কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি: Daily Mail

ব্যাগের ভেতর হৃৎপিণ্ড নিয়ে বেঁচে আছেন এই বিস্ময়কর নারী!

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:২৬
আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:২৬

(প্রিয়.কম) একবার চিন্তা করে দেখুন, আপনার হৃৎপিণ্ড বুকের ভেতরে নয়, বরং ব্যাগে করে পিঠে বয়ে বেড়াচ্ছেন! অবিশ্বাস্য এই গল্পটাই ব্রিটিশ নাগরিক সেলওয়া হুসেইনের জীবন। 

ছয় মাস আগের কথা।নিজের বাড়িতেই ছিলেন দুই সন্তানের মা ৩৯ বছর বয়সী সেলওয়া। নিঃশ্বাস নিতে প্রচন্ড কষ্ট হওয়ায় এসেক্স শহরে নিজেদের পারিবারিক ডাক্তারের কাছে গিয়ে উপস্থিত হন তিনি। স্থানীয় হাসপাতালে নেবার পর দেখা যায় সিভিয়ার হার্ট ফেইলিওর হয়েছে তার। চারদিন পর তাকে বিখ্যাত হেয়ারফিল্ড হসপিটালে স্থানান্তর করা হয়। কার্ডিওলজিস্টরা প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন, এরপরেও তার শরীর ক্রমাগত খারাপ হতে থাকে। তিনি এতই অসুস্থ ছিলেন যে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দিয়ে কাজ হচ্ছিল না আর হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট করার অবস্থাও ছিল না। কী করা যায় এই অবস্থায়? অন্য কোন উপায় না থাকায় তার স্বামী আল হুসেইন রাজি হন কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড ব্যবহারে। 

সেলওয়া হুসেইনের আসল হৃৎপিণ্ড অপসারণ করে আর্টিফিশিয়াল ইম্পলান্ট শরীরে বসানো হয় ছয় ঘন্টার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। একটি আর্টিফিশিয়াল ইমপ্ল্যান্ট তার বুকের ভেতরে স্থাপন করা হয় এবং ব্যাকপ্যাকে নেবার মতন একটি স্পেশালাইজট ইউনিট তৈরি করা হয়। ৮৬ হাজার পাউন্ড খরচের এই ইমপ্লান্ট সার্জারির নেতৃত্বে ছিলেন সার্জন ডায়ানা গ্রেসিয়া সেজ এবং আন্দ্রে সায়মন। 

সেলওয়ার কৃত্রিম এই হৃৎপিণ্ডের অংশ হলো ব্যাটারি, ইলেকট্রিক মোটর এবং পাম্প। ব্যাকপ্যাক থেকে দুইটি টিউব নাভির মাধ্যমে তার বুকে প্রবেশ করে এবং এর মাধ্যমে বাতাস গিয়ে হৃৎপিণ্ডের জায়গায় থাকা দুইটি প্লাস্টিকের এয়ার চেম্বার ফুলিয়ে তোলে এবং রক্ত সঞ্চালন করে সারা শরীরে। 

কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড

তার এই স্পেশালাইজড ইউনিট থাকে পিঠের ব্যাকপ্যাকে। দুই সেট ব্যাটারির মাধ্যমে মোটরটিকে চালু রাখা হয়। হাতের কাছেই আরেকটি স্পেশালাইজড ইউনিট রাখা হয় যাতে প্রথমটি অকেজো হয়ে গেলে দ্রুত পাল্টে নেয়া যায়। ৯০ সেকেন্ডের মাঝে এই পাল্টানোর কাজটি করতে হবে, তাই তার যত্ন নিতে পারেন এমন কাউকে সর্বক্ষণ তার পাশে থাকতে হয়।

বিগত কয়েক মাসে সেলওয়া হুসেইন ব্যাগের মাঝে হৃৎপিণ্ড নিতে জীবনযাপনে অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। সর্বক্ষণি এই মেশিনের শব্দ তার সঙ্গী। বিশেষজ্ঞরা জানান, তার হৃৎপিণ্ডে ছিল কার্ডিওমায়োপ্যাথি নামের একটি সমস্যা, যা কিনা গর্ভাবস্থার কারণে আরো খারাপ হতে পারে। দ্রষ্টব্য যে, ১৮ মাস আগে একটি সন্তানের জন্ম দেন তিনি। এই বছরের শুরুতে যখন তার বুকে ব্যথা শুরু হয়, ডাক্তাররা একে বদহজমের সমস্যা বলে মনে করেন এবং তেমন আমলে নেননি। 

২০১১ সালে ব্রিটেনের ক্যামব্রিজশায়ারের প্যাপওর্থ হসপিটালে ৫০ বছর বয়সী এক পুরুষের শরীরেও এই একই অস্ত্রোপচার করা হয়। ২ বছর এই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড ব্যবহারের পর তিনি একটি হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের সুযোগ পান। আশা করা হচ্ছে সেলওয়া হুসেইনও শীঘ্রই ট্রান্সপ্লান্ট পেয়ে যাবেন।  

সূত্র: Daily Mail

প্রিয় লাইফ/ আর বি