কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

কুসংস্কারের ব্যাপারে ইসলামের বিধান হলো- এগুলো থেকে বিরত থাকাই উত্তম। ছবি : সংগৃহীত

পাঁচটি কুসংস্কার, মানুষ যেগুলোকে ভালো কাজ হিসেবে পালন করে!

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:২৫
আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৩:২৫

(প্রিয়.কম) মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করাই মানুষের সহজাত গুণ। ইসলামও মানুষের এই সামাজিক জীবনকে গুরুত্ব দিয়েছে এবং সমাজ জীবনে বসবাস করার বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছে। সমাজে বসবাস করতে গিয়ে মানুষের নানামুখী গোড়ামী বিশ্বাস ও অন্ধত্বের কারণে সৃষ্ট হয় কুসংস্কারের। আমাদের মুসলিম সমাজে এমন কিছু কাজ প্রচলিত রয়েছে যাকে আমরা ভালো কাজ হিসেবে পালন করি কিন্তু মূলত এগুলো কুসংস্কার। আর কুসংস্কারের ব্যাপারে ইসলামের বিধান হলো- এগুলো থেকে বিরত থাকাই উত্তম।  

১. বিয়ের পরে মেয়েরা চুড়ি বা নাকফুল না পরলে কি স্বামীর হায়াত কমে যায়- এটি একটি কুসংস্কার। কোনো কোনো এলাকার মানুষকে বলতে শোনা যায়, বিয়ের পর স্ত্রী চুড়ি বা নাকফুল না পরলে স্বামীর হায়াত কমে যায়। এটি একেবারেই মনগড়া ও ভিত্তিহীন একটি ধারণা, একটি কুসংস্কার; এগুলো বিশ্বাস করা যাবে না। 

২. মায়ের মাথা ছুয়ে কসম করা- এটি একটি ভুল প্রথা বা কুসংস্কার। অনেক সময় কোনো বিষয় কাউকে বিশ্বাস করানোর উদ্দেশ্যে কেউ কেউ মায়ের মাথা ছুয়ে কসম করে। কখনো নিজের মাথা ছুয়ে কসম করে। এটি একটি কুসংস্কার, এটা থেকে বিরত থাকা জরুরি। মায়ের মাথা হোক আর নিজের মাথা হোক এভাবে কসম করা ঠিক নয়। 

৩. পায়ে মেহেদী দেওয়া কি নিষেধ- একটি ভুল ধারণা ও কুসংস্কার। অনেকে মনে করেন মেয়েদের জন্যও পায়ে মেহেদী দেওয়া নিষেধ। এ ধারণা ঠিক নয়। প্রথম কথা হল, পুরুষদের জন্য সাজ-সজ্জার উদ্দেশ্যে মেহেদী লাগানো নিষেধ। তবে চুল-দাড়ি পেকে গেলে তাতে মেহেদী লাগানোর অনুমতি আছে। আর মেয়েদের জন্য হাতে পায়ে মেহেদী লাগানোতে দোষের কিছু নেই।

৪. কবরের চার কোণে চার কুল- একটি ভুল প্রচলন বা কুসংস্কার। অনেক এলাকায় প্রচলন আছে, মৃতকে দাফন করার পর চার ব্যক্তি কবরের চার কোণে দাঁড়িয়ে চার কুল (অর্থাৎ সূরা কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়ে। তারপর তারা কবরের চার কোণে চারটি তাজা ডাল পুঁতে দেয়। কোথাও আবার চার কোণের চারটি খুঁটি হাতে চার কুল পড়ে খুঁটিগুলো গেড়ে দেয়। কোথাও চার খুঁটিতে সুতা প্যাঁচানো। আবার কেউ বলল, তাদের এলাকায় চারটি কঞ্চি হাতে চার কুল পড়ে কঞ্চি চারটি কবরের উপর রাখে।

এটি একটি মনগড়া রসম যার কোনো ভিত্তি নেই। কোনো হাদীসে বা সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে এ আমলের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। সুতরাং তা বর্জনীয়। এ জাতীয় মনগড়া কোনো রসমের পিছে না পড়ে প্রমাণিত কোনো আমল করা উচিৎ। যেমন দাফন শেষে মৃতের জন্য মাগফিরাতের দুআ করা এবং কবরের সওয়াল জওয়াব সহজ হওয়ার জন্য দুআ করা। সূরা বাকারার শুরু থেকে মুফলিহুন (১-৫ আয়াত) পর্যন্ত এবং শেষে আমানার রাসূলু থেকে শেষ পর্যন্ত (২৮৫-২৮৬ আয়াত) তিলাওয়াত করে ইসালে সওয়াব করা ইত্যাদি।

৫. দোকানে সন্ধ্যার বাতি দেওয়া- এটি একটি ভুল ধারণা বা কুসংস্কার। অনেকের ধারণা, মাগরীবের আযান দিলে দোকান পাট বা গাড়িতে বাতি জ্বালাতে হয় নইলে ব্যবসায় ক্ষতি হয়। এটাকে ‘সন্ধ্যার বাতি’ বলে। এ ধারণা ঠিক নয়। সন্ধ্যা হলে প্রয়োজনের খাতিরে এমনিতেই দোকান পাট বা গাড়িতে বাতি জ্বালাতে হয় এর সাথে লাভ ক্ষতির কী সম্পর্ক? লাভ ক্ষতি তো হয় আল্লাহর পক্ষ হতে বাতি; জ্বালা না জ্বালার এখানে কোনো দখল নেই। প্রয়োজন হলে বাতি জ্বালাবে না হলে জ্বালাবে না।

সূত্র : গবেষণা ম্যাগাজিন আল কাউসার

প্রিয় ইসলাম/সিফাত বিনতে ওয়াহিদ