কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

শিল্পী আমিনুল ইসলাম আমিন। ছবি : আবু সুুফিয়ান জুয়েল, প্রিয়.কম।

হালাল উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম ক্যালিগ্রাফি : শিল্পী আমিন

মিরাজ রহমান
সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৩:৪৮
আপডেট: ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৩:৪৮

(প্রিয়.কম) শিল্পী আমিনুল ইসলাম আমিন- বাংলাদেশের স্বনামধন্য একজন ক্যালিগ্রাফার, ভাস্করশিল্পী ও ইসলামিক ইন্টেরিয়র শিল্পের অনন্য প্রতিষ্ঠান শিল্পায়ন অ্যাড ফার্মের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফি শিল্পের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে শিল্পী আমিনের নাম। শিল্পী আমিনকে বাদ দিলে বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফিশিল্পের ইতিহাস অসম্পূর্ণ। গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশে একদল মহান শিল্পী এই শিল্পচর্চা করে চলেছেন। ১৯৬৪ সালে বগুড়ার শিকারপুর গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আমিন। তার পিতার নাম মরহুম আবদুর রহমান এবং মাতার নাম আছমা বেগম। তিন তিনটি একক প্রদশর্নী ছাড়া প্রায় ১২টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রুপ প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণ করেছেন তিনি। ১৯৮২ সালে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় ভর্তি হয়ে কিছু দিন পড়াশোনা করার পর ১৯৮৭ সালে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) থেকে ফাইন আর্টের ওপর ডিপ্লোমা কমপ্লিট করেন তিনি। পাশাপাশি গ্রাফিক্স ডিজাইনেও ডিপ্লোমা ডিগ্রী অর্জন করেন। ক্যালিগ্রাফি ও ইসামিক ভাস্কর্য নিমার্ণের স্বীকৃতি স্বরুপ বিভিন্ন পুরস্কার ও একাডেমিক সম্মাননা লাভ করেছেন শিল্পী আমিন। দেশে বিদেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন ইসলামিক কনফারেন্সে যোগ দিয়েছেন তিনি। গুণী এই কালিগ্রাফি শিল্পীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাওলানা মিরাজ রহমান

আপনি ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহী হলেন কীভাবে?

নিজের মেধা মননকে কাজে লাগিযে সফলতা অর্জন করার মানসিকতা বা স্বপ্ন খুব ছোটবেলা থেকেই আমার মাঝে জন্মেছিলো। হয়তো পরম করুণাময় আল্লাহ মহানের রহমতের দৃষ্টি আমার উপর ছিল। কারণ শিল্প বা সৃজনশীলতা এমন একটি গুণ যা কোনো মানুষ ইচ্ছাশক্তির বলে অর্জন করতে পারে না। আল্লাহ মহান যদি কাউকে শিল্পবোধ বা সৃজনশীল মেধা বা প্রতিভা দান না করেন তাহলে কারো পক্ষে শিল্পী হওয়া সম্ভব না। আর এক্ষেত্রে একজন শিল্পীর যে গুণটি  সবচেয়ে বেশি দরকার সেটি হলো আত্মবিশ্বাস। আমি মনে কির কারো মাঝে যদি শিল্পবোধ বা সৃজনশীলগুণ থাকে একমাত্র আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে কঠোর পরিশ্রম করলে একদিন না একদিন সফলতা এসে তার পদচুম্বন করবেই।

বড় হওয়ার স্বপ্ন প্রায় সবার মাঝেই থাকে। তবে আমি ছোটবেলাথেকেই বুঝতে সক্ষম হয়েছিলাম যে, লক্ষহীন মানুষ লাগামহীন নৌকার মতো। তাই আমি আমার জীবনে শিল্পকর্মের একটি লক্ষমাত্রায় স্থির করেছিলাম। ছোটবেলা থেকে আল্লাহ মহানের দান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে দেখে মুগ্ধ হতাম এবং আনমনে কখনো কখনো এই প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতাম। পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে আমি একটু আধটু করে প্রাকৃতিক বিভিন্ন দৃশ্য আাঁকা শুরু করেছিলাম। যে ছবিটি বা দৃশ্যটি আমার পছন্দ হতো তা আাঁকার জন্য আমি ব্যাকুল হয়ে উঠতাম। যতক্ষণ না ছবিটি আঁকতে পারতাম কেমন যে আমার অশান্তি লাগতো। আমার বন্ধু-বান্ধব ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা আমাকে এ পথে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসি হয়ে উঠতে সহযোগীতা করে। স্কুল জীবনের আঁকা ছবিগুলো সবার বেশ প্রশংসা জুগিয়েছিল। এভাবে হাঁটি হাঁটি পা পা করে সময় গড়িয়ে চললো এবং আগের তুলনায় আঁকা আঁকির প্রতি আমার ঝোক-আগ্রহ বৃদ্ধি পেতে থাকলো। এরপর ১৯৮০ সালে এসএসসি ও ১৯৮২ সালে এইচএসসি পাশ করার পর নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলাম না। ঢাকা এসে প্রথমে ভর্তি হলাম চারুকলায় এরপর চলে গেলাম বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে (বাফা)। এইভাবে শুরু হয় আমার নিয়মতান্ত্রিক শিল্পী জীবনের পথচলা। ১৯৮৭ সালে বাফা থেকে স্নাতক শেষ করার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই শিল্পসাধনাই আমার ধ্যান-জ্ঞান এবং সংসার-উপার্জনের একমাত্র ঠিকানা।

শিল্পী আমিনের কিছু বিখ্যাত ক্যালিগ্রাফি। ছবি : সংগৃহীত

 

ক্যালিগ্রাফি বলতে আসলে কী বুঝায় এবং ইসলামিক ইন্টোরিয়র বলতে কী বুঝায়?

ক্যালিগ্রাফি মানে হচ্ছে অক্ষরের নৃত্য। সুন্দরভাবে একটি লেখা বা কোন ভাষার শব্দকে বা লেখাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করাকে ক্যালিগ্রাফি বলা হয়। এখানে একটি কথা বলে রাখা উচিত বলে আমি মনে করি যে, অনেকের ধারণা রয়েছে যে ক্যালিগ্রাফি বলতে শুধু আরবী ভাষার সুন্দর উপস্থাপনকে বুঝায়। এটা কিন্তু ঠিক না। ক্যালিগ্রাফি আরবি ভাষার মাধ্যমে শুরু হয়েছে এবং আরবি ভাষায় ক্যালিগ্রাফি চর্চা বেশি হয়েছে এ কথা ঠিক কিন্তু শুধু মাত্র আরবি ভাষায় ক্যালিগ্রাফি করার সুযোগ সীমাবদ্ধ একথা ঠিক না। যে কোনো ভাষার অক্ষর বা লেখাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব এবং এই সব ভাষার কাজকেই ক্যালিগ্রাফি বলা হবে। যেমন, বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় ক্যালিগ্রাফি হয়েছে বা হচ্ছে। চীনে চায়না ভাষায় ক্যালিগ্রাফি হয়েছে বা হচ্ছে। ইংরেজি ভাষায় তো অনেক কাজ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। সুতরাং ক্যালিগ্রাফি যে কোনো ভাষায় হতে পারে এবং যে কোনো ভাষায় ক্যালিগ্রাফি করা সম্ভব।

আর ইন্টেরিয়র ডিজাইন মানে, হলো অভ্যন্তরীন নকশা বা সাজসজ্জা। বাসা-বাড়ি, অফিস- দোকান, হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ যাবতীয় বসবাসযোগ্য বা অবকাশ যাপনের জন্য প্রস্তুতকৃত আবাসনকে সাজানোকে ইন্টেরিয়র ডিজাইন বলা হয়। এখন ইসলামিক ইন্টেরিয়র মানে হলো এই সব স্থানগুলোকে অশ্লীলতা বর্জিত এবং ইসলাম নিষেধ করেছে এমন কোনো ছবি বা বস্তুর মাধ্যমে না সাজানো। একটি ঘর বা অফিসকে সাজানোর ক্ষেত্রে কোনো প্রাণীর ছবি বা অশ্লীল কোনো দৃশ্য ব্যবহার না করে সাজানোই ইসলামি ইন্টেরিয়র। মোট কথা হলো অশ্লীলতা বর্জিত এবং ইসলামে নিষিদ্ধ নয় এমন যে কোনো সুন্দর বিষয় বা বস্তুর সমন্বয়ে কোনো স্থানে সাজানোই হলো ইসলামিক ইন্টেরিয়রের মূল উদ্দেশ্য।

ক্যালিগ্রাফি করা বা শিল্পচর্চা করাকে অথবা ইসলামিক ইন্টেরিয়রের কাজকে কেউ যদি হালাল উপার্জনের মাধ্যম বানিয়ে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চায় অথাবা ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে চায়- এই বিষয়টাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

মানুষ হিসেবে যেহেতু জন্মগ্রহণ করেছি কিছু না কিছু একটা করে উপার্জন তো করতেই হবে। উপার্জন না করলে তো আর চলা যাবে না। আমি মনে করি ক্যালিগ্রাফি করা বা শিল্পচর্চা করাকে অথবা ইসলামিক ইন্টেরিয়রের কাজকে হালাল উপর্জানের মাধ্যম বানিয়ে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা অথবা ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করাটা খুবই সুন্দর ও রুচিশীল একটি উদ্যোগ। এটাকে পেশা বা ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করার মাঝে কোনো সমস্যা আমার দৃষ্টিতে আসছে না। রাসূল (সা.) বলেছেন, নিজের হাতের উপার্জন হচ্ছে সর্বোত্তম উপার্জন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে ক্যালিগ্রাফি করা বা শিল্পকর্ম করা এবং ইসলামিক ইন্টেরিয়রের কাজের মাধ্যমে উপার্জন করাটি সর্বোত্তম উপার্জন হিসেবে বিবেচিত হবে বলেই আমি মনে করি।

প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন শৈল্পিক কাজে ব্যস্ত শিল্প আমিন। ছবি : সংগৃহীত

 

আপনি বিভিন্ন দেশে ঘুরেছেন এবং বিভিন্ন দেশে ক্যালিগ্রাফি প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন উন্নয়শীল দেশের ক্যালিগ্রাফি এবং বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফি চর্চার মাঝে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করুন প্লিজ...

আলহামদুলিল্লাহ আমি ক্যালিগ্রাফার হিসেবে ইরান, দুবাই, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সফর করেছি এবং বিশ্বের বড় বড় ক্যালিগ্রাফারদের কর্ম দেখার সুযোগ পেয়েছি। সৌদি, ইরাক, ইরান, তুরস্ক বিভিন্ন মুসলিম দেশের ক্যালিগ্রাফিকে আমার কাছে শুধু অক্ষরশৈলী নির্ভর মনে হয়েছে। বিদেশের শিল্পীরা একটি ক্যালিগ্রাফির ব্যাকগ্রাউন্ডের তুলনায় অক্ষর বা লেখাকে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেন। এই দিক থেকে আমি মনে করি বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে শিল্পীরা ক্যালিগ্রাফিতে অক্ষর বা লেখাকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ডকে মনোমুগ্ধকর করার চেষ্টা করেন। তবে আফসোসের বিষয় হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে ক্যালিগ্রাফি আলাদা একটি শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। এর শিক্ষা ও চর্চার আলাদা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। রয়েছে নানাবিধ পৃষ্ঠপোষকতা। কিন্তু বাংলাদেশের ক্যালিগ্রাফি চর্চা পুরোটাই ব্যক্তি চেষ্টার ওপর নির্ভরশীল এবং পৃষ্ঠপোষকতার অনেক অভাব রয়েছে।

বাংলাদেশে শিল্পকলা বা চিত্রকলা নিযে যেসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করানো হয় সেখানে ক্যালিগ্রাফিকে আলাদা বিষয় হিসেবে যুক্ত করার দাবি তুলেছেন অনেকেই- আপনি এই বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন?

ক্যালিগ্রাফির ইতিহাস খুব প্রাচীন এবং ক্যালিগ্রাফি বিশ্বব্যাপি সমাদৃত একটি শিল্পপ্রক্রিয়া। একজন ক্যালিগ্রাফার হিসেবে আমি অবশ্যই চাই যে, শিল্পকলা ও চিত্রকলার বিষয়ে যে সব প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে ক্যালিগ্রাফি বিষয়টি যুক্ত করা হোক।

শিল্পী আমিনের তৈরি করা কুরআন মিউজিয়ামের নকশা। ছবি : সংগৃহীত

 আপনার জীবনের উল্লেখযোগ্য ক্যালিগ্রাফি ও উল্লেখযোগ্য ইসলামিক ইন্টেরিয়র কী কী?

বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমার ক্যালিগ্রাফি রয়েছে এবং এই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন রাজপ্রাসাদে আমার ক্যালিগ্রাফি স্থান পেয়েছে। এছাড়া শাহ জালাল ইসলামি ব্যাংকের সব ব্রাঞ্চে আমার ক্যালিগ্রাফি রয়েছে। অন্যান্য ব্যাংকসহ বিভিন্ন বড় বড় হাসপাতালে আমার ক্যালিগ্রাফি রয়েছে। আর ইসলামি ইন্টেরিয়রের মাঝে- চট্টগ্রামস্থ মাইজভান্ডার দরবারে আমি টাইলস্ খোদাই করে আরবী ক্যালিগ্রাফি করেছি। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে আমি টাইলস্ খোধাই করে বাংলা ভাষা আন্দোলনের ক্যালিগ্রাফি করেছি এবং বাংলাদেশের মানচিত্রে সাত শহীদের “মৃত্যুঞ্জয়ী বীরশ্রেষ্ঠ” টাইলস ও গ্লাসে শিল্পকর্ম স্থাপন করেছি। ঢাকার নারিন্দাতে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শাহ সাহেব মসজিদের গেট ও মেহরাবে আমি টাইলস্ খোদাই কাজ করেছি। তারপর পঞ্চগড় সরকারি টেকনিক্যাল কলেজের গেটে বাংলা ক্যালিগ্রাফি স্থাপন করেছি। এছাড়াও ময়মনসিংহ মুক্তাগাছা বড় মসজিদের গেট, মেহেরাব ও গুম্বুজে টাইলস্ ডিজাইন ও গ্লাসের কাজ করেছি।

একটি ইসলামিক মিউজিয়াম করা জীবনের স্বপ্ন- এই বিষয়ে যদি কিছু বলতেন?

বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে বিভিন্ন ইসলামিক মিউজিয়াম রয়েছে। আমার স্বপ্ন বাংলাদেশে একটি কুরআনিক মিউজিয়াম করা। এই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আমি গত দশ বছর যাবত কাজ করে যাচ্ছি। ২০০৫ সালের ২৫ এপ্রিল জাতীয় জাদুঘরের প্রধান গ্যালারীতে আল কুরআন মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠান রূপরেখা স্বরুপ আমি ২০ ফুট বাই ১৫ ফুট সাইজের নকশা ও আর্কিট্যাকচারাল ডিজাইন উপস্থাপন করেছি। এটা হবে এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কুরআন মিউজিয়াম। এমন মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করা গেলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কুরআনের আলোকধারায় স্নাত হতো এবং বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের নাম স্বগৌারবে উচ্চারিত হতো- এমনটাই আমার বিশ্বাস। 

প্রিয় ইসলাম/গোরা