কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক বাংলাদেশকে বড় লজ্জাই দিলেন। ছবি: সংগৃহীত

এভাবে কখনই হারেনি বাংলাদেশ

শান্ত মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০১৭, ২১:৩৯
আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭, ২১:৩৯

(প্রিয়.কম) ফলটা অনুমেয়ই ছিল। ধাঁধা হিসেবে ছিল শুধু ব্যবধান। তবু মাঠের লড়াইয়ের কে ছেড়ে কথা বলে! এছাড়া ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সামর্থ্য সব প্রতিপক্ষের বুকেই কাঁপন ধরায়। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘরের মাঠের দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে ২৭৮ রান তুলেও সুবিধা করা গেল না। এক পেশে ম্যাচে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া এক হার সঙ্গী হল বাংলাদেশের। 

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে গেছে মাশরাফিবাহিনী। রোববার কিম্বার্লিতে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছয় উইকেটে স্কোরকার্ডে জমা হয় ২৭৮ রানের লড়াকু সংগ্রহ। কিন্তু এই রানও মামুলি বানিয়ে বিশাল জয় তুলে নেন দুই অপরাজিত সেঞ্চুরিয়ান কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলা।

দুই টেস্টে বিশাল ব্যবধানে হারের পর ওয়ানডে সিরিজেও বাংলাদেশের ভাল করার সম্ভাবনার দুয়ারের সামনে বসে গিয়েছিল প্রশ্নবোধক চিহ্ন। ব্যাট হাতে নড়বড়ে শুরুর পর যেন আগে থেকেই চোখ রাঙাচ্ছিল হার। সেই পথে দেয়াল তুলেছিলেন মুশফিকুর রহিম। দারুণ এক সেঞ্চুরি করে দলকে ২৭৮ রানে পৌঁছে দেওয়ার পথে কান্ডারি হিসেবে তিনিই কাজ করেছেন। কিন্তু তার সেঞ্চুরি ম্লান হয়ে গেল ডি কক ও আমলার ব্যাটিংয়ে।

হার সব সময়ই জ্বালা দেয়। কিন্তু কিছু কিছু হারের সাথে সঙ্গী হয় চরম হতাশাও। এমন এক হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হল বাংলাদেশকে। প্রোটিয়াদের একটি উইকেটও নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে খেলা শেষ করে মাঠ ছেড়েছেন ডি কক ও আমলা। ডি কক ১৪৫ বলে ২১ চার ও দুই ছয়ে ১৬৮ ও আমলা ১১২ বলে আট চারে ১১০ রানে অপরাজিত থাকেন। 

এই জুটির রান ২৮২। যা প্রথম উইকেটে তো বটেই, যে কোনও উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা জুটি। এছাড়া ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম উইকেটে এটা তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটা যেন কোনও দলের সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি। ১৯৯৭ সালে কেনিয়ার দীপক চুদাসামা ও  কেনেডি ওটিয়েনো ২২৫ রানের জুটি গড়েছিলেন। ওটাই ছিল এতদিন বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনও দলের সেরা উদ্বোধনী জুটি। 

বাংলাদেশের প্রতিটা বোলার এদিন একটি হতাশার নাম হয়ে উঠেছিলেন। রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ, অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ- বাংলাদেশের এই সাত বোলারের কেউই দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটিতে ফাটল ধরাতে পারেননি। শুধু চেয়ে চেয়ে প্রতিপক্ষের দুই ওপেনারের ব্যাটিং শো দেখেছেন।

ওয়ানডেতে এভাবে আগে কখনই হারেনি বাংলাদেশ। ২৭৮ রান করেও বাংলাদেশকে কখনও ১০ উইকেটের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি। বাংলাদেশ ওয়ানডেতে এর আগে ১০ উইকেটে হেরেছে ১০ বার। কিন্তু কখনই ২০০ রানের বেশি টার্গেট দিয়ে ১০ উইকেটে হারেনি। প্রোটিয়াদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে এবার সেই লজ্জার রেকর্ডই সঙ্গী হল মাশরাফি বিন মুর্তজার দলের। সর্বশেষ ২০০৮ সালে করাচিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। 

এরআগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। দলে নেই ব্যাটিংয়ের প্রধান অস্ত্র তামিম ইকবাল। ছেটে ফেলা হয়েছে সৌম্য সরকারকেও। ইনিংস উদ্বোধনের দায়িত্ব ওঠে ইমরুল কায়েস ও লিটন কুমার দাসের কাঁধে। কিন্তু এ দু’জন দলকে মনের মতো শুরু এনে দিতে পারেনি। ভাল শুরুর ইঙ্গিত দিলেও দলীয় ৪৩ রানে বিদায় নেন লিটন।

কিছুক্ষণ পর ফিরে যান ৩১ রান করা ইমরুল কায়েসও। ৬৭ রানে দুই উইকেটে হারানো দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। যদিও সাকিব বেশি সময় মুশফিককে সঙ্গ দিতে পারেননি। ২৯ রান করে ফিরে যান বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। এরপর একাই লড়েছেন মুশফিক। ১০৮ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। শেষপর্যন্ত ১১৬ বলে ১১ চার ও দুই ছয়ে ১১০ রানে অপরাজিত থাকেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটিং অস্ত্র।