কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

গর্ভাবস্থায় মা ও শিশু দু'জনের জন্যে উপকারী এমন পানীয় পান করা প্রয়োজন। ছবি: নূর।

গর্ভাবস্থায় এই পানীয়গুলো মা ও শিশুর জন্য সমান উপকারী

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৭, ২১:৪৫
আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৭, ২১:৪৫

(প্রিয়কম) গর্ভাবস্থায় একজন মা যেসব খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে থাকেন, সবকিছুর প্রভাব পড়ে গর্ভের শিশুর উপরে। বেশীরভাগ মায়েদের গর্ভাবস্থায় কোন কিছু খাওয়ার রুচি ও ইচ্ছা একেবারেই থাকে না। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে এই সময়ে যে কোন খাবার খাওয়ার চাইতে পানীয় পান করার প্রতি মায়েদের আগ্রহ দেখা যায়।

যে কারণে বাধ্যতামূলক ভাবে মায়ের খাদ্যের দিকে লক্ষ্য রাখা সবচাইতে জরুরী। সকল পানীয়ই খাদ্যতালিকায় না রেখে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া প্রয়োজন যে কোন পানীয়টি গর্ভের শিশুর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। এমনই কিছু পানীয় নিয়ে আজকের আলোচনা। 

লেবুর শরবত

খুবই পরিচিত এবং সাধারণ পানীয় লেবু-চিনির শরবত। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। লেবুর শরবত শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে থাকে। খাওয়ার সময় বমিভাব দেখা দিলে পুদিনা পাতা অথবা আদা মিশিয়ে লেবুর শরবত পান করলে উপকার পাওয়া যাবে।

ডাবের পানি

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি পান করার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয় না। একই সাথে ডাবের পানিতে থাকা প্রাকৃতিক লবণ ও উপাদান সমূহ শারীরিক ক্লান্তি দূর করতেও সাহায্য করে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন একটি করে ডাবের পানি পান করা শরীরের জন্যে দারুণ উপকারী।

তাজা ফলের রস

ফলের রস

বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে সকলেই তাজা ফলের রস খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। লেবুর রস, কমলালেবুর রস, তরমুজ, জাম্বুরা প্রভৃতি ফল খেতেও যেমন সুস্বাদু, তেমন স্বাস্থ্যকর। গর্ভাবস্থায় এমন সকল ফলের রস খাওয়া খুবই জরুরি, কারণ এই সকল ফলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ।

ফলের স্মুদি

পছন্দসই ফল দিয়ে ঘরে বসে খুব সহজেই বানিয়ে নেওয়া যায় ফলের স্মুদি। পছন্দনীয় ফল, দুধ এবং বরফ একসাথে ব্লেন্ড করলেই তৈরি হয়ে যাবে ফলের স্মুদি। গর্ভাবস্থায় বিকালবেলার স্বাস্থ্যকর নাস্তা হিসেবে ফলের স্মুদির তুলনা নেই।

জিরাপানি

গর্ভাবস্থায় একইসাথে হাইড্রেটেড থাকার জন্য এবং বমিভাব দূর করার জন্য জিরাপানি খুবই উপকারী একটি পানীয়। বিশেষ করে, জিরাপানির টক-ঝাল-মিষ্টি স্বাদ ক্ষুধা ভাব তৈরি করতেও সাহায্য করে বলে, খাবার খাওয়ার পূর্বে অল্প পরিমাণে জিরাপানি পান করে নিলে খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি পায়।

আইস টি

আইস টি সকালে বমিভাব কাটানোর জন্য এবং শরীর হাইড্রেটেড রাখার জন্য খুব ভালো কাজ করে থাকে। একইসাথে আইসড টি তৈরিতে ব্যবহৃত লেবুও শরীরে ভিটামিন-সি এর অভাব পূরণে কাজ করে থাকে। তবে আইস টি তৈরির সময় খেয়াল রাখতে হবে, প্রতিদিনের ক্যাফেইন গ্রহণের সঠিক পরিমাণে চাইতে বেশী ক্যাফেইন যেন গ্রহণ করা না হয়ে যায়।

দুধ

দুধ ও দুগ্ধজাত সকল ধরণের খাদ্য গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রয়োজনীয়। কারণ এই সকল খাদ্য উপাদানে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিনস এবং ক্যালসিয়াম। একইসাথে গর্ভাবস্থায় দুধ পানের ফলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে। যে কারণে গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন এক গ্লাস পরিমাণ দুধ পান করা উচিৎ।

পানি

পানি

গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় উপাদান হচ্ছে পানি। পানি গ্রহণের মাধ্যমে শরীর সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকে। বিশেষ করে, গর্ভবতী মায়েদের জন্য, বুকের দুধ তৈরির ক্ষেত্রে পানি খুবই জরুরি একটি উপাদান। যেকোন গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করা আবশ্যিক।

কাঁচা আমের শরবত

গ্রীষ্ম কালে গর্ভবতী মায়েদের জন্য কাঁচা আমের টক-ঝাল-মিষ্টি শরবতের চাইতে দারুণ কিছু আর নেই। বলা হয়ে থাকে টক স্বাদের এই শরবত পানিশূন্যতার প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে থাকে। একইসাথে এই পানীয়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনস, যা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।

সবজির জ্যুস

যেহেতু গর্ভাবস্থায় অনেক মায়ের খাবার খাওয়ার প্রতি অনাগ্রহী হয়ে ওঠেন, সেক্ষেত্রে সবজিও তাদের কম খাওয়া হয়। এতে করে শরীর তার প্রয়োজনীয় ও জরুরি পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হয়। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে সবজির জ্যুস বানিয়ে খেলে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ পাবে এবং হাউড্রেটেড থাকবে।

পুদিনা পাতার চা

সকালবেলা এক কাপ পুদিনা পাতার চা খেলে চমৎকারভাবে বমিভাব দূর হয়ে যায়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় এই চায়ের রয়েছে আরও নানান উপকারিতা- এটা রুচি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে, বমিভাব কমায়, মাথা ঘোরা ভাব দূর করে। পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে এক কাপ পরিমাণ পানিতে কিছু পরিমাণ পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর ছেঁকে এই পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চায়ের মতো পান করতে হবে।

এই সকল প্রকার পানীয় নিয়মিত পান করার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেন পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার অবশ্যই থাকে। কারণ গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্যে পুষ্টিকর খাবার খুবই প্রয়োজনীয়। 

সূত্র: Boldsky

প্রিয় লাইফ/ আর বি