কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রাস্তার ধারে ঘাসের মধ্যেই ঘুমিয়ে আছে এক রোহিঙ্গা শিশু। ছবি: স্টার মেইল

তীব্র পুষ্টিহীনতায় ভুগছে এক-চতুর্থাংশ রোহিঙ্গা শিশু

আবু আজাদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০২ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৫৮
আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭, ১৯:৫৮

(প্রিয়.কম) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী পরিচালিত রোহিঙ্গা নিধন অভিযানে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের প্রতি চার জনে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। আর এ কারণে ওই শিশুরা মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার বিষয়ক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।

সেভ দ্য চিলড্রেনসহ পাঁচটি সংস্থার তৈরি করা এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেভ দ্য চিলড্রেনসহ পাঁচটি সংস্থার করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সহিংসতার কারণে পালিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এক চতুর্থাংশ রোহিঙ্গা শিশুই গত দুই মাস ধরে তীব্র পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তীব্র পুষ্টিহীনতার শিকার ওই এক চতুর্থাংশ শিশুর মধ্যে আবার এক তৃতীয়াংশই চরম অপুষ্টির শিকার। অর্থাৎ যে কোনো সুস্থ শিশুর চেয়ে অপুষ্টিতে ভোগা ওই শিশুরা নয়গুণ বেশি মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে। এই ধরনের শিশুরা ডায়রিয়া বা বুকের সংক্রমণের মতো রোগেও দ্রুত আক্রান্ত হয়।

খাবারের অভাবে কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে গেছে ছোট ভাইটি। ভাইকে আগলে রাখা বড় বোনটিও শিশু। ছবি: ফোকাস বাংলাঅনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে রোহিঙ্গা শিশুরা। ছবি: ফোকাস বাংলা

শিশুদের এই পরিস্থিতি আশঙ্কার চেয়েও অনেক খারাপ মন্তব্য করে কক্সবাজারে নিযুক্ত সেভ দ্য চিল্ড্রেনের পুষ্টি পরামর্শক নিকি কনেল বার্তা সংস্থা ইউএনবি-কে বলেন, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুরা আগেই থেকেই অপুষ্টিতে ভুগছিল। এরমধ্যে বাংলাদেশে এসে এমনই এক পরিস্থিতিতে পরেছে যে, খাদ্যের জন্য তাদেরকে ত্রাণের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যেখানে নেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নেই প্রয়োজনীয় খাবার পানি। ফলে প্রচুর মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

তিনি জানান, সেভ দ্য চিলড্রেন পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমন সব শিশুররা চিকিৎসা নিতে আসছে বাঁচতে হলে যাদের সবার আগে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য।

অপুষ্টিতে ভোগা এসব শিশুদের নিয়ে বড় সমস্যায় পড়তে হবে মন্তব্য করে নিকি কনেল আরও বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যদি এসব শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা না করা যায়, তবে এসব শিশুদের বড় একটি অংশকে আর বাঁচানো যাবে না।

এর আগে গত ২৩ অক্টোবর সোমবার জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১৭ হাজার শিশুর পুষ্টির চিকিৎসা প্রয়োজন এবং ১ লাখ ২০ হাজার গর্ভবতী ও অসুস্থ নারীর পুষ্টিকর খাদ্যের প্রয়োজন। যাদের মধ্যে অপ্রতুল শৌচাগার ও অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির কারণে কলেরা, ডায়রিয়ায় হাজারো মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে

যুদ্ধকে ছাড়িয়ে গেছে নির্জীব শৈশব। ছবি: ফোকাস বাংলাপরদেশের আশ্রয় শিবিরে নিষ্প্রাণ শৈশব কাটছে রোহিঙ্গা শিশুদের। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রসঙ্গত, ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে যাদের ৬০ শতাংই শিশু। ইউনিসেফের হিসেব অনুযায়ী শরণার্থী শিবিরে বর্তমানে ৪ লাখ রোহিঙ্গা শিশু রয়েছে যার মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজারই নতুন। এসব শিশুদের মধ্যে আবার অভিভাবকহীন ১৩ হাজার ৭৫১টি রোহিঙ্গা শিশুও রয়েছে।’

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে অন্তত ৫০ হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন। ফলে পালিয়ে আসা শিশু শরণার্থীদের বাইরেও প্রতিদিন যোগ হচ্ছে প্রায় ১০০ নবজাতক। 

প্রিয় সংবাদ/শান্ত