কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হলুদ সাগরের পানিতে এই ধান উৎপাদন করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

লবণাক্ত সহিষ্ণু ধানের রমরমা ব্যবসা চলছে চীনে

আরিফ আরমান বাদল
সহ-সম্পাদক, বিজনেস এন্ড টেক
প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:৫২
আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:৫২

(প্রিয়.কম) চীনা বিজ্ঞানীদের কল্যাণে এবার মুখে ভাত জুটবে বিশ্বের প্রায় ২০০ মিলিয়ন মানুষের। লবণাক্ততা অনেক দেশেরই খাদ্য ঘাটতির একটি বড় সমস্যা। আর এবার চীনে লবণ সহিষ্ণু ধান উদ্ভাবিত হলো। 

চীনের শ্যাংডঙের কিংদাওয়ের স্যালাইন-অ্যালকালি টলারেন্ট রাইস রিসার্চ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার লবণাক্ত সহিষ্ণু এই ধানের গবেষণা পরিচালনা করে। সেন্টারটি লবণাক্ত পানিতে ৬.৫ থেকে ৯.৩ টন পর্যন্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন করেছে। এই ফলাফল বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশাকেও ছাঁপিয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা প্রত্যাশা করেছিল হেক্টর প্রতি ৪.৫ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হবে। অথচ সেটি সাড়ে ৯ টনে গিয়ে পৌছেছে। 

চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হলুদ সাগরের পানিতে এই ধান উৎপাদন করা হয়েছে। ধানের নতুন এ জাতের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইউয়ান মি’। ধানগুলো মাঠে নয় সমুদ্র সৈকতে উৎপাদন করা হয়েছে। সেখানে সাগরের পানিই সরবরাহ করা হয়েছে। চীনের প্রায় ১০ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে লবণ এবং ক্ষারের মাত্রা অনেক বেশি। অর্থাৎ, নতুন এই আবিষ্কারের মাধ্যমে দেশটি এসব জমি ব্যবহার করে ৫০ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে পারবে যা অন্তত ২০০ মিলিয়ন মানুষের মুখে খাবার জোগাবে। চীনা কৃষিবিজ্ঞানী ইউয়ান লংপিংয়ের নামানুসারে এই ধানের নামকরণ করা হয়েছে। তাকে ‘চীনা হাইব্রিড ধানের জনক’ বলা হয়। তার মতে এই জাতের ধান যদি চীনের লবণাক্ত জায়গাগুলোতে ফলানো যায় তবে চীনের ধান উৎপাদনের পরিমাণ ২০ শতাংশ বেড়ে যাবে। এমনকি এটি খেতেও দারুণ। 

নিং মেং নামের এক চীনা গ্রাহক তার প্রেমিকের জন্য বাজার থেকে ‘ইউয়ান মি’ জাতের ধান কেনেন। তিনি চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেন, এই চাল সুস্বাদু। আমার প্রেমিক জানিয়েছে এটি তার গ্রামে দেখা অল্প আঁচে রান্না করা ভাতের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। এটা সত্যিই দারুণ। এ ধরণের ধানে ক্যালসিয়াম এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বেশি থাকে কারণ লবণাক্ত পানিতে এগুলো বেশি থাকে। তাছাড়া লবণ সহিষ্ণু ধান দেহের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ো নিধনেও সহায়তা করে। 

তবে এক প্যাকেটর ইউয়ান মি ধানের দাম ৫.৭২ পাউন্ড যা সাধারণ ধানের থেকে আটগুণ দামী। এটি ১কেজি, ২কেজি, ৫কেজি এবং ১০ কেজির প্যাকেটে বিক্রি হচ্ছে। তবে এটি গ্রাহকদের জন্য কোন সমস্যা নয়। কেননা গত মাসেই প্রায় ১ হাজার গ্রাহক এটি অর্ডার করেছে। আগস্ট মাসে ৬ টন বিক্রি হয়েছে। লংপিং টিমের সাথে কর্মরত ইউয়ান চি নামের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের সেলস ম্যানেজার জানান, এ বছরের শেষে ১০ মিলিয়ন চীনা ইউয়ান লাভ করার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট 

 প্রিয় সংবাদ/মিজান