কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয় পর্বটা স্মরণীয় করে রাখা হল না সাকিব আল হাসানের। ছবি: এএফপি

বদলায় শুধু অধিনায়ক, নিয়তি সেই হারই

শান্ত মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০১৭, ০১:৪৪
আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭, ০১:৪৪

(প্রিয়.কম) একে একে তিন হাত বদলেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে মুশফিকুর রহিম, ওয়ানডেতে মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিলেন সাকিব আল হাসান। পরিবর্তন যা এখানেই। হারের বৃত্তে বন্দী হয়ে পড়া বাংলাদেশ ফলাফলে পরিবর্তন আনতে পারেনি। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট এবং ওয়ানডেতে বাজেভাবে সিরিজ হারা বাংলাদেশ প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও ২০ রানের হার মেনে নিল।

তবে এবার ম্যাচ হারলেও অন্য বাংলাদেশকে দেখা গেছে। অনেকটা পথ লড়াই করে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল। বৃহস্পতিবার ব্লুমফন্টেইনের ম্যানগাউং ওভালে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টে-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চার উইকেটে ১৯৫ রান তোলে স্বাগতিকরা। জবাবে এই সফরে প্রথমবারের মতো ব্যাট হাতে লড়াই করা বাংলাদেশ নয় উইকেটে ১৭৫ রান তোলে। 

১৯৬ রানের বড় লক্ষ্য। কেমন শুরু করবে বাংলাদেশ? পেছনের সব ম্যাচের কথা মনে করে সবাই হয়তো মনেমনে এমন প্রশ্নই করছিলেন। কিন্তু মুহূর্তেই সব প্রশ্ন উড়িয়ে দাপুটে শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। ইমরুল দেখেশুনে খেললেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন সৌম্য। ৩.৫ ওভারেই স্কোরকার্ডে যোগ করেন ৪৩ রান।

কিন্তু এমন সময় ছন্দপতন। ১১ বলে ১০ রান করে ফিরে যান ইমরুল। তাতেও থামেনি বাংলাদেশের রানচাকা। সৌম্যর সাথে যোগ দিয়ে দ্রুতই ব্যাট চালাতে থাকেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে এই জুটি দীর্ঘ হল না। আট বলে তিন চারে ১৩ রান করে ফিরে যান সাকিব। এরপর সৌম্যর সাথে তাল মিলিয়ে মুশফিকুর রহিম আশা জাগিয়ে তোলেন। 

কিন্তু এ পথে দিক হারালেন দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা সৌম্য। ৩১ বলে পাঁচ চারে ৪৭ রান করে আউট হন সৌম্য। এরপর সাকিবের মতো মুশফিকও আট বলে ১৩ রান থামেন। তবু আবারও আশা জেগেছিল। মাহমুদউল্লাহ ফিরে গেলেও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে নিয়ে এগোতে থাকেন বাংলাদেশের একমাত্র টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট সাব্বির রহমান। 

আকাশ ছোঁয়া দুটি ছয় হাঁকিয়ে আভাস দিয়েছিলেন ঝড় তোলার। কিন্তু পারেননি। প্রোটিয়া পেসার বেউরান হেনড্রিকসের স্লোয়ার বাউন্সারে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন ১৯ রান করা সাব্বির। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনদের লড়াই হারের ব্যবধানই কমিয়েছে মাত্র। মিরাজ ১৪ রান করে থামলেও ২৭ বলে তিন চার ও এক ছয়ে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফুদ্দিন। 

এরআগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা এই সিরিজের মধ্যে প্রথমবারের মতো কিছুটা নাজুক শুরু করে। দলীয় ১৮ রানে ওপেনার হাশিম আমলার স্টাম্প উপড়ে নেন বাংলাদেশ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। বল হাতে এমন শুরু পেয়ে উজ্জীবিত এক বাংলাদেশকেই দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু মুহূর্তেই সেটা ম্লান করে দেন আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও এবি ডি ভিলিয়ার্স।

দ্বিতীয় উইকেটে ৪৮ বলে ৭৯ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। এ সময় ডি কক ও ভিলিয়ার্স দুজনই তাণ্ডব চালাতে থাকেন। তবে ভিলিয়ার্সকে হতাশ করেছেন মিরাজ। হাফ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র এক রান দূরে থাকতে ভিলিয়ার্সকে সাজঘর দেখিয়ে দেন তরুণ এই অফ স্পিনার। ফেরার আগে ২৭ বলে আট চারে ৪৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মি ৩৬০ খ্যাত ভিলিয়ার্স।

ম্যাচসেরা ভিলিয়ার্সের বিদায়েও প্রোটিয়াদের ইনিংসে কোনও প্রভাব পড়েনি। ডি কক ও অধিনায়ক জেপি ডুমিনি মিলে ঘোরাতে থাকেন রানচাকা। তবে ডুমিনি বেশিদূর এগোতে পারেননি। ১৩ রান করে আউট হন। ৪৪ বলে পাঁচ চার ও এক ছয়ে ৫৯ রান করা ডি ককও কিছুক্ষণ পর থামেন। 

শেষের পাঁচ ওভারে ৬২ রানের অবিচ্ছন্ন জুটি গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৯৫ রানে পৌঁছে দেন ডেভিড মিলার (২৫*) ও ফারহান বেহারদিয়েন (৩৬*)। মিরাজ দুটি এবং সাকিব ও রুবেল একটি করে উইকেট নেন। টেস্ট, ওয়ানডে ও এই প্রথম টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এই সিরিজে টানা ছয় ম্যাচ হারল বাংলাদেশ।