সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ। ছবি: সংগৃহীত।
গভীর জীবনবাদী ঔপন্যাসিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের প্রয়াণ দিবস আজ
আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:৫২
(প্রিয়.কম) গভীর জীবনবাদী ও নিরীক্ষাধর্মী ঔপন্যাসিক এবং প্রখ্যাত ভারতীয় সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের আজ পঞ্চম প্রয়াণ দিবস। ১৯৩০ সালে জন্ম মুর্শিদাবাদের খোশবাসপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া এই বাঙালি লেখক মাত্র নয় বছর বয়সে মাকে হারিয়ে পলাতক কিশোর জীবন অতিবাহিত করেছেন।
সিরাজের উপন্যাস মূলত গ্রামীণ জীবনের দুঃখ-আনন্দ আর ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। যদিও নিজেকে তিনি বক্তব্যজীবী লেখক হিসেবে পরিচয় করাতে ভালোবাসতেন, কিন্তু সিরাজ ছিলেন আরো গভীর বোধসম্পন্ন ভাবনার অধিকারী। তিনি তার চিন্তায়-চেতনায় প্রত্যেকটি জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য ও আত্মমর্যাদা রক্ষার জায়গাটিকে আলাদা স্থান দিয়েছেন। কিন্তু একই সাথে আবার, লেখকসত্ত্বার স্বাধীনতাকেও তিনি লাগামছাড়া করেননি। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজকে আমরা তাই সংকীর্ণতার উর্ধ্বে মৌলিক লেখক বলতে পারি।
তার সাহিত্য ও জীবন বোধে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইসলাম ও সনাতন সংস্কৃতির এক অপরূপ মেল বন্ধন বিদ্যমান ছিল। অসংখ্য ছোট গল্পের জন্য সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ বাংলা সাহিত্যে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন, এমন কি আসন গড়ে থাকবেন বিশ্ব সাহিত্যেও। কিশোর ও ক্ষুদে পাঠকদের জন্য তার অনন্য সৃষ্টি ‘গোয়েন্দা কর্নেল’ চরিত্রটি।
প্রচণ্ড আত্মসম্মান বোধসম্পন্ন সিরাজ দীর্ঘদিন সংবাদপত্রে কাজ করলেও কখনো মাথা নিচু করেননি কোনো মালিকানাগোষ্ঠীর কাছে। দীর্ঘদিন বড় পত্রিকায় কাজ করলেও নিজের সেরা উপন্যাসগুলো তিনি ছাপিয়েছেন ছোট পত্রিকা বা লিটলম্যাগগুলোতেই।
আত্মপ্রচার বিমুখ এবং সদা হাসিমুখ এই সাহিত্যিক ‘অলীক মানুষ’ উপন্যাসের জন্য পান ভারত সরকারের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। এছাড়াও বঙ্কিম পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কারসহ জীবনের নানা পর্বে সম্মানিত হয়েছেন নানা পদক এবং ভালোবাসায়। তার উল্লেখিত উপন্যাসের মধ্যে ‘নীলঘরের নটী’, ‘হিজলকন্যা’, ‘তৃণভূমি’, ‘উত্তর জাহ্নবী’, ‘অলীক মানুষ’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
২০১২ সালের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন এই বাংলা সাহিত্যের এই গুণী সাহিত্যিক।
প্রিয় সাহিত্য/গোরা