কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

অস্ট্রেলিয়াকে আজ টেনে তুলছেন ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্ব। ছবি: প্রিয়.কম

বাংলাদেশের হতাশার দিনে সব আলো অস্ট্রেলিয়ার

সামিউল ইসলাম শোভন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:৫৩
আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:৫৩

(প্রিয়.কম, চট্টগ্রাম থেকে) শেষ বিকেলে ফিল্ডিংয়ে থাকা বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের হতাশাটা খুব করে টের পাওয়া যাচ্ছিলো। জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে বিকেলের সূর্যটাও যেন নিজেকে সরাচ্ছিলো টেনে টেনে। সীমানার ধারে ক্লান্তি আর হতাশায় স্থবির সৌম্য-মুস্তাফিজরা। অথচ ফুরফুরে মেজাজে মাঠ ছাড়ার কথা মুশফিকুর রহিমদের। সারাদিনে একাধিক সুযোগ হারানোর মাশুল দিয়ে ওয়ার্নারকে রান দৈত্য বানিয়ে গলা পানিতে খাবি খেলো সেই বাংলাদেশই!

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে পুরো আলো কেড়ে নিলেন অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। বাংলাদেশের করা ৩০৫ রানের জবাব দিতে গিয়ে দুবার জীবন পেয়ে ৮৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন তিনি। সঙ্গী পিটার হ্যান্ডসকম্ব গ্লাভস খুললেন ৬৯ রানে। দিনশেষে মোট ২২৫ রান তুলে স্বাগতিকদের চেয়ে ৮০ রানে পিছিয়ে থেকে তৃপ্তির হাসি দিলেন স্টিভেন স্মিথ, গ্লানি নিয়ে ফিরলেন মুশফিক।

ফিল্ডিংয়ের শুরুটা দারুণ করেছিলো ঢাকা টেস্ট জয়ী বাংলাদেশ। দলীয় পাঁচ রান তুলতেই বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজের বলে ম্যাট রেনশর অসাধারণ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক মুশফিক। প্রশংসার দাবীদার তিনি। কিন্তু কে জানতো, দিনশেষে তিনিই হয়ে উঠবেন খলনায়ক! উইকেটে তখন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে নামেন স্টিভেন স্মিথ। তাদের ব্যাটে ৯৩ রানের জুটি পায় অস্ট্রেলিয়া। এই সময়েই ক্যারিয়ারের ২১তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন স্মিথ। তাকে খুব বেশিদূর এগোতে দেননি বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ব্যক্তিগত ৫৮ রানের মাথায় তাকে বোল্ড করেন তাইজুল।

তখনও দিনের সফলতার পাল্লাটা নিজেদের করে রেখেছিলো বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটেই যেন সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেলো। ওয়ার্নার তার ২৫তম হাফ সেঞ্চুরি পার করার পরই ৫২ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি শর্ট লেগে ফিল্ডিং করা মুমিনুল হক। ঢাকা টেস্টে সেঞ্চুরি করা ওয়ার্নার নিজেকে ফিরে পেয়েছেন তখনই। এরপর আরও থিতু হয়ে ব্যক্তিগত ৭৩ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বল খেলতে গিয়ে অনেকখানি বাইরে চলে এসেছিলেন এই অজি ওপেনার। এবার সুযোগটা হারালেন মুশফিক। সময়মত বল ধরতে না পারায় বল গিয়ে লাগে তার পায়ে। ফলাফল, দ্বিতীয়বারের মতো জীবন পান ওয়ার্নার। শেষ পর্যন্ত ৮৮ রানেই অপরাজিত থাকলেন তিনি। তৃতীয় দিনের খেলায় তার সঙ্গে ৬৯ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামবেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব।

এর আগে ছয় উইকেটে ২৫৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করা বাংলাদেশ আরও ১৭ রান তুলতেই আঘাত হানেন প্রথম দিনে পাঁচ উইকেট নেওয়া স্পিনার নাথান লায়ন। এই অফস্পিনারের বলে ব্যক্তিগত ৬৮ রানে বোল্ড হন মুশফিক। সঙ্গী নাসির হোসেন আউট হন ৪৫ রানে, আরেক অজি স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগারের বলে উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েড কর্তৃক স্ট্যাম্পিং হয়ে। এছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজ (১১) রান আউট হলে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়তে চেয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম (৯)। তাকেও ফিরিয়ে দিয়ে ইনিংসের শেষ পেরেক ঠুকে দেন লায়ন। ইনিংসে সবমিলিয়ে একাই তিনি নিলেন সাত উইকেট। অ্যাগার নিয়েছেন তিনটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট, চট্টগ্রাম- ২য় দিন)

অস্ট্রেলিয়া-২২৫/২ (ওয়ার্নার-৮৮, হ্যান্ডসকম্ব- ৬৯)

বাংলাদেশ- (মুস্তাফিজ ১/৪৫, তাইজুল ১/৫০)