কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

পবিত্র কুরআনুল কারিম। ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র কুরআনের যে আয়াতগুলো আপনার হতাশা দূর করবে

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮, ১০:৪৬
আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮, ১০:৪৬

(প্রিয়.কম) মানুষ অনেক সময় বিষণ্ন হয়। ভেঙ্গে পড়ে। অথচ আল্লাহপাক মানুষকে সর্বত্তোম করে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহপাক মানুষকে এমন উন্নত পর্যায়ের চিন্তা, উপলব্দি জ্ঞান ও বুদ্ধি দান করা হয়েছে, যা অন্য কোন সৃষ্টিকে দেয়া হয়নি।

১. আপনি-ই শ্রেষ্ঠ: পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম কাঠামোয় (সূরা-আততীন, আয়াত- ৪) একজন মানুষ একটি পশু থেকে আরও খারাপ হতে পারে, কিন্তু তিনি আবার ফেরেশতাদের চেয়েও ভালো হতে পারেন। তবে আপনি যদি ফেরেশতাদের থেকে ভালো হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আল্লাহর দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে হবে।

২. আপনার কাছে যা আছে তার উপর সাফল্য নির্ভর করে না: আপনি হয়াতো ভালো কাজ করেন, ভালো গাড়ি আছে, ভালো বাড়ি আছে। এই বিষয়গুলো আপনাকে সাফল্য এনে দিতে পারে না। আল্লাহপাক যেই গুণ ও বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছেন সেই বিষয়গুলো আপনার মাঝে আছে কিনা সেটাই হচ্ছে বড় বিষয়। আল্লাহপাকের নির্দেশিত গুণ ও বৈশিষ্ট্যগুলো যদি আপনার মাঝে থাকে তাহলেই আপনি একজন সফল মানুষ। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, নামাজ কায়েম করে। এবং যে রিজিক আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে খরচ করে। আর যে কিতাব তোমাদের ওপর নাজিল করা হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন) এবং তোমার আগে যেসব কিতাব নাজিল করা হয়েছিল সে সবগুলোর ওপর ঈমান আনে আর আখেরাতের ওপর একীন রাখে। এ ধরনের লোকেরা তাদের রবের পক্ষ থেকে সরল সত্য পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং তারা কল্যান লাভের অধিকারী। (সূরা-বাকারা, আয়াত-৩-৫)

৩. আপনি শ্রেষ্ঠ জাতি: হজরত আদম (আ.) থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত সর্বোত্তম জাতি হলো আমাদের নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর জাতি বা উম্মত। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, এখন তোমরাই দুনিয়ায় সর্বোত্তম দল। তোমাদের কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে মানুষের হিদায়াত ও সংস্কার সাধনের জন্য। তোমরা নেকীর হুকুম দিয়ে থাকো, দুষ্কৃতি থেকে বিরত রাখো এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনো। এই আহলি কিতাবরা ঈমান আনলে তাদের জন্যই ভালো হতো। যদিও তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ঈমানদার পাওয়া যায়, কিন্তু তাদের অধিকাংশই নাফরমান। (সূরা-আল ইমরান, আয়াত-১১০)

৪. আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করেছেন: পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, এতো আমার অনুগ্রহ, আমি বনী আদমকে মর্যাদা দিয়েছি এবং তাদেরকে জলে স্থলে সওয়ারী দান করেছি, তাদেরকে পাক-পবিত্র জিনিস থেকে রিযিক দিয়েছি এবং নিজের বহু সৃষ্টির ওপর তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রাধান্য দিয়েছি। (সূরা-বনী ইসরাঈল, আয়াত-৭০)

৫.এই জীবন অস্থায়ী: পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রিজিক সম্প্রসারিত করেন এবং যাকে চান মাপাজোকো রিজিক দান করেন। এরা দুনিয়ার জীবনে উল্লসিত, অথচ দুনিয়ার জীবন আখেরাতের তুলনায় সামান্য সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়। (সূরা-আর রাদ, আয়াত-২৬)

এ আয়াতের পটভূমি হচ্ছে, সাধারণ মূর্খ ও অজ্ঞদের মতো মক্কার কাফেররাও বিশ্বাস ও কর্মের সৌন্দর্য বা কদর্যতা দেখার পরিবর্তে ধনাঢ্যতা বা দারিদ্রের দৃষ্টিতে মানুষের মূল্য ও মর্যাদা নিরূপণ করতো। তাদের ধারণা ছিল, যারা দুনিয়ায় প্রচুর পরিমাণ আরাম আয়েশের সামগ্রী লাভ করছে তারা যতই পথভ্রষ্ট ও অসৎকর্মশীল হোক না কেন তারা আল্লাহর প্রিয়। আর অভাবী ও দারিদ্র পীড়িতরা যতই সৎ হোক না কেন তারা আল্লাহর অভিশপ্ত। এ নীতির ভিত্তিতে তারা কুরাইশ সরদারদেরকে নবী (সা.) এর গরীব সাথীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করতো এবং বলতো, আল্লাহর তার সাথে আছেন তোমরা দেখে নাও। এ ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক করে বলা হচ্ছে, রিজিক কমবেশী হবার ব্যাপারটা আল্লাহর অন্য আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট। সেখানে অন্যান্য অসংখ্য প্রয়োজন ও কল্যাণ-অকল্যাণের প্রেক্ষিতে কাউকে বেশি ও কাউকে কম দেয়া হয়। এটা এমন কোন মানদ- নয় যার ভিত্তিতে মানুষের নৈতিক ও মানসিক সৌন্দর্য ও কদর্যতার ফায়সালা করা যেতে পারে। মানুষের মধ্যে কে চিন্তা ও কর্মের সঠিক পথ অবলম্বন করেছে এবং কে ভুল পথ, কে উন্নত ও সৎগুণাবলী অর্জন করেছে এবং কে অসৎগুণাবলী-এরি ভিত্তিতে মানুষে মানুষে মর্যাদার মূল পার্থক্য নির্ণীত হয় এবং তাদের সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের আসল মানদ- ও এটিই। কিন্তু মূর্খরা এর পরিবর্তে দেখে, কাকে ধন-দৌলত বেশি এবং কম দেয়া হয়েছে।

৬. অন্যের থেকে শিক্ষা নেয়া: পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, তারপর সে তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বসে গেলো এবং বলতে লাগলো, ‘হায় ইউসুফ’- সে মনে মনে দুঃখে ও শোকে জর্জরিত হয়ে যাচ্ছিল এবং তার চোখগুলো সাদা হয়ে গিয়েছিল। ছেলেরা বললো, ‘আল্লাহর দোহাই! আপনি তো শুধু ইউসুফের কথাই স্মরণ করে যাচ্ছেন। অবস্থা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, তার শোকে আপনি নিজেকে দিশেহারা করে ফেলবেন অথবা নিজের প্রাণ সংহার করবেন ‘ সে বললো, ‘আমি আমার পেরেশানি এবং আমার দুঃখের ফরিয়াদ আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে করছি না। আর আল্লাহর ব্যাপারে আমি যতটুকু জানি তোমরা ততটুকু জানো না।’ (সূরা-ইউসুফ, আয়াত-৮৪-৮৬)

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ