টগ্রাম থেকে) পর্দা উঠেছে দুটি পাতা আর একটি কুঁড়ির শহর সিলেটে। চার-ছক্কার লড়াইয়ে সেখানকার মানুষ বুদ হয়ে ছিল পাঁচদিন। সুবজের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা অনিন্দ্য সুন্দর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আটটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা হয়ে বিপিএল এবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। সাগরের পাড়ে অবস্থিত জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এবার বসবে চার-ছক্কার মেলা। 

জহুর আহমেদ চৌধুরীর পাশ দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তা দিয়ে কিছুটা এগোলেই যে কারও চোখ ভরে উঠবে। একটু সবুজ পেরিয়েই বঙ্গোবসাগর। কান পেতে রাখলে সমুদ্রের গর্জন মাঠে বসেই শোনা যায়। তবে সমুদ্রের গর্জন এখন আর কানে পৌঁছাচ্ছে না। এখানকার সব শোরগোল বা উন্মাদনা যেটাই বলা হোক না কেন, সবটাই চার-ছক্কার আসর বিপিএল নিয়ে। আছে ঘরের মাঠের দল চিটাগং ভাইকিংস নিয়েও তুমুল উত্তেজনা। সব মিলিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম সেজেছে ক্রিকেটের সাজে।  

সাগরিকায় শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে মাঠের লড়াই। প্রথমদিনই মাঠে নামবে ঘরের দল চিটাগং ভাইকিংস। এদিন তাদের প্রতিপক্ষ সিলেট সিক্সার্স। তবে এরআগে দুপুরে আরেকটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। যেটাকে অনেকেই হাইভোল্টেজ তকমা দিয়ে দিচ্ছেন। এ ম্যাচে মুখোমুখি হবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, রাইলি রুশো, কার্লোস ব্রাথওয়েট, জুনায়েদ খানদের দল খুলনা টাইটান্স ও মাশরাফি বিন মুর্তজা, ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, লাসিথ মালিঙ্গাদের দল রংপুর রাইডার্স। 

স্বাগতিক দল আছে বলে বিপিএলের উন্মাদনা এখানে বেশ। প্রিয় দলকে মাঠে এসে সমর্থন জানাতে এরইমধ্যে টিকেট সংগ্রহের দিকে মন দিয়েছে স্থানীয় সমর্থকরা। টিকেট পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দেওয়া সুলাইমান নামের এক কলেজ পড়ুয়া বললেন, ‘ভাই চট্টগ্রামের খেলা, টিকেট না পেলে শেষ। সকালেই চলে যাব টিকেট কিনতে। আমরা ৩০জন মিলে খেলা দেখতে যাব। তবে তামিম ভাই আমাদের দলে থাকলে আরও ভাল হতো।’

চট্টগ্রামের ছেলে তামিম। কিন্তু পথ দেখাচ্ছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। যদিও তামিমের বিশ্বাস এখানকার মানুষদের সমর্থন পাবেন তিনি। কুমিল্লার অনুশীলন শেষে বৃহস্পতিবার কুমিল্লার অধিনায়ক বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান, কারণ চিটাগংয়ের বিপক্ষে আমার খেলতে হচ্ছে না (হাসি)! তবে আমি যেহেতু এখানকার ঘরের ছেলে, সুতরাং আমি যে দলেই খেলি না কেন, আশা করি চিটাগংয়ের মানুষের কাছ সমর্থন পাব।’

চিটাগং ভাইকিংসকে নিয়ে এখানকার মানুষের চরম আগ্রহ আছে। একইসাথে আছে হতাশাও। দলের পারফরম্যান্সে যে খুশি হওয়ার উপায় নেই। পয়েন্ট টেবিলের শেষ দল চিটাগং। ছয় ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, তাসকিন আহমেদদের দল। শেষ চারের লড়াই থেকে একপ্রকার ছিটকেই গেছে তারা। 

শেষ চার নিশ্চিত করতে হলে বাকি ছয় ম্যাচের মধ্যে অন্তত পাঁচটি জিততে হবে তাদের। সেটা হলে ছয়টি জয় জমা হবে চিটাগংয়ের ঝুলিতে। কিন্তু ছয় জয়েও যে শেষচার নিশ্চিত হবে সেটা বলার কোনও উপায় নেই। এছাড়া ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জয় পাওয়াটাও তাদের জন্য অসাধ্যকে সাধন করার মতো ব্যাপার। এ পথে অবশ্য কিছুটা সুবিধা পাচ্ছে তারা। ঘরের মাঠে চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে চিটাগং। 

এবারের বিপিএল সব মিলিয়ে ছয়দিন থাকছে চট্টগ্রামে। এখানে মোট ১০টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন দুটি করে ম্যাচ থাকছে। মাঝে একদিনের বিরতি। ২৬ নভেম্বর কোনও খেলা রাখা হয়নি। এরপর আবার টানা তিনদিন ছয় ম্যাচ। এখানকার উইকেটে রান উঠবে বলেও আশা করা হচ্ছে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুর তেমনই বিশ্বাস। 

সাগরপাড়ে চার-ছক্কার আসর। ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে বিপিএলের সাত দলে আছেন ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, শহীদ আফ্রিদি, কাইরন পোলার্ড, এভিন লুইস, ডোয়াইন ব্রাভো, ডোয়াইন স্মিথ, কার্লোস ব্রাথওয়েট, লুক রনচি, কুমার সাঙ্গাকারা, থিসারা পেরেরা, জস বাটলারদের মতো বিশ্বনন্দিত তারকা ক্রিকেটাররা। মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমানদের পাশাপাশি আগামী ছয়দিন এদের দিকেই তাকিয়ে থাকবেন এখানকার ক্রিকেটমোদীরা।