কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

কাশিমপুর জমিদার বাড়ি।

কোনাবাড়ি ও কালিয়াকৈর এর কয়েকটি পুরানো স্থাপনা

সাজ্জাদুর রশীদ
লেখক
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:১৮
আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:১৮

(প্রিয়.কম) হঠাৎ করেই রওনা হলাম কোনাবাড়ি ও কালিয়াকৈরের কিছু পুরানো স্থাপনা দেখতে। প্রথমেই গেলাম কাশিমপুর জমিদার বাড়ি। রাস্তা ভীষণ খারাপ, তার উপর কোনাবাড়িতে ফ্লাইওভার এর কাজ চলছে। কোনাবাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে বাঁয়ে যে রাস্তাটি ভিতরে ঢুকেছে সে পথে ৩ কিলোমিটার পর কাশিমপুর বাজার ও বাসস্ট্যান্ড। বাসস্ট্যান্ড থেকে বাঁয়ে একটু এগুলেই সিটি করপোরেশনের অফিস। ওর উল্টো পাশেই জমিদার বাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে ঢুকে পড়লাম কাউকে কিছু না বলেই। গেট দিয়ে ঢুকলেই প্রশস্ত সবুজ লন। লন পেরোলে পূজার স্থান, বেশ কয়েকজন মূর্তি নির্মাণে ব্যস্ত। ডানে পিছনের দিকটার দোতালায় জমিদারের বর্তমান উত্তরাধিকারীরা থাকেন। অনুমতি নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম । চারিদিকে অযত্নের ছাপ।

জমিদার বাড়ি থেকে বের হয়ে আবার ফিরলাম কোনাবাড়ি। উল্টোদিকের আমবাগ সড়ক ধরে ৫ কিলোমিটার পর সাকেশ্বর বাজার। বাজারের পাশেই নদী। নদীতে নতুন সেতু নির্মানের কাজ চলছে। সেতুর গা ঘেঁষে একটি ছোট্ট টিনের ঘরের ভিতর সাকেশ্বর অশোক স্তম্ভ। তথ্য মতে এটি মৌর্য শাসন আমলে মহামতি সম্রাট অশোক কর্তৃক নির্মিত ৮৪ হাজার স্তম্ভের একটি। এটি প্রায় আড়াই হাজার বৎসরের পূর্বে তৈরি মৌর্য আমলের সূচনা স্তম্ভ। পাথরের উপরের অংশে ঝাপসা হয়ে যাওয়া খোদাই করা নৃত্যরত কোন দেবী মুর্তি। অশোক স্তম্ভ চারটি সিংহের মুখযুক্ত একটি একক মূর্তি। তাই সন্দেহ থেকে যায় আদৌ এটি অশোক স্তম্ভ কিনা। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীর পাড়ে সারাদিন বসে থাকা যায়। আমাদের ও উঠতে ইচ্ছে করছিলো না। কিন্তু আরো যে যাবার জায়গা রয়ে গেছে, তাই বাধ্য হয়ে গাড়িতে উঠলাম, আবারো কোনাবাড়ি। সেখান থেকে চন্দ্রা হয়ে কালিয়াকৈর এর শ্রিফলতলি।

কাশিমপুর জমিদার বাড়ি। 

পাশাপাশি দুটো জমিদার বাড়ি, মাঝে মসজিদ। বড় তরফটা অরক্ষিত হলেও ছোট তরফে ঢুকার অনুমতি নেই। সময় নষ্ট না করে বলিয়াদির পথে গাড়ি ছুটালাম। পথে যেতে বন্যার আগমন টের পেলাম। দুই জায়গায় রাস্তা হাঁটু পানির নীচে। বলিয়াদিতেও মালিকের অনুমতি নেই বিধায় ভিতরে ঢুকা গেলো না । জমিদার বাড়ি থেকে বের হয়ে বলিয়াদি বাজারে এসে ধান কলের পাশে সিন্দুরী চিতাখোলা শশ্মানে গেলাম। এটাও পানির নীচে, তাই ধান কলের চাতালে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা ছাড়া উপায় ছিলো না। এরপর গন্তব্য শেওড়াতলি যাদব ডাক্তারের বাড়ি। দূর থেকে মঠের মাথা দেখতে পেলাম। যাদব ডাক্তারের বাড়িতে কিছুই নেই, পাশেই কৃষ্ণ হরি মঠ, এখানেও একই অবস্থা। পানি উঠেছে। কাছে যাওয়া গেল না। দূর থেকেই ছবি তুললাম। আবার যাত্রা শুরু করলাম। বিধি বাম। রাস্তা বন্ধ। পানি উঠেছে। গাড়ি যাবে না। কি আর করা, অগত্যা গাড়ি রেখে নৌকায় উঠলাম।

একটু যেতেই চোখে পড়লো পুরানো একটি বাড়ি, মাঝি বললো রঙ্গলাল সাহার বাড়ি, নৌকা ভিড়ালাম। রঙ্গলালের বাড়ি থেকে বের হয়ে নৌকায় চেপে ঐপাড়। এবার ভ্যানে চড়ে শাহবাজপুরের পুরান দালান। ভ্যান চালক চেনে, তাই খুঁজে পেতে অসুবিধা হয়নি। তারিক ভাইয়ের তাড়া আছে, রাতে হাওড়ে থাকবে এমন এক দলের সাথে সিলেট যাবেন, আবার পাগলনাথের আশ্রমও দেখবেন। তাই ছুটলাম ভ্যান নিয়ে চিনাইল পাগলনাথের আশ্রমের পানে। আবারো রাস্তায় পানি, আবারো নৌকা । এক যাত্রায় কতো কিছুতে যে চড়তে হলো। পাগলনাথ দেখে ফিরতে ফিরতে সাড়ে তিনটা।

তারিক ভাই অস্থির হয়ে উঠলেন। তাকে যে ৬টার মধ্যে ঢাকা পৌঁছাতে হবে। গোছগাছ, স্নান, খাবার খেয়ে ৯টার মধ্যে কমলাপুর যেতে হবে। সময় নষ্ট না করে ছুটলাম ঢাকার পানে......।


সম্পাদনাঃ ড. জিনিয়া রহমান

প্রিয় ট্রাভেল সম্পর্কে আমাদের লেখা পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে। যে কোনো তথ্য জানতে মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। ভ্রমণ বিষয়ক আপনার যেকোনো লেখা পাঠাতে ক্লিক করুন এই লিংকে-https://www.priyo.com/post