কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

‘ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক নষ্ট করতে ঠাকুরপাড়ায় হামলা’

আয়েশা সিদ্দিকা শিরিন
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:৪২
আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:৪২

(প্রিয়.কম) আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘একটি অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা চালিয়ে ভারতের সঙ্গে বিরাজমান সুসম্পর্ক নষ্ট করতে চাইছে। যারা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বিনষ্ট করতে চায়, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।’

২০ নভেম্বর রোববার রংপুর সদর উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ঠাকুরপাড়া গ্রাম পরিদর্শনে গিয়ে বেলা সোয়া ১২টার দিকে এক সংবাদ বিফ্রিংয়ে এ সব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, নাসিরনগর, রামু ও রংপুরের ঠাকুরপাড়ার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ঠাকুরপাড়ায় হামলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে। কিন্তু এসব অপকর্ম করে, পানি ঘোলা করে, অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। ঠাকুরপাড়ায় হামলায় জড়িত প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা হবে, এটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ। তারা যতই প্রভাবশালী হোক, কেউ রেহাই পাবে না। ইতিমধ্যে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। 

হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নয় পরিবারকে দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা, ভাঙচুর হওয়া সাত পরিবারকে ৭০ হাজার টাকা এবং মন্দির নির্মাণের জন্য ১০ হাজার টাকা অনুদান দেন ওবায়দুল কাদের। সে সময় তার সঙ্গে ছিলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

প্রসঙ্গত, রংপুরের সদর উপজেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামের মৃত খগেন রায়ের ছেলে টিটু রায় ফেসবুকে ‘ধর্মীয় অবমাননাকর’ ছবিযুক্ত একটি স্ট্যাটাস দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এই অভিযোগে গত ২৯ অক্টোবর ওই এলাকার লালচাঁদপুর গ্রামের মুদি দোকানি আলমগীর হোসেন অভিযুক্ত হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে ওই যুবককে গ্রেফতারের দাবিতে গত ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার এলাকাবাসী বিক্ষোভও করেন।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১০ নভেম্বর শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটায় বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হলে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওই এলাকায় তিনটার মধ্যেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সাড়ে তিনটার দিকে খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ ও বালাবাড়ি গ্রাম এবং পাশের মমিনপুর গ্রামের ৮ থেকে ১০ হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও লাঠি ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ছররা গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সংঘর্ষ চলাকালেই হামলাকারীদের একটি একদল ঠাকুরপাড়ায় গিয়ে কয়েকটি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ে। সেসময় কমপক্ষে ২০ জন আহত ও একজন নিহত হয়েছেন। হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গঙ্গাচড়া ও কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। দুই মামলায় অজ্ঞাত ২ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের পরে রাতেই গঙ্গাচড়া, তারাগঞ্জ ও সদর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৫৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। গত ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার ঠাকুরপাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের জানান, টিটু রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ১৫ নভেম্বর বুধবার টিটুকে রংপুরের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানায় পুলিশ। পরে আদালতের বিচারক দেবাংশু কুমার সরকার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রিয় সংবাদ/কামরুল