কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবিঃ সংগৃহীত

অর্থ পাচারের তথ্য চেয়ে সুইজারল্যান্ডকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এম. রেজাউল করিম
প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৪৫
আপডেট: ০১ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৪৫

(প্রিয়.কম) কর ফাঁকি, দুর্নীতি কিংবা মানি লন্ডারিংয়ের সাথে জড়িত এমন সন্দেহভাজন কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও অন্যান্য সম্পদের তথ্য পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে সুইজারল্যান্ডের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিএফআইইউ এ তথ্য জানায়। 

বিএফআইইউ জানিয়েছে, গত ১৩ জুলাই সুইজারল্যান্ডের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের কাছে ওই চিঠি দেওয়া হয়। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মানি লন্ডারিং বা সন্ত্রাসে অর্থায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে সন্দেহ করার মতো যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকলে এগমন্ট সিকিউর ওয়েবের (ইএসডবি্লউ) মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউ থেকে আর্থিক লেনদেনের তথ্য চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মর্মে বিভিন্ন সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে তাদের কাছে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে দেশটির কোনো ব্যাংকে হিসাব পরিচালিত হলে বা অন্যান্য আর্থিক সম্পদ থাকলে সে বিষয়ে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

গত ২৯ জুন সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সেদেশের ব্যাংকগুলোতে ২০১৬ সাল শেষে বাংলাদেশের নামে দায় রয়েছে ৬৬ কোটি ৭৫ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ( প্রতি ফ্রাঁ ৮৪ টাকা হিসাবে) পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৫ কোটি ৯২ লাখ ফ্রাঁ, যা বর্তমানের বিনিময় হার অনুযায়ী চার হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এ হিসাবে আগের বছরের তুলনায় ২০১৬ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের টাকা বেড়েছে ১৮ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, পাচার করা অর্থের একটি অংশ যাচ্ছে সুইস ব্যাংকগুলোতে।

এর আগে গত মে মাসে প্রকাশিত ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) রিপোর্টে বাংলাদেশের টাকা পাচার তথ্য রয়েছে। জিএফআইর তথ্য মতে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে ৯১০ কোটি ডলার বা প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বেশি মূল্য ও পরিমাণ দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) ও রফতানির ক্ষেত্রে কম মূল্য ও পরিমাণ দেখানোর (আন্ডার ইনভয়েসিং) মাধ্যমেই প্রায় ৮০ ভাগ অর্থ পাচার হয়। জিএফআইর হিসাবে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে চার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

কয়েক বছর ধরে সুইস ব্যাংকে টাকার পরিমাণ দিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের অর্থ থাকার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দুই বছর আগে সেদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (এসএনবি) কাছে এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসএনবি তখন জানায়, কোনো ব্যক্তির নামে তথ্য চাইলে তারা দেওয়ার চেষ্টা করতেন। পুরো দেশের তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড নামের প্রকাশনায় বাংলাদেশের কাছে 'দায়' হিসেবে যে অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়, তার মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংক ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্থও রয়েছে, যা বৈধ। কিছু পাচার করা অর্থ থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।