আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজ
আজিজ ছিলেন নটোরিয়াস কমান্ডার: ট্রাইব্যুনাল
আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:৪৭
(প্রিয়.কম) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজ ‘নটোরিয়াস কমান্ডার’ ছিলেন বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
২২ নভেম্বর বুধবার সকালে ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম রায় ঘোষণার আগে আব্দুল আজিজকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেন। রায়ে আজিজসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আজিজ কুখ্যাত অপরাধী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার অপরাধ ক্ষমাযোগ্য নয়। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
আদালত আরও বলে, আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজ স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকেই বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছেন। তিনি তার এলাকার অপরাধের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ৩ নম্বর আসামি আব্দুল লতিফ বয়স বিবেচনায় সাজা কমানোর আবেদন করলে আদালত তার মৌখিক আবেদনটি খারিজ করে দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন জানান, আবেদন করলে আদালত বলেছে অপরাধ সংগঠনের সময় যে বয়স ছিল সে বয়স বিবেচনা করে সাজা দেওয়া হবে। সংযুক্ত অপরাধের সময় কে অপরাধ কম বা বেশি করল সেটি দেখার বিষয় নয়। দেখার বিষয় হলো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত ছিল কিনা।
তিনি আরও বলেন, আব্দুল আজিজ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেমন বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছেন। তেমনি ২০১৩ সালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে হরতাল অপরাধের সময় পুলিশ ক্যাম্পে আব্দুল আজিজের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। তাকে ফাঁসির সাজা দিয়ে ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছে এতে সন্তুষ্ট রাষ্ট্রপক্ষ।
অপরদি আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী তামিম বলেছেন এ রায়ে আমরা অসন্তুষ্ট। অাদালতে রাষ্ট্রপক্ষ তাদের সাক্ষ্য প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। আজিজ সাহেব একজন নির্বাচিত এমপি ছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষ এটিকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমরা আদালতের কাছে যথেষ্ট যুক্তি উপস্থাপন করেছিলাম। আদালত আমাদের যুক্তিগুলো বিবেচনা না করেই রায় ঘোষণা করেছেন। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করব। তিনি এ মামলার পলাতক আসামিদেরকে আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করে আপিল করার আহবান জানান।
আব্দুল আজিজ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যান্য আসামি হলেন মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), মো. আব্দুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), মো. নাজমুল হুদা (৬০) ও মো. আব্দুর রহিম মিঞা (৬২)। মামলায় ছয় আসামির মধ্যে মো. আব্দুল লতিফ কারাগারে আছেন। বাকি পাঁচ আসামি পালাতক।
আজিজসহ গাইবান্ধার ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। একই বছরের ২৩ নভেম্বর প্রসিকিউশনের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। আসামিদের একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরে ঘোড়ামারা আজিজসহ সব আসামিকে পলাতক দেখিয়েই আদালতে মামলার বিচারিক কাজ শুরু হয়।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল আজিজ মিয়া। তিনি চারদলীয় জোট থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
> ঘোড়ামারা আজিজসহ ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
প্রিয় সংবাদ/রিমন