কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

গুগল আর্থে দেখা যাচ্ছে সার-ও-তার নামের প্রায় ২ হাজার বছরের পুরনো দেয়ালে ঘেরা এক শহর। ছবি: IFLScience

আফগানিস্তানে গবেষণার জন্য কাজ লাগছে অভিনব এক উপায়

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:৪৯
আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:৪৯

(প্রিয়.কম) যুগে যুগেই প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মাঝে যোগাযোগ বজায় রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে চলেছে মধ্য এশিয়া। আর প্রত্নতাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন এখনো এসব এলাকার অনেক রহস্য তাদের অজানাই রয়ে গেছে। দুঃখের ব্যাপার হলো, তালিবানদের সক্রিয়তার কারণে বেশ কিছুটা জায়গা গবেষণার জন্য নিরাপদ নয়। ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর কিছু গবেষক এসব এলাকায় কাজ চালানোর জন্য তাই ব্যবহার করছেন নতুন প্রযুক্তি।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের সহায়তায় তারা কাজ করছেন। তাদেরকে কমার্শিয়াল স্যাটেলাইট ডাটা, ইউএস স্পাই স্যাটেলাইট ইমেজ এমনকি মিলিটার ড্রোন ইমেজ পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। জনসাধারণের কাছে যেসব ইমেজ যায় সেগুলোর চাইতে অনেক বেশী ভালো মানের এসব ছবি। এই প্রজেক্টে আরো সহায়তা করছেন মোহাম্মদ আশরাফ গনি, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন অ্যান্থ্রপোলজিস্ট এবং আফগানিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট।

এই গবেষকেরা ইতোমধ্যেই আবিষ্কার করেছেন ১১৯টি ক্যারাভানসারাই, রাস্তার পাশের সরাইখানা বিশেষ যেখানে ভ্রমণকারীরা বিশ্রাম নিতে পারত। এগুলো ২০ কিলোমিটার পর পর অবস্থিত। ক্যারাভানে করে একদিনে এটুকুই যাওয়া যেত। ভারতের মুঘল সাম্রাজ্যকে তৎকালীন সাফাভিদ সাম্রাজ্যের রাজধানী ইস্পাহানের সাথে যুক্ত করে এই রাস্তাটি।  

ক্যারাভানে করে বেশীরভাগ সময়েই দামী জিনিস যেমন সিল্ক, মূল্যবান রত্ন এবং মশলা নিয়ে যাওয়া হত। এর পাশাপাশি শুঁটকি করা মাছও নেওয়া হত অনেক সময়ে। ১৬শ শতকের শেষ থেকে ১৭শ শতকের শুরুর দিকে এসব ক্যারাভানসারাই ব্যবহার হতো। এ থেকে ওই সময়ের ইতিহাসের ব্যাপারে দুটো বড় ধারণা পরিবর্তন করার দরকার হয়। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা ধারণা করতেন ১৫শ শতকের শুরুর দিকে ইউরোপ থেকে এশিয়ায় জাহাজ পাঠানো শুরু হলে এই রাস্তা এবং সাফাভিদ সাম্রাজ্য দুটোই ভেঙ্গে পড়েছিল। কিন্তু এই ক্যারাভানসারাইয়ের অস্তিত্ব বলে, আরো অন্তত এক শতক পর্যন্ত এই সাম্রাজ্য এবং এই এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে।

এই প্রক্রিয়ায় আরো আবিষ্কার হয়েছে এক হাজারের বেশী প্রাচীন গ্রাম এবং ছোট-বড় শহর যা কিনা বালখাব নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল। এই নদী হাজারখানেক বছর ধরেই তার গতিপথ পাল্টেছে আর তার সাথে সাথে এসব জনপদের অবস্থানও সাথে সাথে সরে গেছে। এসব গ্রামের ব্যাপারে জানতে পারলে বিখ্যাত সিল্ক রোডের ব্যাপারে আরো তথ্য উন্মোচিত করা সম্ভব হবে।

গবেষকেরা শুধু যে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া এরিয়াল ভিউ ব্যবহার করছেন তা কিন্তু নয়। প্রায় ১৫ হাজার বছরের পুরনো কিছু ছবি এবং অপ্রকাশিত ফিল্ডওয়ার্ক জার্নাল ব্যবহার করে কাজ চালাচ্ছেন। এমনকি ১৯৭৯ সালের সোভিয়েত আক্রমণের আগে সেখানে কাজ করতেন, এমন কিছু অবসরপ্রাপ্ত প্রত্নতত্ত্ববিদের সাহায্যও পাচ্ছেন।

সূত্র: IFLScience

প্রিয় লাইফ / আর বি