কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আজিমপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: ফোকাস বাংলা

আজিমপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের নেপথ্যে

মোস্তফা ইমরুল কায়েস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ২২:১১
আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ২২:১১

(প্রিয়.কম) রাজধানীর আজিমপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। সেসময় ঘটনাস্থলে থাকা ছয়টি মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের লোকজনের মধ্যে আজিমপুরের পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজিমপুরের পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারে সামনে মেয়র সাঈদ খোকন গ্রুপ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের আয়োজনে দুই মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্চিত করার ঘটনায় প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। কিন্তু তার আগে থেকেই সেই কমিউনিটি সেন্টারের ভেতরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের উদ্যোগে সদস্য পদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি প্রধান অতিথি ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা।

তবে অনুষ্ঠানের আগের রাতে ওই কমিউনিটি সেন্টারের সামনে কে বা কারা দুই থেকে তিন ট্রাক ময়লা আবর্জনা ফেলে যায়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে শাহে আলম মুরাদ গ্রুপের লোকজন। এ নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে সকাল থেকে উত্তেজনা চলছিল। পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছিল।   

আরও জানা গেছে, সকালের দিকে সভা শুরুর কিছুক্ষণ পর সেখানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি হাজির হওয়ার মুহূর্তে দুই মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে শাহে আলম মুরাদকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন মেয়রের অনুসারীরা। সেসময় ওই বিক্ষোভ মিছিলে হামলা চালায় শাহে আলম মুরাদ গ্রুপের লোকজন। ফলে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। 

সংঘর্ষের সময় মুরাদের লোকজন দীপু মনির গাড়িতে হামলার পাশাপাশি তার গাড়ির সঙ্গে আসা চারটি মোটরসাইকেল ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার রতনের একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। এছাড়াও কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এতে মেয়র গ্রুপের কয়েকজন আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু আহমেদ প্রিয়.কম-কে বলেন, গত ২৬ অক্টোবর মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভার উদ্বোধনের দিন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ গ্রুপের লোকজন আমাকে ও আরও একজন মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্চিত করে। এর প্রেক্ষিতেই স্থানীয় লোকজন ও কাউন্সিলররা আজ মুরাদকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছিল। কিন্তু সেই মিছিলেও তারা হামলা চালিয়েছে। শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি মুরাদের লোকজন তারা দীপু মনি ও তার গাড়ির সঙ্গে আসা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছে।  

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রিয়.কম-কে জানান, তিনি পূর্ব নির্ধারিত প্রস্তুতি সভা ডেকেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ায় আগামী ১৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সমাবেশ করবে সেই সমাবেশকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই প্রস্তুতি সভা ছিল এটি। 

তিনি বলেন, তারা (সাঈদ খোকনের অনুসারীরা) যদি মিছিল মিটিং করবে তবে কেন পুলিশের কোনো অনুমতি নিল না। আমরা তো প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই কমিউনিটি সেন্টারের ভেতরে মিটিং করছিলাম। কিন্তু তার আগেই তারা আমাদের সব কিছু পণ্ড করে দিল। তবে দিপু মনির গাড়িতে হামলা চালিয়েছে মেয়র সমর্থিত লোকজনরা বলে অভিযোগ মুরাদের। 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘আমরা কমিউনিটি সেন্টারে সভা করব বলে রাতেই সেখানে ময়লা ফেলে রেখেছিল মেয়রের লোকজন। এভাবে মেয়রের লোকজন আমাদের সভা করতে বাধা দিয়েছে। কিন্তু তারপরও আমরা সভা করতে গিয়েছিলাম।’  

কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ময়লা আবর্জনা মেয়রের লোকজন ফেলে রাখেনি, বরং সিটি করপোরেশনের কর্মীরাই সেখানে গাড়ি সংকটের কারণে কিছু ময়লা রেখেছিল বলে দাবি করেন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কশিনার আবু আহমেদ। 

পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহিম খান বলেন, একই স্থানে দুটি গ্রুপ সভা করতে এসেছিল। সেখানে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় আমরা ১৩ জনকে আটক করেছি। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রিয় সংবাদ/শান্ত