কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রকৃত মুসলিম কখনো নিরাশ হয় না। ছবি: সংগৃহীত

প্রকৃত মুসলিম কী কখনো নিরাশ হতে পারে?

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৯:১৭
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৯:১৭

(প্রিয়.কম) হতাশা ও বিষন্নতা জীবনের অংশ। এটা মানসিক, শারীরিক বা আধ্যাত্মিক টান থেকে সৃষ্ট হয়। আর এই হতাশার অনুভূতি আমাদের জীবনের অনেক সময়কে খেয়ে ফেলে। আমরা এই হতাশাকে কীভাবে মোকাবেলা করতে পারি? এই বিষয়ে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করব। এ অবস্থায় যারা সবর করে এবং যখনই কোনো বিপদ আসে বলে, আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে, তাদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও। তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের ওপর বিপুল অনুগ্রহ বর্ষিত হবে, তার রহমত তাদেরকে ছায়া দান করবে এবং এই ধরনের লোকরাই হয় সত্যানুসারী। (সূরা- বাকারাহ, আয়াত- ১৫৫-১৫৭)

একটি হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ্ তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ, যারা তার কাছে কোনো কিছু চায় না। (তিরমিযি) পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর স্মরণে হৃদয় প্রশান্তি লাভ করে’। (সূরা- আর রদ, আয়াত- ২৮)

ইসলাম আমাদের আশা এবং বিশ্বাস শেখায়। আমাদের সর্বদা বিশ্বাস করা উচিত যে প্রতিটি নতুন দিবসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সবসময়ই একটি নতুন সূচনা। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক আরও ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর অনুমোদন ছাড়া কখনো কোনো মুসিবত বা বিপদ আসে না। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করে আল্লাহ তার অন্তরকে হিদায়াত দান করেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন। (সূরা- আত তাগাবুন, আয়াত- ১১)

বিপদ-আপদের ঘনঘটার মধ্যেও যে জিনিস মানুষকে সঠিক পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখে এবং কঠিন থেকে কঠিনতর পরিস্থিতিতে পদস্খলন হতে দেয় না- সেই একমাত্র জিনিসটি হচ্ছে আল্লাহ প্রতি ঈমান। যার আন্তরে আল্লাহর প্রতি ঈমান নেই সে এসব বিপদ-আপদকে হয় আকস্মিক দুর্ঘটনার ফল মনে করে অথবা এসব বিপদ-আপদ দেয়ার ও দূর করার ব্যাপারে পার্থিব শক্তিসমূহকে কার্যকর বলে বিশ্বাস করে।

অপরদিকে যে ব্যক্তি একথা জানে এবং আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহপাকের হাতেই সবকিছু। তিনিই এই বিশ্ব-জাহানের মালিক ও শাসক। তার অনুমোদনক্রমেই বিপদ-মসিবত আসতে এবং দূরীভূত হতে পারে। এই ব্যক্তির মনকে আল্লাহপাক ধৈর্য ও আনুগত্য এবং তাকদীরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকার ‘তাওফীক’ দান করেন। তাকে সাহস ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে সব রকম পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করার শক্তি দান করেন। অন্ধকার থেকে অন্ধকারতর পরিস্থিতিতেও আল্লাহর দয়া তার সাথে তাকে এবং সে সত্য ও সঠিক পথ থেকে কখনো বিচ্যুত হয় না। হাতাশা কখনো তাকে গ্রাস করতে পারে না। একজন মুমিন আল্লাহ ছাড়া আর কারো দরবারে তার দুঃখ-বেদনার দাওয়াই বা প্রতিকার তালাশ করে না। এভাবে প্রতিটি বিপদ মসিবতই তার জন্য অধিক কল্যাণের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়। প্রকৃতপক্ষে কোনো মসিবতই তার কাছে মসিবত থাকে না বরং পরিণামের দিক থেকে সরাসরি রহমতে পরিণত হয়।

বুখারী ও মুসলিমের বর্ণিত একটি হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে বর্ণনা করেছেন, মুমিনের ব্যাপারটিই বড় অদ্ভুত। আল্লাহ তার জন্য যে ফায়সালাই করুন না কেন তা সর্বাবস্থায় তার জন্য কল্যাণকর হয়ে থাকে। বিপদ-আপদে সে ধৈর্য অবলম্বন করে। এটা তার জন্য কল্যাণকর। সুখ-শান্তি ও সচ্ছলতা আসলে সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এটাও তার জন্য কল্যাণকর। মুমিন ছাড়া আর কারো ভাগ্যেই এরূপ হয় না।

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ