কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

নৃত্যশিল্পী সুস্মিতা অধিকারী

নৃত্যেই আনন্দ সুস্মিতার, হতে চান কোরিওগ্রাফারও

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:১৩
আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:১৩

(প্রিয়.কম) শৈশবে মা নমিতা অধিকারীর হাত ধরে যাওয়া হয়েছিল শিশু একাডমিতে। মা তাকে নাচ শেখার স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার পর থেকেই সুস্মিতা অধিকারীর নৃত্যচর্চা শুরু। নাচ শিখতে শিখতেই এই শিল্পের প্রতি তার ভালোবাসা ও টান জন্মে। একটা পর্যায়ে গিয়ে নাচই হয়ে যায় তার জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ।

নৃত্যশিল্পী সুস্মিতা পড়ালেখা করছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি)  স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে। নাচ শেখায় মায়ের পাশাপাশি বাবা বিমল অধিকারী ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকেও সমান সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি।

সুস্মিতা জানান, এই নাচের জন্য স্কুলজীবন থেকেই সবার কাছ থেকে পেয়েছেন অফুরান ভালোবাসা। শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে নাচই তাকে জনপ্রিয় করে তোলে।নৃত্যে পারদর্শিতার সুফল হিসেবে স্কুলে কখনো বেতন দিতে হয়নি তাকে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমী ও বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শিখেছেন সুস্মিতা। নাচের ওপর দারুণ দক্ষতার জন্য ‘শিশুদের জন্য’, ‘সূচনা’, ‘তারুণ্য নেটওয়ার্ক’, ‘সংশপ্তক’ থেকে পেয়েছেন প্রথম পুরস্কার।

সুস্মিতা নাচ ছবি ০১

এর পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি সুস্মিতাকে। নাচের জন্য পেয়েছেন একের পর এক পুরস্কার।

স্কুলে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বহুবার পুরস্কার জিতেন এই তরুণী। সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ ও কিংবদন্তি অভিনেত্রী কবরী সারোয়ারের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তিনি।

নিজের সবচাইতে প্রিয় মুহূর্তের কথা জানাতে গিয়ে সুস্মিতা বলেন, 'আমার সবচাইতে প্রিয় মুহূর্তটি হলো যখন চাষী নজরুল ইসলাম স্যারের হাত থেকে নাচের জন্য পুরস্কার নিলাম।' 

আধুনিক, লোকগীতিসহ সব ধরনের গানে নাচ করা হলেও সুস্মিতার মূল আগ্রহ ধ্রুপদী নৃত্যে। এ ধরনের নাচই বেশি করেন তিনি। ইতিমধ্যে এটিএন বাংলা, বাংলাভিশন, মাছরাঙা এবং বিটিভিতে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে নেচেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নাচের পাশাপাশি  তিন বছর ধরে নিজের বাড়িতে শিশুদের নাচও শেখাচ্ছেন তিনি।

একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে নিজের প্রতি বাড়তি খেয়াল ও যত্ন নিতে হয় সুস্মিতার। নিজ স্বাস্থ্যের পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হয় প্রাত্যহিক নৃত্যচর্চার প্রতিও। এসব কিছু মানিয়ে কীভাবে চলেন তিনি?

'পড়ালেখার অতিরিক্ত চাপের জন্য নিয়মিত নাচ প্র্যাকটিস (অনুশীলন) করা হয় না। তবে শুক্রবার ও শনিবার টানা দুই ঘণ্টা ধরে নাচ প্র্যাকটিস করি। আসলে নাচের জন্য নিয়মিত চর্চা করা খুবই দরকার। আর নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য আমি অনেক বেশি ফল ও পানি খাই। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ’, উত্তরে বলেন সুস্মিতা।

সুস্মিতা নাচ ছবি ০২

সুস্মিতা জানান, বিগত ১৭ বছর ধরেই নাচই তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে। আর এ কারণেই নাচ নিয়ে আছে বহু আনন্দ-বেদনার গল্প। প্রিয়.কমকে তেমনই একটি মজার ঘটনা জানান এই নৃত্যশিল্পী। একবার মঞ্চে নাচের মধ্যেই মাথা থেকে পরচুলা খুলে গিয়েছিল তার।

নাচের জন্য আহতও হতে হয়েছে সুস্মিতাকে। একবার অনুষ্ঠানে নাচতে গিয়ে দুর্ঘটনার জন্য দারুণ আহত হতে হয় তাকে। এর পর বেশ কয়েক মাস চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন তিনি।

বহু ঘটনা ও দুর্ঘটনার সঙ্গী নাচকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চান সুস্মিতা। প্রিয় নৃত্যশিল্পী ফারজানা রিয়ার মতো নাচার ইচ্ছা তার বহুদিনের। পাশাপাশি ইভান শাহরিয়ার সোহাগের মতো একজন কোরিওগ্রাফার হওয়ার স্বপ্নও আছে তার।

প্রতিদিনের ব্যস্ততা, পড়ালেখা ও শিশুদের নাচ শেখানোর পর নিজের জন্য সময় খুব কমই মেলে সুস্মিতার। এর পরও সময় করে বাসায় নাচের অনুশীলন করেন তিনি। 

প্রিয় লাইফ/কে এন দেয়া