কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

৩৫ বলে সেঞ্চুরি করার পথে ডেভিড মিলার। ছবি: এএফপি

মিলার তাণ্ডবে কাঁপল বাংলাদেশ

সৌরভ মাহমুদ
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ২০:২২
আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ২০:২২

(প্রিয়.কম) ঝড়ের শুরুটা করেছিলেন ওপেনার হাশিম আমলা। ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর বাঁ-হাতি এই ওপেনার থেমেছিলেন ৮৫ রানে। তবে আমলা থেমে গেলেও থামেননি ডেভিড মিলার। মাত্র ২৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন মিলার। এরপর যেন আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান। ইনিংসের ১৯ তম ওভারে পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ওভারে পাঁচটি ছক্কাও হাঁকান তিনি। ইনিংসের শেষ ওভারে তিন অঙ্কের ঘরেও পৌঁছে যান। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিতে মিলার খেলেছেন মাত্র ৩৫টি বল। এটাই টি-টোয়েন্টি সব চেয়ে কম বলে সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড। শেষ পর্যন্ত ৩৬ বলে ১০১ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন মিলার। দল পায় ২২৪ রানের বিশাল সংগ্রহ। 

টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে অসহায় আত্মসমর্পণের পর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কিছুটা হলেও লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। সমর্থকদের আশা ছিল তার রেশ থাকবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতেও। পচেফস্ট্রুমে এদিন শুরুতে তেমন ইঙ্গিত দিলেও পরে খেই হারিয়ে ফেলে সাকিব আল হাসানের দল। আমলার ঝড় ব্যাটিং ও মিলারের তাণ্ডবে আরও একটি রান পাহাড় গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ছিল ১৯৫ রান। এদিন সেটাকেও ছাড়িয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। নির্ধারিত ২০ ওভারে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে চার উইকেটে ২২৪ রান। জিততে হলে শেষ ভালোর অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশের প্রয়োজন ২২৫ রান। ডিঙাতে হবে আরও একটি রান পাহাড়।

পচেফস্ট্রুমে প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো এই ম্যাচেও বল হাতে আক্রমণের শুরুটা করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। নয় রান দিলেও প্রথম ওভারে উইকেটের দেখা পাননি তিনি। এরপরের ওভারে পেসার তাসকিন আহমেদ ১৪ রান দিলেও আবারও রান পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ার শঙ্কা দেখা দেয়। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই প্রোটিয়া শিবিরে আঘাত হানেন সাকিব। বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান পাঁচ রান করা ম্যাঙ্গালিসো মোসেলেকে। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে প্রোটিয়া অধিনায়ক জেপি ডুমিনিকেও ফিরিয়ে দেন বাঁ-হাতি এই স্পিনার। 

দলীয় ৩৭ রানে দুই উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকাকে এরপর এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন ওপেনার হাশিম আমলা ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে রানের চাকা বাড়াতে থাকেন এদু’জন। তবে তাদের ৪১ রানের জুটি ভাঙেন পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। সাইফুদ্দিনের বলে উড়িয়েই মেরেছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। তবে লং অফ সীমানায় ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন ইমরুল কায়েস। আউট হওয়ার আগে ভিলিয়ার্স ১৫ বলে করেন ২০ রান। ভিলিয়ার্সের পর ফিরে যেতে পারতেন সেঞ্চুরিয়ান মিলারও। পেসার রুবেল হোসেনের বল মিলারের গ্লাভস ছুঁয়ে চলে উইকেটের পেছনে। মুশফিকুর রহিম ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়েও ক্যাচটি তালুবন্দী করতে পারেননি। শূন্য রানেই জীবন পান তিনি।

কুইন্টন ডি কক না থাকায় এদিন শুরুতে দলের রান বাড়ানোর মূল কাজটি করেছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আমলা। ভিলিয়ার্স ফিরে যাওয়ার পর দারুণ গতিতে টানতে থাকেন দলের ইনিংস। এর মাঝেই ৩২ বলে ছয় চার ও এক ছক্কায় তুলে নেন ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ সেঞ্চুরি। এগিয়ে যাচ্ছিলেন প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির পথেও। তবে ব্যক্তিগত ৮৫ রানে সাইফুদ্দিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। ভাঙ্গে আমলা-মিলারের ৭৯ রানের জুটি। ৫১ বলে ১১ চার ও এক ছক্কায় ইনিংসটি সাজান আমলা। ডানহাতি এই ওপেনার ফিরে গেলে এরপর বাংলাদেশি বোলারদের উপর চড়াও হন মিলার। পাঁচ চার ও তিন ছক্কায় মাত্র ২৩ বলেই হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মিলার। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান।

ইনিংসের ১৯ তম ওভারের আগে মিলারের সংগ্রহ ছিল ২৫ বলে ৫৭ রান। সাইফুদ্দিনের করা ওই ওভারের ছয় বল থেকে মিলার সংগ্রহ করেন ৩১ রান। এর মধ্যে প্রথম পাঁচ বলের পাঁচটিতেই ছক্কা হাকিয়েছেন বাঁ-হাতি এই আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান। ১৯ তম ওভার শেষে মিলারের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩১ বলে ৮৮ রান। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ডাবলনেওয়ার মধ্য দিয়ে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। সেঞ্চুরি পূরণ করতে মিলার খেলেন ৩৫ বল। ছিল সাতটি চার ও নয়টি ছক্কার মার। ১০১ রান নিয়ে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন মিলার। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তার সঙ্গী ফারহান বেহারদিয়েন করেন পাঁচ বলে ছয় রান। এই জুটির সংগ্রহ ৬৭ রান। নির্ধারিত ২০ ওভারে প্রোটিয়াদের স্কোরকার্ডে জমা হয় ২২৪ রানের বিশাল সংগ্রহ। 

প্রিয় স্পোর্টস/শোভন