কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির। ফাইল ছবি
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে তালিকা করছে বাংলাদেশ
আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:৫৩
(প্রিয়.কম) বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের এক বৈঠক থেকে তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ সরকারের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার এ তালিকা তৈরি করবে।
পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব এ তালিকা তৈরি করা হবে। কিন্তু কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু হবে সে বিষয়ে সুনির্দ্দিষ্টভাবে তিনি কিছু বলেন নি।
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাদের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে একটা লট ইনফেরমেশন পাঠাবো। মিয়ানমার এটা দেখে ভেরিফাই (যাচাই) করে যখন জানাবে যে তারা মিয়ানমারের রেসিডেন্ট (বাসিন্দা), তখন ঐ ফ্যামিলিগুলোকে বলব তোমাদের মিয়ানমার গভর্মেন্ট নিতে রাজি হয়েছে, তোমরা ফিরে যাবা কিনা? তারপর একটা ভলান্টারি প্রসেসের (সম্মতি প্রক্রিয়ার) মাধ্যমে আমরা আশা করি যে রিটার্ন প্রসেস শুরু হবে।’
প্রথমবার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য মিয়ানমারের কাছে বাংলাদেশ একটি বড় সংখ্যায় তথ্য পাঠাতে চায় বলে পররাষ্ট্র সচিব উল্লেখ করেন। কয়েকটি গণমাধ্যমে সম্প্রতি খবর বেরিয়েছে যে বাংলাদেশ প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার নাম মিয়ানমারের কাছে দেবে। পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, এ ধরনের সংখ্যা ‘অনুমান নির্ভর’।
জাতিসংঘের হিসেবে প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি মানুষ পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯২ সালে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য মিয়ানমার সরকারের কাছে ৫০ হাজার রোহিঙ্গার নাম পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কাজ কবে নাগাদ শুরু হতে পারে?
এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা তো খুব তাড়াতাড়ি প্রসেসটা শুরু করতে চাচ্ছি। দেখা যাক।’ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে মিয়ানমার সরকারকে কোন ধরনের তথ্য দেবে বাংলাদেশ সরকার? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশকে একটি ফর্ম দিয়েছে। সে ফর্মে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে বাংলাদেশ সরকার সেগুলো দেবার চেষ্টা করবে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
জাতিসংঘের হিসেবে গত আগস্ট মাস থেকে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। এর আগে গত বছরের অক্টোবর মাসে এসেছিল আরও প্রায় এক লাখের মতো। সব মিলিয়ে গত ১৪ মাসে সাড়ে সাত লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের সে দেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য করে না। সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার সময় রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগ এমন কোন কাগজপত্র সাথে আনতে পারেন নি যারা মাধ্যমে তারা নিজেদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করতে পারে।
বিষয়টি তাহলে বাংলাদেশ কীভাবে প্রমাণ করবে?
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘দেখা যাক। যখন সময় আসবে তখন আপনারা জানতে পারবেন, দেখতে পারবেন কীভাবে এটা সম্ভব।’
তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
প্রিয় সংবাদ/