কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: শামসুল হক রিপন

মার্চে নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করব: চঞ্চল চৌধুরী

মিঠু হালদার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১৮:০৩
আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ১৮:০৩

(প্রিয়.কম) চলচ্চিত্রে নানান ধারার চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করে চলেছেন চঞ্চল চৌধুরী। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কাজ করছেন নিয়মিত। দিনে দিনে নিজেকে ঝালিয়েও নিচ্ছেন, পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। গত বছর হুমায়ূন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘দেবী’ চলচ্চিত্রে ‘মিসির আলী’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এখন চলছে সিনেমাটির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। ১৪ জানুয়ারি রাতে প্রিয়.কমের সঙ্গে আলাপকালে জানালেন, তিনি নির্মাতা গোলাম সোহরাব দোদুলের পরিচালনায় নতুন একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। এ সময় নতুন ছবিতে অভিনয় ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেছেন এই অভিনেতা।

প্রিয়.কম: কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘দেবী’ চলচ্চিত্রে ‘মিসির আলী’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আপনি। ছবিটির শুটিং তো গত বছর শেষ হয়েছে। এর পর তো আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি…

চঞ্চল চৌধুরী: গত বছরই সিনেমাটির শুটিং শেষ হয়েছে। এখন এডিটিং ও মিউজিকের কাজ চলছে। ডাবিংয়ের কাজ এখনও শুরু হয়নি। হবে খুব তাড়াতাড়ি। জয়ার (জয়া আহসান) সঙ্গে সর্বশেষ আমার প্রায় মাসখানেক আগে কথা হয়েছে। ও জানাল, এডিটিং অনেক ভালো লেগেছে ওর। হয়তো এ বছরই ছবিটি ‍মুক্তি পাবে। আমি যতটুকু জানি।

প্রিয়.কম: ‘দেবী’র কাজ তো শেষ, নিশ্চয়ই এর মধ্যে নতুন নতুন সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন। সেখান থেকে কোন সিনেমার গল্প কিংবা প্রজেক্ট আপনার মনে ধরেনি?

চঞ্চল চৌধুরী: নতুন ফিল্মের কথা বলতে গেলে, আসছে মার্চে নতুন একটি সিনেমার শুটিং শুরু করার কথা। মোটামুটি ফাইনালও। নির্মাতা গোলাম সোহরাব দোদুল তার ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন, সেটিতে অভিনয় করতে যাচ্ছি। আর নাম কী ঠিক করা হয়েছে, এটা দোদুলই বলতে পারবে। কারণ আমি এখনও চিত্রনাট্য হাতে পাইনি। তবে গল্পটি আমাকে শুনেয়েছে। আর দোদুলের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন কাজ করেছি। অনেক নাটক এবং আর্লি এইজ থেকে দোদুলের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব এবং কাজের সম্পর্ক। ওর সিরিয়াল ও এক ঘণ্টার প্রচুর নাটকের কাজ করেছি। ওর প্রথম ছবিতে ও আমাকে কাস্ট করেছে, সে কাজটাও করব। সে হিসেবে এ বছরই আরেকটি নতুন ফিল্মে অভিনয় করব।

প্রিয়.কম: আপনার সিনেমার ক্যারিয়ারের দিকে তাকালে বোঝা যায়, বেশ ধীর লয়ে চলছেন, কোনো তাড়াহুড়ো নেই, ভালো কাজের জন্য অপেক্ষাও করেন…

চঞ্চল চৌধুরী: প্রথম কথা হচ্ছে, দোদুল আমার বন্ধু বলে কথা নয়, ওর সঙ্গে যতগুলো কাজ করেছি, ও একজন ভালো নির্মাতা বলেই। ওর কাজের আলাদা একটা ঢং আছে। সেটা ও স্টোরি টেলিং বলি অথবা ওর মেকিং বলি, সবকিছু ওর একটা নিজস্বতা রয়েছে। আর আরেকটা বিষয় হলো, ও যে গল্পটা নির্বাচন করেছে, তার জন্যই আমি বলেছি, হ্যাঁ এ কাজটি করব।

প্রিয়.কম: নতুন এ ছবিটিতে কাজ করতে আগ্রহী হওয়ার কারণ ঠিক কী ছিল?

চঞ্চল চৌধুরী: আমি এখন পর্যন্ত মোট ছয়টি ছবিতে অভিনয় করেছি, তার মধ্যে পাঁচটি মুক্তি পেয়েছে। আরেকটি অপেক্ষমাণ। সেদিক থেকে বলতে গেলে, একদমই আলাদা গল্প ও আলাদা চরিত্র। একদমই গল্পের ধরণ আলাদা। আমি মনে করি, এখন বাংলাদেশে যে ধরনের ছবি হচ্ছে, তার থেকে ভিন্নধারার একটি গল্প। সে ছবির গল্প ও চরিত্রটি আলাদা হওয়ার কারণে, আমি রাজি হয়েছি।

প্রিয়.কম: আপনার প্রত্যেকটি ছবির চরিত্রের কথা বলতে গেলে বেশ ভিন্নতা থাকে, সেদিক থেকে এ সিনেমাটি চরিত্র ঠিক কেমন?

চঞ্চল চৌধুরী: আমাদের এখন সমসাময়িক সমস্যাগুলো-আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি; কিংবা আমাদের বর্তমান বাংলাদেশে যে ধরনের ক্রাইসিসগুলো রয়েছে। যার সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানে রাজনীতির সঙ্গে কিছু কিছু বিষয় জড়িত রয়েছে। সেটা নারী পাচার বলি, ড্রাগস বলি-এই সমস্ত, মানে সব কিছু মিলিয়েই একটা গল্প। বলতে পারি, আমাদের বর্তমান সময়ের জন্য উপযোগী একটা গল্প।

প্রিয়.কম: ছবিটিতে অভিনয়ের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন?

চঞ্চল চৌধুরী: আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হইনি। আমি তো ওই তথাকথিত সাইনিং সিস্টেমে কাজ করি না। যার গল্প পছন্দ হয়, আস্থা থাকে কিংবা যে পরিচালকের কাজটা করলে ভালো কিছু হবে, তার কাজটিই করা হয়। আর দোদুলের সঙ্গে তো কাজের অনেক অভিজ্ঞতা, যার কারণে ওর সঙ্গে টিউনিংটা বেশ ভালো। মৌখিক স্বীকারের জায়গা থেকেই কাজটি করা কিংবা বিশ্বাসের জায়গার কথাও বলা যায়।

প্রিয়.কম: তবে প্রস্তুতি কেমন চলছে?

চঞ্চল চৌধুরী: অলরেডি মানসিক প্রস্তুতি তো শুরু হয়ে গেছে। মার্চে শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তখন শুটিং শুরুর আগে ২০-২৫ দিন অন্য কোনো কাজই করব না এবং কাজ যতদিন চলবে, ততদিন ফাঁকে অন্য কোনো কাজ করব না। সব মিলিয়ে দু-তিন মাস এই কাজের জন্য সময় দিতে হবে। আর সহ-শিল্পীর বিষয়গুলো নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে কথা বললে ভালো হবে। ডিটেইলটা পরিচালক বলতে পারবেন।  

প্রিয়.কম: একজন মানসম্পন্ন অভিনেতার মধ্যে ভালো কাজের ক্ষুধা তো সব সময়ই থাকে। ‘আয়নাবাজি’র পর ‘দেবী’ করলেন। এর পর আবার বিরতি। বলতে চাচ্ছি, এই যে বিরতি, ভালো কাজের ক্ষুধা এই সময়টাতে আপনাকে নিশ্চয়ই একটা মানসিক টেনশনের মধ্যে রেখেছে?

চঞ্চল চৌধুরী: একটা কাজ যখন করি, পরবর্তী কাজটি কী করব, সেটি নিয়ে কিন্তু চিন্তায় থাকি। এখন যেটা করছি, সেটা করছিই। সামনে কী কাজ করব? যখন ‘আয়নাবাজি’ করেছি, তখন একটা বিষয়ই মাথায় কাজ করছিল, এর পর আমি কী করব? বর্তমানের চাইতে তার পরবর্তী কাজটি নিয়েই আমার মধ্যে টেনশন কাজ করে। এটা নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা, সময় পার করেছি। তার পর কিন্তু যখন ‘দেবী’র অফার আসল, তখন আবার সেই বিষয়, দেবী করাটা ঠিক হবে কি না! দর্শকের যে প্রত্যাশা আমার কাছে রয়েছে, সেই জায়গা আমি কতটুকু পূরণ করতে পারবে, সেই জায়গাটায় হিসেব-নিকাশ মিলিয়ে দেবীতে অভিনয় করেছি।

আমি বছরে দুইটা না হয় একটা ছবিতে কাজ করব, যার কারণে দর্শকের ভালো লাগবে। তাদের চাহিদা পূরণ হবে। সে রকম গল্প ও চরিত্র আমি খুঁজতে থাকি। সেই ধারাবাহিকতায় দোদুলের কাজটা করব। আমি একটা কথা বলি, আমি এমন কোনো সিনেমা কিংবা চরিত্রে অভিনয় করব না, যেখানে দর্শক এসে আশাহত হবে। দর্শকের কাছে দায়বদ্ধতার জায়গাটতেই আমার বেশ মাথাব্যথা রয়েছে।

দর্শকদের ভালোবাসা কিংবা চাওয়ার জন্যই যেহেতু আজ আমি এখানে, তাই প্রথম অ্যাটেনশন আমার তাদের প্রতি। ওই জায়গা থেকে আমি চিন্তা করি। দোদুলের কাজের আগে কিংবা দেবীর আগে কিংবা তারও আগে-পরে অনেক কাজের অফার আসছে। মিনিমাম ৩০টা হবে। সে কাজগুলো আমি করি নাই। কারণ আমার মনে হয়নি এ কাজগুলো আমার করা উচিত। নানান দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কারণেই কিন্তু আমি কাজগুলো করি নাই।

প্রিয়.কম: এই যে এতগুলো সিনেমাতে অভিনয়ের প্রস্তাব কিংবা এত এত টাকার বিষয়, এই যে লোভ সংবরণ করে পথ চলা, এই জায়গাটা কীভাবে মেনটেইন করেন?

চঞ্চল চৌধুরী: আমি অর্থনৈতিকভাবে চিন্তা করি, আমার চলার জন্য যতটুকু দরকার, সেই অর্থটুকু আমার কাজের বিনিময়ে আসলে আমি খুশি। আমার ব্যাংকে দু-চার কিংবা পাঁচ-দশ কোটি টাকা ব্যালেন্স থাকতে হবে, সেটা আমি কখনই চাই না। অথবা আমাদের অনেকেই তো অভিনয়ের পাশাপাশি অনেক ধরনের ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু আমি কখনই তা হতে চাইনি। আমি আমার কাজটা মনোযোগ দিয়ে করতে চাই। আমি যে কাজটা করি, সেটা আমার পেশা, সেটা আমার ভালোবাসা কিংবা কমিটমেন্টের জায়গা, ডেডিকেশনটা এখানে আমার শত ভাগ আছে।

সুন্দরভাবে বাঁচার জন্য যা যা প্রয়োজন তার বাইরে আর কিছুই দরকার নেই আমার। ঢাকার শহরে আমার ফ্ল্যাট, গাড়ি আছে। বাচ্চার স্কুল খরচ, পরিবারের অন্যান্য খরচ যা যা দরকার আমি মোটামুটি যা চলতে পারি, ঐটুকুতেই আমি হ্যাপি। এর বাইরে লোভটা আমার খুব বেশি একটা নেই, যার কারণে আমি ২০-৫০টা ছবির অফার পেলেও সেটি বাদ দিয়ে আমি দুই বছরে একটি ছবিতে অভিনয় করতে পারি। যা আয় করি, তা হয়তো সমান হয়ে যায়, তার পর যতটুকু উদ্ধৃত থাকে সেটুকুই নিয়ে আমি হ্যাপি।

আমি কখনোই ওই স্বপ্ন দেখি নাই সিনেমা, নাটক করে কোটি কোটি টাকা আয় করব। আর আমি নীতিগতভাবে কখনো চাইনি আমি কোটি কোটি টাকার মালিক হই। আমার সম্মান এবং দর্শকের ভালোবাসা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ‘মনপুরা’র পর আমি যতগুলো ছবি অফার পেয়েছি, সবগুলো করলে এখন ১০০ কিংবা ১৫০ ছবি হয়ে যেত। আমাকে অপছন্দ করার মানুষ মিডিয়াতে কিন্তু খুব কম আছে। যারা আমাকে অপছন্দ করে দুটি কারণে: এক হচ্ছে যে, আমি তাদের কাজের সঙ্গে মার্চ করতে পারি না, কিংবা তাদের কাজটা আমার পছন্দ না।

প্রিয়.কম: আপনি বলছিলেন, আপনার অমন কোনো স্বপ্ন নেই যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দরকার নেই, প্রয়োজনের বাইরে। তবে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো স্বপ্ন আছে, যেটি আপনাকে তাড়িয়ে বেড়ায়…

চঞ্চল চৌধুরী: সেদিক থেকে বলতে গেলে আমার স্বপ্ন এখন একটাই, আমার একটা ছেলে সন্তান, নাম শৈশব রোদ্দুর শুদ্ধ, ও যেন মানুষের মতো মানুষ হয়। আর আমার যতটুকু অর্জন আছে, সেটি যেন ওর কর্মে ধরে রাখতে পারে। এটাই আমার স্বপ্ন। এ ছাড়া আমার কোনো স্বপ্ন নেই। ব্যস এটুকুই। এখন ওর স্ট্যাবলিশমেন্টে ছাড়া কোনো স্বপ্ন নেই।

প্রিয়.কম: একটু সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির প্রসঙ্গে কথা বলতে চাই। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে তো অনেক সমস্যা, অনেকেই তা দূর করার কথা বলেন, বিশেষ করে শিল্পীদের কথাই বলি। কিন্তু এর পর একটা সময় গিয়ে তাদের আর সেভাবে সে সমস্যাগুলো দূর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও একটা সময় গিয়ে, তাদের আর সে পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখা যায় না। আমরা কী বলতে পারি, তাদের পেশাদারিত্বের জায়গাটা দুর্বল বলেই আজ এ অবস্থা?

চঞ্চল চৌধুরী: হ্যাঁ, সত্যিই তাই। বাংলাদেশের নাটক এবং সিনেমা এখন পর্যন্ত পেশাদারিত্বের জায়গায় যায়নি। ইন্ডাস্ট্রি বড় হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ কাজ করছে। সবই ঠিক আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা প্রফেশনাল হতে পারি নাই। এটা একদম সত্য কথা। এখনও আমাকে যারা নেয়, তাদের নাটক এবং সিনেমাতে পারসোনাল সম্পর্কের জায়গা থেকে আমি কতটুকু কম নেব, অথবা আমি সার্ভিস বেশি দেব সেই হিসাবটাই এখনও বেশি চলে এবং আগে চলে। কিন্তু এটা কেউ বলে না, ভাই আপনি কত চান, এই নেন। আপনি আমাকে একটি সিনেমা করে দেন। আমি আমার জায়গা থেকে বলতে পারি, আমি জীবিকা নির্বাহ করছি, আমার পেশা এটা। কিন্তু তার পরও বলতে পারি না। আমাদের এখানে ভালো কাজের সংখ্যা কম। যে ধরনের কাজ দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিটাকে শত ভাগ প্রফেশনাল করা যায়, যে পরিমাণ দরকার, সে পরিমাণ হচ্ছে না।

প্রিয়.কম: তার মানে এক ধরনের বিভ্রান্তির জায়গা তৈরি হয়েছে…

চঞ্চল চৌধুরী: আমাদের দর্শক কিন্তু নানানভাবে বিভ্রান্ত। প্রকৃতপক্ষে শিল্পটা কী হওয়া উচিত, কীভাবে হচ্ছে কিংবা আন্তর্জাতিক মানের কতটুকু ভালো কাজ হচ্ছে। সব কিছু মিলিয়েই অনেকেই কিন্তু বেশ বিভ্রান্ত। হয়তো আমরা প্রচার করছি একভাবে কিন্তু দর্শক যখন প্রেক্ষাগৃহে, যাচ্ছে তখন বিষয়টি আরেকভাবে দেখতে পাচ্ছে, যার কারণে তাদের মধ্যেও এক ধরনের সংকট তৈরি হয়।

প্রিয়.কম: একজন সৃজনশীল ব্যক্তি যখন আদর্শগতভাবে দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেন, সেটি ইন্ডাস্ট্রির জন্য কতটা ক্ষতিকর বলে আপনি মনে করেন…

চঞ্চল চৌধুরী: এখন যাদের হাতে নাটক কিংবা সিনেমা রয়েছে, তারা আসলে নিজের ব্যবসাটা ভালো বোঝেন। শিল্পের চাইতে নিজেদের পকেটের দিকে নজরটা বেশি। মোটা দাগে কথাটা বললাম। শিল্পচর্চার চাইতে তারা ব্যবসায়ের দিকে মনোযোগটা বেশি দেন। শিল্প এমন একটা জিনিস যেখানে শিল্প চর্চার চাইতে ব্যবসায়ের দিকে বেশি নজর দিলে সেখানে আসলে শিল্পচর্চাটা হয় না। ওই জায়গা থেকে বলতে চাই, শিল্পের প্রতি যদি দায়বদ্ধতা থাকে, তাহলে পড়ে আমার মনে হয় শিল্পটাই আগাবে।

সে জিনিসটা আমাদের এখানে হচ্ছে না। যে যত বড় বড় কথাই বলুক না কেন, এটা করছে, সেটা করছে। আমরা যারা এখনও গয়ে খেটে, রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, কাজ করছি, এরাই আসলে শিল্পটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি। এর বাইরে যারা যারা রয়েছেন, তাদের বেশির ভাগেরই উদ্দেশ্য শিল্প বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া। বর্তমানে যে সময়, আর সেটিকে ধরেই তো সময় আগায় কিংবা পিছিয়ে যায়, এই সময়ের বেশির ভাগ মানুষগুলোই হলো স্বার্থপর। ব্যক্তিস্বার্থের কথা বেশি চিন্তা করে।

প্রিয়.কম: আপনার অন্যান্য কাজকর্মের কী খবর?

চঞ্চল চৌধুরী: গত ডিসেম্বরে তিনটি নতুন সিরিয়ালের কাজ শুরু করেছি একসঙ্গে। বৃন্দাবন দাসের লেখা সঞ্জীব সরকারের পরিচালনায় ‘মজনু একজন পাগল নহে’ মাসুদ সেজানের ‘ডুগডুগি’, হিমু আকরামের ‘বিদেশী পাড়া’। এই বছরে নতুন শুরু হয়েছে সকাল আহমেদের ‘ভদ্র পাড়া’, সাগর জাহানের ‘টি-টোয়েন্টি’, চন্দন চৌধুরীর ‘ডাক্তার পাড়া’। আর সামনে গান নিয়ে কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। অনেকদিন হয় গান করি না তো। ইদানীং একটু মনে হচ্ছে গান নিয়ে কাজ করব। সেটা পরে জানাব।

প্রিয় বিনোদন/গোরা