কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

চার মেরে খুলনা টাইটান্সের জয় নিশ্চিত করার পর ছুটছেন আরিফুল হক। ছবি: প্রিয়.কম

আরিফুলের ব্যাটে খুলনার রুদ্ধশ্বাস জয়

জুবায়ের আহমেদ তানিন
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:১৮
আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭, ১৭:১৮

(প্রিয়.কম) শেষ ওভারে হাতে দুই উইকেট রেখে খুলনা টাইটান্সের জয়ের জন্য প্রয়োজন নয় রান। স্ট্রাইকে আরিফুল হক, তার সঙ্গী টেলএন্ডার জুনায়েদ খান। রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি বল তুলে দিলেন ডোয়াইন স্মিথের হাতে। প্রথম বল ফুলটস, ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে আরিফুল হাঁকালেন বিশাল এক ছক্কা। স্যামি ফাইন লেগ তুলে এনেছেন ৩০ গজ বৃত্তের ভেতর। সেটা দেখেই কিনা পরের বলে স্কুপ করলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে চার মেরে নিশ্চিত করলেন দলের জয়।

অথচ ১৭ ওভার পর্যন্ত ম্যাচটা ঝুঁকে ছিল রাজশাহীর দিকেই। ১৩১ রানে আট উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল খুলনা। শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৬ রান। নার্ভ ধরে রেখে হোসেন আলীর করা সেই ওভারে দুই চার ও এক ছয়ে ১৮ রান তুলে নেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান আরিফুল। মোহাম্মদ সামির করা পরের ওভারে এল নয় রান। এরপর শেষ ওভারের চাপ সামলে খুলনাকে দারুণ এক জয় এনে দেন আরিফুল। চারটি চার ও দুই ছয়ে ১৯ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

রাজশাহীর ১৬৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পা হড়কায় খুলনার। ব্যাটিংয়ে খুলনা টাইটান্সের শুরুটাও হয়েছে অনেকটা রাজশাহী কিংসের মতোই। ১৩ রানেই নেই দুই উইকেট। ইনিংসের তৃতীয় বলেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে খুলনার ওপেনার চ্যাডউইক ওয়ালটন, বোলার মোহাম্মদ সামি। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে আবারও আঘাত হানলেন সেই সামি। সাবেক পাকিস্তানি এই পেসারের শিকার এবার সেকুগে প্রসন্ন। সেখান থেকে দলকে ঠিক পথে রাখেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

শুরুর ধাক্কা রিলে রুশোকে নিয়ে সামলান মাহমুদউল্লাহ। তৃতীয় উইকেটে দু’জন গড়েন ৬৭ রানের জুটি। রুশোকে আউট করে বড় হতে থাকা এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৭ বলে ২০ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। রুশোর পর মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। আফিফ হোসেন ধ্রুব পাঁচ রান করে ফিরে গেছেন জেমস ফ্রাঙ্কলিনের বলে। ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর বেশি দূর যেতে পারেননি মাহমুদুউল্লাহও। দলীয় ১০৭ রানে ডানহাতি পেসার হোসেন আলীর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৪৪ বলে আট চার ও এক ছয়ে ৫৬ রান করেন তিনি। 

স্মিথের বলে পয়েন্টে মুমিনুলের হাত ক্যাচ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিধ্বংসী হয়ে ওঠার আগেই কার্লোস ব্রাথওয়েটকে বোল্ড করেন জেমস ফ্রাঙ্কলিন। পাঁচ রানের ব্যবধানে আবারও সামির আঘাত। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে উড়িয়ে দেন শফিউল ইসলামের উইকেট। সেখানেই শেষ! এরপর আরিফুলের বীরত্বে ম্লান হয়ে গেছে রাজশাহীর বোলারদের দাপট। সামি তিনটি ও ফ্রাঙ্কলিন নেন দুই উইকেট। একটি করে উইকেট নেন স্মিথ, হোসেন আলী ও মিরাজ। 

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা রাজশাহীকে চেপে ধরেন খুলনার বোলাররা। ছয় রানে প্রথম দুই উইকেট হারায় ড্যারেন স্যামির দল। মুমিনুল হক করেন পাঁচ রান। খুলনার পাকিস্তানি পেসার জুনায়েদ খানের বলে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। এর এক বল পরই বোল্ড হন ড্যানিয়েল বেল-ড্রুমন্ড। রানের খাতা খুলতে পারেননি দুর্দান্ত খেলতে থাকা জাকির হাসানও। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে আবু জায়েদ রাহির বলে সেকুগে প্রসন্নর হাতে ক্যাচ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন রাজশাহীর ক্যারিবিয়ান ওপেনার স্মিথ। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে গড়েন ৭৬ রানের জুটি। এই জুটি গড়ার পথে মাত্র ২৯ বলে ঝড়ো এক হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন স্মিথ। বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরান আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৩৬ বলে সাত চার ও চার ছয়ে ৬২ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

এরপর ফ্রাঙ্কলিনকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মুশফিক। ৩০ বল খেলে দেখা পেয়েছেন চলতি বিপিএলে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির। ৩৩ বলে চারটি চার ও তিন ছয়ে ৫৫ রান করে রাহির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ২৭ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন ফ্রাঙ্কলিন। এতে করে আট উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রানের সংগ্রহ পায় রাজশাহী। সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার জুনায়েদ। রাহি দুটি ও একটি করে উইকেট নেন কার্লোস ব্রাথওয়েট ও ধ্রুব।

 প্রিয় স্পোর্টস/কামরুল